Prothomalo:
2025-11-17@12:44:52 GMT

নবাগত গোল্ডফিঙ্গার ফুল

Published: 3rd, May 2025 GMT

ইয়ান ফ্লেমিংয়ের লেখা ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের সপ্তম উপন্যাসের নাম ছিল গোল্ডফিঙ্গার। তিনি ১৯৫৮ সালের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির দিকে বইটি লেখেন। বইটির কেন্দ্রীয় চরিত্র অরিক গোল্ডফিঙ্গারের সোনা পাচারের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা ছিল ব্রিটিশ গোয়েন্দা জেমস বন্ডের কাজ। 

গোয়েন্দাদের মতো গোল্ডফিঙ্গারের আরেক রহস্যের জট খুলতে বসেছি। তবে এই গোল্ডফিঙ্গার মানুষ না, একটা গাছ, লতানো গাছ। সোনার মতো উজ্জ্বল কমলা লাল আঙুলসদৃশ ফুল ফোটে সে গাছে। এ জন্যই এ গাছের নাম রাখা হয়েছে গোল্ডফিঙ্গার প্ল্যান্ট বা গোল্ডফিঙ্গার ভাইন। 

চৈত্র মাসের ২২ তারিখ, মধ্য দুপুর, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। এই প্রচণ্ড গরমে কিছুই ভালো লাগছিল না। কিন্তু মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের সুলতানপুর গ্রামে প্রকৃতিবন্ধু তানভীরের বাগানে গিয়ে আঙুলের মতো এই ফুলটা দেখে ভালো লেগে গেল। মাসখানেক আগে সাভারে বরিশাল নার্সারিতে এই ফুল দেখেছিলাম। সেই গাছে তখন পাতা ছিল না। নিষ্পত্র ডালে দুটি ফুল ফুটে ছিল। তাই পাতাহীন গাছে শুধু ফুল দেখে গাছটাকে চেনা সম্ভব হয়নি। তানভীর ফুলটির নাম বললেন গোল্ডফিঙ্গার। এ গাছটায় ফুল তো আছেই, সেই সঙ্গে পেলাম অনেকগুলো পাতার দেখা। 

গোল্ডফিঙ্গারের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Juanulloa mexicana (সমনাম Juanulloa aurantiaca, অরান্টিয়াকা মানে কমলা) এবং গোত্র সোলানেসি। অর্থাৎ গাছটা আলু-বেগুন গোত্রের। গোল্ডফিঙ্গার প্ল্যান্ট একটি কাষ্ঠল লতানো স্বভাবের বহুবর্ষজীবী পাতাঝরা লতা বা গুল্ম প্রকৃতির গাছ। সাধারণত অন্য গাছের ওপর অবলম্বন করে বাড়তে থাকে। গাছ ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা উপবৃত্তাকার, ৬ থেকে ২২ সেন্টিমিটার লম্বা, শীতকালে পাতা ঝরে যায়, বসন্তে নতুন পাতা গজায়। পাতার বোঁটার কাছে গোড়া ও অগ্রভাগ ভোঁতা বা সূক্ষ্ম। পাতার কিনারা মসৃণ, পাতা ঘন সবুজ, ওপরের পিঠ পশমহীন, কিন্তু নিচের পিঠ তারকাসদৃশ সূক্ষ্ম পশমযুক্ত বা রোমশ। ফুল নলাকার, প্রায় ৪ থেকে ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার লম্বা, পাপড়ি কমলা, মঞ্জরিতে কয়েকটি ফুল ফোটে। পাঁচটি বৃতি যুক্ত হয়ে মরিচের মতো একটি বিশেষ গড়ন তৈরি করে। বৃতি পঞ্চকোণী শিরযুক্ত, নলাকার, গোড়ার দিকে চওড়া, আগার দিকটা সরু, কমলা রং। বৃতির মুখ থেকে পাপড়িগুলো উঁকি দেয়, বৃতির চেয়ে পাপড়িগুলো কিছুটা লম্বা। গাছটির জন্মভূমি মেক্সিকো। বিদেশের বাগানে সুদর্শন গাছ হিসেবে লাগানো হয়।

এটি Juanulloa গণের উদ্ভিদ। বিশ্বে এ গণের ৮টি প্রজাতি আছে। জুয়ানুল্লওয়া গণের নামটি দক্ষিণ আমেরিকার উদ্ভিদ অনুসন্ধানকারী ১৮ শতকের দুজন স্প্যানিশ বিজ্ঞানী জর্জ জুয়ান ওয়াই স্যান্টালিকা এবং আন্তোনিও ডি উল্লোয়ার নামের স্মারণিক। প্রজাতিগত নামের শেষাংশ মেক্সিকানা নামটি এসেছে এর জন্মভূমি মেক্সিকো থেকে। এর ফল খেয়ে পাখিরা বৃক্ষের ওপর বিষ্ঠা ত্যাগ করে। সেই বিষ্ঠার সঙ্গে যে বীজ থাকে, তা থেকে সেই বৃক্ষের ওপরেই এ গাছ জন্মায় ও বেঁচে থাকে। এ জন্য একে পরাশ্রয়ী উদ্ভিদও বলা হয়। 

নজরকাড়া রং, মোমের মতো আবরণবিশিষ্ট বৃতি, উজ্জ্বল কমলা রঙের বিশেষ গড়ন ও ফুলের দীর্ঘস্থায়িত্ব একে বাগানিদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে। গাছ ছেঁটে রাখলে ঝোপালো হয়। ফুলের বৃতি প্রায় দুই সপ্তাহ পর্যন্ত গাছে থাকে। কিন্তু পর্যায়ক্রমে ফোটা বৃতির ভেতরে থাকা লালচে-কমলা রঙের ফুলগুলো দুই দিনের বেশি থাকে না। মৌটুসি পাখি বা হামিংবার্ড দ্বারা এর পরাগায়ন ঘটে। অর্কিড বা অন্যান্য পরাশ্রয়ী উদ্ভিদের মতো এ গাছের পাতাও চামড়ার মতো পুরু। পাতার এরূপ গড়ন থাকায় এ গাছ থেকে পানির ক্ষয় কম হয়। ফল ম্লান হলুদ রঙের ও বেরি প্রকৃতির, পাখি ও ছোট প্রাণীরা এর ফল খায় ও দূরবর্তী স্থানে বিষ্ঠাত্যাগের মাধ্যমে বংশবিস্তারে সাহায্য করে। তবে এর ফল মানুষের জন্য বিষাক্ত।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৮ ম্যাচে ৮ জয়, ২২ গোল, কোনো গোল খায়নি—বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইংল্যান্ডের অবিশ্বাস্য রেকর্ড

ম্যাচ ৮
জয় ৮
গোল ২২
বিপক্ষে গোল ০

২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে এমন নিখুঁত পরিসংখ্যান ইংল্যান্ডের।

ওয়েম্বলিতে গত ২১ মার্চ আলবেনিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাই শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। টমাস টুখেলের ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবে সেটা ছিল প্রথম ম্যাচ। ২৪০ দিন পর তিরানায় গতকাল রাতে সেই আলবেনিয়াকেই একই স্কোরলাইনে হারিয়ে ইউরোপিয়ান অঞ্চলে নিজেদের বিশ্বকাপ বাছাই শেষ করল টুখেলের দল। ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে অক্টোবরেই বিশ্বকাপে খেলার টিকিট তো পেয়েছেই, বাছাইপর্বটা শেষ করার পথে দারুণ এক রেকর্ডও গড়েছে ‘থ্রি লায়ন্স’রা।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এক আসরে ইউরোপের প্রথম দল হিসেবে সব ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি কোনো গোল হজম না করার রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ড। বাছাইপর্বে অন্তত ছয় ম্যাচ খেলতে হয়েছে—হিসাবটি করা হয়েছে এই বিবেচনায়। তিরানায় আলবেনিয়ার জালে ২ গোল করা ইংল্যান্ড স্ট্রাইকার হ্যারি কেইনও আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলের পরিসংখ্যানে পেছনে ফেলেছেন এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তোকে। ইংল্যান্ডের হয়ে ১১২ ম্যাচে এ নিয়ে ৭৮ গোল হলো কেইনের। ব্রাজিলের হয়ে নাসিমেন্তোর গোলসংখ্যা ৯২ ম্যাচে ৭৭টি—ওহ ভদ্রলোকের আরেক নাম পেলে!

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ইংল্যান্ড স্ট্রাইকার কেইন গোল পেয়েছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ