অস্বাভাবিক দ্রুততায় লালদিয়া পানগাঁও টার্মিনালের চুক্তি
Published: 17th, November 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য বন্দরের সঙ্গে ডেনমার্কের মালিকানাধীন এপিএম টার্মিনালসের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হবে আজ সোমবার। ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এদিন সকালে এই চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। অস্বাভাবিক দ্রুততায় এই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
একই দিন বিকেলে একই স্থানে ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের পানগাঁও নৌ টার্মিনাল নিয়েও চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। পানগাঁও নৌ টার্মিনাল ২২ বছর মেয়াদে পরিচালনার জন্য সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান মেডলগ এসএর হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে চুক্তি হবে ৩৩ বছর মেয়াদি। এই মেয়াদ আরও ১৫ বছর বাড়ানোর সুযোগ থাকছে চুক্তিতে। এপিএম টার্মিনালস ডেনমার্কের মালিকানাধীন হলেও এটির নিবন্ধন নেদারল্যান্ডসে।
লালদিয়ার প্রকল্পে বাংলাদেশের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী (ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার) বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) প্রতিবেদনে টার্মিনাল অপারেটরের (এপিএম টার্মিনালস) প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর চুক্তি পর্যন্ত কার্যক্রম শেষ করতে ৬২ দিন সময়সীমা ধরা হয়েছিল। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ অস্বাভাবিক দ্রুততায় মাত্র দুই সপ্তাহে এই কার্যক্রম শেষ করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হলেও সে সময় তাড়াহুড়া ছিল না। স্বাভাবিক গতিতে এই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। তবে ৪ নভেম্বর এপিএম টার্মিনালস লালদিয়ার চরে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার প্রস্তাব দাখিলের পরই অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে নেয় বন্দর ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
লালদিয়া চুক্তি৪ নভেম্বর: এপিএম টার্মিনালসের প্রস্তাব দাখিল।
৫ নভেম্বর: কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়ন।
৬ নভেম্বর: আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন।
৯ নভেম্বর: বন্দর ও এপিএম টার্মিনালসের মধ্যে নেগোসিয়েশন। (৭–৮ নভেম্বর ছুটির দিনে নেগোসিয়েশন হয়েছে বলে অভিযোগ)
৯ নভেম্বর: বন্দর বোর্ড সভায় অনুমোদন।
১০–১১ নভেম্বর: নৌপরিবহন ও আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন।
১২ নভেম্বর: অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় অনুমোদনের সুপারিশ।
১৬ নভেম্বর: প্রধান উপদেষ্টার চূড়ান্ত অনুমোদন।
১৬ নভেম্বর: এপিএম টার্মিনালসকে লেটার অব অ্যাওয়ার্ড প্রদান
১৭ নভেম্বর: চুক্তির দিন।
পানগাঁও নৌ টার্মিনাল চুক্তি:
৬ নভেম্বর: কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন জমা।
৯ নভেম্বর: আর্থিক মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন জমা।
১০ নভেম্বর: বন্দর থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
১৭ নভেম্বর: চুক্তির দিন।
বন্দরের বিষয়ে অভিজ্ঞ দুজন ব্যক্তি প্রথম আলোকে জানান, এই ধরনের চুক্তি খুব সতর্কতার সঙ্গে এগিয়ে নিতে হয়। কারণ, চুক্তির কোনো শর্তের কারণে দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত না হলে পরে তার খেসারত দিতে হতে পারে। যার বড় উদাহরণ রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার জিবুতিতে। সেখানে ২০০৪ সালে একটি টার্মিনাল নির্মাণে ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে জিবুতির যে চুক্তি হয়, তার শর্তগুলো ছিল অপারেটরের অর্থাৎ ডিপি ওয়ার্ল্ডের পক্ষে। পরে জিবুতি সরকার চুক্তি বাতিল করলেও ডিপি ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালত জিবুতি সরকারকে সুদসহ ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ এবং স্বত্ব বাবদ আরও ১৪৮ মিলিয়ন ডলার ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
যেভাবে অস্বাভাবিক দ্রুততায় চুক্তিজানা গেছে, ৪ নভেম্বর এপিএম টার্মিনালস কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে। ৫ নভেম্বর প্রস্তাবের কারিগরি মূল্যায়ন করা হয়। আর ৬ নভেম্বর আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়নের পর ওই দিনই শুরু হয় দর–কষাকষি। বন্দর সূত্র জানায়, সরকারি ছুটির মধ্যে ৭ ও ৮ নভেম্বর শুক্র ও শনিবার দর–কষাকষি শেষ হয়। তবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ৯ নভেম্বর দর–কষাকষি শেষ হয়েছে।
একই দিন বন্দরের বোর্ড সভায় এ–সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। সভায় অনুমোদনের পর সারসংক্ষেপ একই দিন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরদিন তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আর ১২ নভেম্বর অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় এই প্রস্তাব তোলা হলে তা অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
জানা গেছে, অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সভায় অনুমোদনের সুপারিশে গতকাল রোববার চূড়ান্ত অনুমোদনে দেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর এপিএম টার্মিনালসের কাছে চুক্তির জন্য লেটার অব অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় গতকালই। লেটার অব অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার পর চুক্তির জন্য সাধারণত দুই সপ্তাহ সময় থাকে। অথচ এ ক্ষেত্রে এক দিনের কম সময়ে চুক্তি হতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
পানগাঁও চুক্তিও দ্রুত হচ্ছেলালদিয়ার মতো পানগাঁও নৌ টার্মিনালের চুক্তিও দ্রুত সময়ে হচ্ছে। ৬ নভেম্বর পানগাঁও নৌ টার্মিনালের কারিগরি প্রস্তাব মূল্যায়ন করে প্রতিবেদন জমা দেয় এ–সংক্রান্ত কমিটি। এরপর ৯ নভেম্বর আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়ন করা হয়। পরদিন তা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। গতকাল পর্যন্ত দরপত্রের অন্যান্য ধাপের প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। অর্থাৎ কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব মূল্যায়নের এক থেকে দেড় সপ্তাহের মাথায় সব প্রক্রিয়া শেষ করে চুক্তি হচ্ছে।
এই টার্মিনাল পরিচালনার জন্য মেডলগ এসএ ১০৮ কোটি টাকার আর্থিক প্রস্তাব দিয়েছিল। পরে দর-কষাকষিতে করে তা প্রায় ১২১ কোটি টাকায় চূড়ান্ত হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে ২০১৩ সালে ১৫৬ কোটি টাকায় এই টার্মিনাল গড়ে তোলে।
তাড়াহুড়ায় সন্দেহলালদিয়ার দীর্ঘমেয়াদি এই চুক্তির সব বিষয় প্রকাশ করার সুযোগ নেই। কারণ, এতে ‘নন–ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ অর্থাৎ গোপনীয়তা বজায় রাখার অংশ রয়েছে। চুক্তির কতটুকু প্রকাশ করা হবে আর কতটুকু প্রকাশ করা হবে না, তা জানা যাবে চুক্তির দিন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গোপনীয়তা ও তাড়াহুড়া করে এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি জাতীয় স্বার্থের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই চুক্তি জনগণের প্রতি গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দায়িত্ব নেওয়া সরকারের চরম বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে চিহ্নিত হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলার মতো জরুরি বিষয় বাদ দিয়ে বন্দর নিয়ে সরকারের তাড়াহুড়া সন্দেহ তৈরি করে। এতে বোঝা যায়, বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা কমিশনভোগীদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
অবশ্য চুক্তি নিয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা গত সপ্তাহে বন্দরে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বলেছেন, দেশের ক্ষতি করে কাউকে বন্দরের কোনো টার্মিনাল দেওয়া হবে না। চুক্তির পর চুক্তির বিষয়ে জানা যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব দ প রক র য় উপদ ষ ট কম ট র শ ষ কর পর চ ল সরক র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
এশিয়া মহাদেশ এখন বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম কেন্দ্র। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে বেশির ভাগেরই অবস্থান এ অঞ্চলে। ফলে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোও বর্তমানে এশিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বেশ সচেতন ও তৎপর। তারা সময়-সময় এশিয়ার ব্যবসা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে।
বিভিন্ন শ্রেণিতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন। তার মধ্যে সর্বশেষ একটি হচ্ছে, এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী। চলতি নভেম্বর মাসে ফোর্বস ম্যাগাজিন এশিয়ার ২০ শক্তিশালী নারী ব্যবসায়ীকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রথম স্থানে আছেন ফিলিপাইনের মাইবেল ভি. আরাগন-গোবিও। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পেয়েছেন যথাক্রমে মালয়েশিয়ার সারিনা চিয়াহ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার চুং ইউ-ক্যাং।
এরমধ্যে সর্বোচ্চ তিন জন করে রয়েছেন ভারত ও হংকংয়ের। ফিলিপাইন, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর ও চীনের দুজন করে আছেন। এ ছাড়া শীর্ষ বিশে একজন করে রয়েছেন মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের।
এই তালিকায় এশিয়ার ডজনখানেক দেশের নারী ব্যবসায়ী স্থান পেয়েছেন। ডেটা সেন্টার, সেমিকন্ডাক্টর ও বিরল খনিজের মতো খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করছেন তাঁরা। কেউ কেউ পারিবারিক ব্যবসার ঐতিহ্য নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছেন—সম্পদ, আতিথেয়তা, খুচরা ও ক্রীড়া সরঞ্জামের মতো খাতের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
অর্ধেকের বেশি নারী পেশাদার ব্যবস্থাপক—ব্যাংকিং, ভোক্তা পণ্য ও পরিবহন খাতে তাঁদের সফলতা প্রমাণিত। তাঁদের মধ্যে তিনজন প্রথম প্রজন্মের উদ্যোক্তা। একজন ইতিমধ্যেই দুটি লাভজনক ইউনিকর্নের প্রতিষ্ঠাতা। দেখে নেওয়া যাক, এই ২০ নারীর মধ্যে শীর্ষ ৫ জন কারা এবং তাঁরা কী করছেন।
১. মাইবেল ভি. আরাগন-গোবিও, বয়স: ৫২, দেশ: ফিলিপাইন
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রবিনসন্স ল্যান্ড নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ও সিইও হিসেবে তারা মাইবেল ভি. আরাগন-গোবিওকে নিয়োগ দেয়। রবিনসন্স ল্যান্ড জে জি সামিটের সম্পত্তি ব্যবসা। এটি ফিলিপাইনের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম নারী তিনি।
আরাগন-গোবিও ১৯৯৩ সালে রবিনসন্স ল্যান্ডে প্রশাসনিক সহকারী হিসেবে যোগ দেন। পরে তিনি কোম্পানির লজিস্টিকস ব্যবসা এবং আবাসিক ও অফিস প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন।
মে মাসে তিনি কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা পেশ করেন—পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যবসা ২২০ কোটি ডলারে সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যমাত্রা। আরও যেসব পরিকল্পনা তিনি করেছেন, সেগুলো হলো ২০৩০ সালের মধ্যে নিট আয় দ্বিগুণ করা, বিপণিবিতানের সংখ্যা ৫৫ থেকে ৬৯-এ বৃদ্ধি করা ও অফিসের পরিসর ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা। সেই সঙ্গে হোটেলকক্ষ ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ করা, লজিস্টিকস সক্ষমতা দ্বিগুণ করা ইত্যাদি।
২. সারিনা চিয়াহ, বয়স ৫০, মালয়েশিয়া
জানুয়ারি মাসে সারিনা চিয়াহ সানওয়ের নির্বাহী উপ–চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। এটি তাঁর বাবার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান। এই পদে আসার আগে কোম্পানির আবাসন থেকে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৩০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তিনি কোম্পানির অনেক গুরুত্বপূর্ণ বৈদেশিক সম্প্রসারণের নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বর মাসে কোম্পানিটি ইতিহাসের বৃহত্তম অধিগ্রহণ করেছে। ৫৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারে এমসিএল ল্যান্ড নামে এক কোম্পানি অধিগ্রহণ করেছে তারা।
৩. চুং ইউ-ক্যাং, বয়স: ৫৩, দেশ: দক্ষিণ কোরিয়া
চুং ইউ-ক্যাং গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় ডিপার্টমেন্ট স্টোর চেইন শিনসেগে ইনকরপোরেশনের চেয়ারম্যান হন। তাঁর লক্ষ্য, কোম্পানির উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার ফিরিয়ে আনা। এটি তাঁর পারিবারিক প্রতিষ্ঠান। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি আমদানি করা সৌন্দর্য পণ্য থেকে সরে এসে স্থানীয় পণ্যে জোর দিচ্ছেন। এমনকি সিউল শহরের উচ্চবিত্তের এলাকায়ও স্থানীয় ব্র্যান্ডের সৌন্দর্য পণ্যের বিক্রয়কেন্দ্র খুলেছেন। এ রকম নানা উদ্যোগের কারণে ব্যবসায় গতি আসছে।
৪. লানি দার্মাওয়ান, বয়স-৬৩, দেশ: ইন্দোনেশিয়া
চার বছর আগে প্রেসিডেন্ট ডিরেক্টর ও সিইও হিসেবে ব্যাংক সিআইএমবির দায়িত্ব নিয়েছেন লানি দার্মাওয়ান। এটি ইন্দোনেশিয়ার সপ্তম বৃহত্তম ব্যাংক। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটি ধারাবাহিকভাবে চারবার রেকর্ড নিট মুনাফা অর্জন করেছে। তিনি ব্যাংকের ঋণ পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যস্ত করেছেন। সেই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মধ্যম ব্যবসা এবং উচ্চ মার্জিনের রিটেইল ঋণের অংশ ৪৫ শতাংশে উন্নীত করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ব্যাংকের শেয়ারের দাম ৭৫ বেড়েছে। যদিও বাজারের গড় বৃদ্ধির হার ২৭ শতাংশ। দার্মাওয়ান ইন্দোনেশিয়ায় সিআইএমবি গ্রুপের প্রথম নারীপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
৫. এমিলি হং, বয়স: ৬৮, দেশ: তাইওয়ান
৬৬ বছর বয়সী এমিলি হং তাইপেভিত্তিক উইওয়াইনের চেয়ার ও প্রধান কৌশল কর্মকর্তা। এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সার্ভার সেবা দেওয়ায় এই কোম্পানি অগ্রণী। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির উত্থানের মূল স্থপতি তিনি। এমিলি ২০১২ সালে উইস্ট্রনের সাবসিডিয়ারি হিসেবে উইওয়াইন প্রতিষ্ঠা করেন। লক্ষ্য ছিল, প্রযুক্তির জগতে ক্লাউড অবকাঠামোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো। এ প্রক্রিয়ায় ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে কোম্পানির রাজস্ব ১৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। কর–পরবর্তী মুনাফা বৃদ্ধি পায় ১৩৩ শতাংশ। শেয়ারের মূল্য ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বাজার মূলধনও অনেকটা বেড়েছে এই কোম্পানির।
এ তালিকায় আরও আছেন থাইল্যান্ডের ৬০ বছর বয়সী ক্যাটিয়া ইন্দরবিজয়া, ভারতের ৪২ বছর বয়সী রুচি কালরা, তাইওয়ানের ৭৪ বছর বয়সী মার্গারেট কাও, সিঙ্গাপুরের ৬১ বছর বয়সী জেমি খো, ভারতের ৩৬ বছর বয়সী মাসি কিরলোসকার টাটা, হংকংয়ের ৪৮ বছর বয়সী কুওক হুই কুওয়ং, অস্ট্রেলিয়ার ৬৩ বছর বয়সী আমানদা লাকাজে, ভারতের ৫৩ বছর বয়সী প্রিয়া নায়ার, হংকংয়ের ৫৪ বছর বয়সী ম্যাগি এনজি, সিঙ্গাপুরের ৫০ বছর বয়সী পিএনজি চিন ই, চীনের ৫৭ বছর বয়সী জেইন সান, হংকংয়ের ৬০ বছর বয়সী জেনি ইয়ুং, জাপানের ৩৮ বছর বয়সী অ্যালিসা ইয়োনইয়ামা, চীনের ৬৫ বছর বয়সী জৌ চাওনান, ফিলিপাইনের মারিয়ানা জোবেল দে আয়ালা।