টাইটানিয়াম দিয়ে শক্তিশালী সৌর প্যানেল তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা
Published: 5th, May 2025 GMT
সৌর প্যানেলের সক্ষমতা বাড়াতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রচলিত সিলিকন-ভিত্তিক উপকরণের বদলে টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি শক্তিশালী সৌর প্যানেল তৈরি করেছেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, টাইটানিয়াম ও সেলেনিয়ামের স্তরযুক্ত এই সৌর প্যানেল সাধারণ সৌর প্যানেলের চেয়ে প্রায় এক হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। নতুন এই সৌর প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রচলিত সৌর প্যানেলে সিলিকন-ভিত্তিক উপকরণ ব্যবহার করা হলেও নতুন প্যানেলের ফটোভোলটাইক কোষে টাইটানিয়াম ও সেলেনিয়ামের স্তর রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, টাইটানিয়াম অক্সাইড এবং সেলেনিয়ামের স্তরের কার্যকারিতা বেশি। এর ফলে সূর্যের আলো থেকে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করার সুযোগ রয়েছে। সোলার এনার্জি ম্যাটেরিলস অ্যান্ড সোলার সেলস নামের একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুননতুন মডেলের হাইব্রিড সোলার আইপিএস আনল ওয়ালটন২৭ মার্চ ২০২৫টাইটানিয়াম সাধারণভাবে শক্তিশালী ও ক্ষয় প্রতিরোধী ধাতু। বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যে টাইটানিয়ামের ব্যবহার করা হলেও এই ধাতুর নিষ্কাশন প্রক্রিয়া বেশ ব্যয়বহুল। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা টাইটানিয়ামের নিষ্কাশন প্রক্রিয়ার খরচ কমানোর কৌশলও আবিষ্কার করেছেন। এর ফলে ভবিষ্যতে টাইটানিয়াম ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যও তৈরি করা সম্ভব হবে।
বিজ্ঞানী তোরু এইচ ওকাবে বলেন, আকরিক থেকে অক্সিজেন অপসারণে অনেক ব্যয় হয় বলে টাইটানিয়াম ধাতু উৎপাদন কম করা হয়। আমরা বিরল-পৃথিবী ধাতুর ওপর ভিত্তি করে একটি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহার করছি যা টাইটানিয়াম থেকে নতুন উপায়ে অক্সিজেন অপসারণ করে। আরেকটি বিরল উপাদান ইট্রিয়াম ব্যবহার করে টাইটানিয়াম নিষ্কাশন করা হচ্ছে। গলিত টাইটানিয়ামকে ইট্রিয়াম ধাতুর সঙ্গে মিশিয়ে একটি কম খরচ অক্সিজেনমুক্ত টাইটানিয়াম খাদ তৈরি করা হয়েছে। এই টাইটানিয়ামের তৈরি সৌর প্যানেল অন্য সব সৌর প্যানেলের চেয়ে শক্তিশালী। এতে নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বেশ পরিবর্তন আসবে।
সূত্র: আর্থ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ট ইট ন য
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে রোগীর ভিড়, মুখে নেই মাস্ক
গত বুধবার সকাল ৮টা। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর জটলা। সবাই চিকিৎসকের জন্য অপেক্ষা করছেন। কারও মুখে মাস্ক নেই। আবার যে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে এবং চিকিৎসকরা যে সবাইকে মাস্ক পরে বাইরে বেরুতে বলেছেন, সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলায় ইতোমধ্যে ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও ওই রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই কর্তৃপক্ষের। নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেই কিটের। আক্রান্তরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা হলেও সবার নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে ছয়জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আক্রান্তরা বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন ছয়জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে পৃথক কর্নার, নমুনা পরীক্ষা কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিরও কোনো উদ্যোগ নেই। জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব এবং সীমিত তদারকির কারণে ঝুঁকিতে রয়েছেন জেলার সাধারণ মানুষ। আক্রান্ত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর শরীরে জ্বর ছিল না, তবে প্রচণ্ড কাশি ছিল। আরও ছিল বুক ব্যথা, মাথা ব্যথা ও গলা ব্যথা। এসব উপসর্গের কারণে ঢাকায় চিকিৎসা নিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা পরীক্ষার জন্য কিট বা প্রয়োজনীয় উপকরণ গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পৌঁছায়নি। ফলে জেলাভিত্তিক নমুনা পরীক্ষা বা চিকিৎসা কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না বলে দাবি করেছেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. অরূপ পাল বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার জন্য কিটসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। রোগীরা মূলত ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত হচ্ছেন।’
এদিকে, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কিছু সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হলেও তা খুবই সীমিত। দুইদিন মাইকিং করা হয়েছে, এরপর আর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা চোখে পড়েনি। জনসচেতনতা তৈরিতে ঘাটতি রয়েছে, মানুষজনের মধ্যে এখনও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে না।
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে যেহেতু নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা ঢাকা থেকে হচ্ছে, তাই স্থানীয় পর্যায়ে শনাক্তে কিছুটা সময় লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই শরীর ব্যথা নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। তার নমুনা পাঠানো হয় ঢাকায় এবং সেখান থেকেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাকি আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও একইভাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’