নাহিদ-রিশাদকে ফেরাতে চাটার্ড ফ্লাইটের চেষ্টা
Published: 8th, May 2025 GMT
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার ছায়া পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। ড্রোন হামলার জেরে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) আসর। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা শঙ্কায় দ্রুত পাকিস্তান ছাড়ছেন বিদেশি ক্রিকেটাররা। এরই মধ্যে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেন।
রাওয়ালপিন্ডিতে আজ রাতে হওয়ার কথা ছিল পেশোয়ার জালমি ও করাচি কিংসের ম্যাচ। পেশোয়ার দলে আছেন বাংলাদেশের পেসার নাহিদ রানা। অন্যদিকে, লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলছিলেন রিশাদ হোসেন। তবে ম্যাচের আগে রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়াম লাগোয়া এলাকায় ভয়াবহ ড্রোন হামলা হয়, যার ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বিবৃতিতে ম্যাচ সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে দেয়। একই সঙ্গে পুরো টুর্নামেন্ট করাচিতে স্থানান্তরে করেছে। তবে পাকিস্তানে আর থাকা নিরাপদ মনে করছেন না বিদেশি খেলোয়াড়েরা। আজ পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন নাহিদ, রিশাদসহ অন্যান্য বিদেশি ক্রিকেটার।
পাকিস্তানের একটি সূত্র জানিয়েছে, যেসব অঞ্চলে বিমান চলাচল বন্ধ, সেখান থেকে ক্রিকেটারদের সরাসরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই পিসিবি চার্টার্ড ফ্লাইটে প্রথমে তাদের দুবাই পাঠানোর ব্যবস্থা করছে। এরপর সেখান থেকে নিজ নিজ দেশে ফিরবেন খেলোয়াড়েরা। বাংলাদেশের রিশাদ ও নাহিদও এই পথে দেশে ফিরবেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাকিস্তানে অবস্থানরত দুই ক্রিকেটারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা পিসিবি ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছে। বিসিবি বলেছে, পিসিবি ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বিসিবি, যাতে পাকিস্তানে থাকাকালে ক্রিকেটাররা নিরাপদ ও সুরক্ষিত বোধ করে। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে তাদের নিরাপদে ও সময়মতো প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বোর্ড।
এদিকে ১৮ মে পিএসএলের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এরপর পাকিস্তানেই ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ দলের। যদিও তার আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে লিটন দাসের দল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল