নব্বই দশকের বাণিজ্যিক সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক নাঈমের আজ জন্মদিন। ১৯৯১ সালের ৪ অক্টোবর তার প্রথম অভিনীত সিনেমা ‘চাঁদনী’ মুক্তি পায়। পরিচালক এহতেশামের হাত ধরে সিনে জগতে আসেন নাঈম। ও সিনেমায় জুটি বেঁধেছিলেন শাবনাজের সঙ্গে। পরে তাকেই করেছেন জীবনসঙ্গী। নাঈম-শাবনাজ জুটি চাঁদনী সিনেমা দিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই সিনেমার গানগুলো সুপারহিট হয়। এরপরে এই জুটির একের পর এক সিনেমা মুক্তি পেতে থাকে।
নাঈমের মূল নাম খাজা নাঈম উদ্দিন মুরাদ। তার জন্ম ৮ মে, ১৯৭০। জানা গেছে, নাঈমকে পরিচালক এহতেশাম একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে দেখেন। দেখে ভালো লাগে এরপর নিজেই ডেকে কথা বলেন তিনি। প্রথম সাক্ষাতেই সিনেমায় কাজ করার অফার দেন এহতেশাম। নব্বই দশকের শুরুর দিকে নাঈমের তরুণ প্রজন্মের কাছে নাঈম ছিলেন অন্যতম স্বপ্নের নায়ক। নাঈম-শাবনাজ জুটি প্রেম থেকে বিয়ে করে ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর। এই দম্পতির দুই মেয়ে। মেয়েদের মধ্যে একজন গানের সাথে যুক্ত। নাঈম এমন একজন নায়ক যে ২০টিরও কম সিনেমাতে অভিনয় করে দেশের সিনেমার ইতিহাসে অপরিহার্য অংশ উঠেছেন।
নাঈম অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে, চাঁদনী, দিল, অনুতপ্ত, জিদ, সাক্ষাত, টাকার অহংকার, লাভ, ফুল আর কাঁটা, আগুন জ্বলে, বিষের বাঁশি, চোখে চোখে, ঘরে ঘরে যুদ্ধ, সোনিয়া, লড়াই, সুখের আশায়, মেয়েরাও মাস্তান।
আরো পড়ুন:
জয়ের জীবন বদলে দিয়েছে জায়েদ খান, পূর্ণিমা, অপু
‘আমি আশিক তুমি প্রিয়া’র আশিক এখন কোথায়?
তবে এই নায়কের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা ‘চাঁদনী।’ রোমান্টিক ও ফ্যামিলি ড্রামাতে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছিলেন। এ জুটির সিনেমার সংখ্যা ১৩টি। এর মধ্যে বেশিরভাগ ছবিই সুপারহিট ছিল।
‘ও আমার জান তোর বাঁশি যেন জাদু জানে রে’, ‘এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচল’, ‘তুমি এসেছিলে পরশু’, ‘বড় মিষ্টি লাগে’ সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছেন নাঈম-শাবনাজ জুটি।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জনপ র য় শ বন জ
এছাড়াও পড়ুন:
এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে একটু পরপরই চোখে পড়েছে বাংলাদেশের পতাকা। দর্শকদের হাতে উড়তে থাকা সেই লাল-সবুজ ম্যাচ শেষে যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল। আনন্দ আর উল্লাসে রঙিন হয়ে উঠল গ্যালারি। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে লিটন দাসের দল। বাংলাদেশ জিতেছে বলেই হয়তো ভুলে যাওয়া গেল শরীফুল ইসলামের বেধড়ক মার খাওয়া কিংবা ফসকে যাওয়া ক্যাচের হতাশা।
আবারও আলো ছড়ালেন মোস্তাফিজুর রহমান। সাইফ হাসান জানিয়ে দিলেন, তিনিও আছেন। কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গী ছিলেন লিটন দাস। ক্যাচ ফেলার হতাশা ভুলে শেষটা রাঙিয়ে তুললেন তাওহিদ হৃদয়। এমন ছোট ছোট মুহূর্ত মিলিয়েই বাংলাদেশ লিখল দারুণ এক জয়ের গল্প। যে জয় এখন দেখাচ্ছে আরও বড় স্বপ্ন—এশিয়া কাপ ফাইনাল। দিন দুয়েক আগেও যে পথটা মনে হচ্ছিল কাঁটায় ভরা, এখন তা বেশ প্রশস্তই লাগছে। আগামী বুধবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ, পরদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে। এই দুই ম্যাচের একটি জিতলেও বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার যথেষ্টই সম্ভাবনা থাকবে। হেরে গেলে অবশ্যই থাকবে না। তবে ভারত বা পাকিস্তান কোনো দলকেই না হারিয়ে যে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা যায় না, এটা কে না জানে!
যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুটা এমন ছিল যে, তখন এসব আলোচনা করাটা রীতিমতো বাড়াবাড়ি মনে হতো। মাত্র ৪ ওভারেই শ্রীলঙ্কা তুলে ফেলে ৩৬ রান। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা খেয়ে চাপে পড়েন তাসকিন আহমেদ। তবে শেষ বলে পাতুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে পথ দেখান তিনিই। এরপর মেহেদী হাসান নেন পরপর দুটি উইকেট। কিন্তু চাপের মুখে শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়ায় দাসুন শানাকার ব্যাটে।
শানাকা আর চারিত আসালাঙ্কার ২৭ বলে ৫৭ রানের জুটি আবারও চাপে ফেলে বাংলাদেশকে। শামীম–হৃদয়ের হাত ফসকে তিনটি ক্যাচ বেরিয়ে যাওয়ার পর বড় রানে চাপা পড়ার শঙ্কাও জাগে। ঠিক তখনই আশার আলো হয়ে হাজির মোস্তাফিজ।
প্রথম ৩ ওভারে ১৫ রান দিয়ে একটি উইকেট পেয়েছিলেন। কিন্তু ইনিংসের ১৯তম এবং নিজের শেষ ওভারে যা করলেন, সেটাই ঘুরিয়ে দিল ম্যাচের মোড়। প্রথম বলেই হৃদয়ের হাত ফসকে গেল আসালাঙ্কার ক্যাচ, তবে হয়ে গেলেন রানআউট। পরের ৫ বলে মোস্তাফিজ দিলেন মাত্র ৩ রান, তুলে নিলেন আরও ২ উইকেট!
ওভারের শেষ বলে হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে মোস্তাফিজ ছুঁয়ে ফেললেন সাকিব আল হাসানকে। টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক এখন তাঁরা দুজন। শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমে গেল ১৬৮ রানে।
তাড়া করতে নামা তানজিদ হাসানকে দেখে মনে হচ্ছিল, এই ম্যাচেও হিসাব মেলাতে পারবে না বাংলাদেশ। নুয়ান তুষারার ধাঁধা তিনি এখনো মেলাতে পারেননি—ছয়বার মুখোমুখি হয়ে চারবারই আউট হয়েছেন। তবে এতটুকুই। এরপর গল্পটা সাইফ হাসান ও লিটন দাসের। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৪ বলে গড়েন ৫৯ রানের জুটি।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫৯ রান তুলে লিটন ফেরেন সপ্তম ওভারেই। তবে হাসারাঙ্গার বলে সুইপ করতে গিয়ে ১৬ বলে ২৩ রান করে অধিনায়ক ফিরলেও বাংলাদেশ পথ হারায়নি। এরপর কিছুক্ষণ হাল ধরে রাখেন সাইফ হাসান। টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ৪৫ বলে করেন ৬১ রান, ৪ ছক্কা আর ২ চারে সাজানো ইনিংস।
তাঁর বিদায়ের পর ব্যাটন তুলে নেন হৃদয়। কামিন্দু মেন্ডিসের করা পরের ওভারে ২ চার ও ১ ছক্কায় তুলে নেন ১৬ রান। ম্যাচটা তখন বাংলাদেশের একেবারে হাতের মুঠোয়।
শেষ দিকে ১ রান বাকি থাকতে ৩ বলে বাংলাদেশ হারায় ২ উইকেট। কিন্তু তাতে শ্রীলঙ্কার আফসোসই বাড়ে। নাসুম আহমেদ জয়সূচক রানটা নিতেই অন্য প্রান্তে লাফিয়ে ওঠেন শামীম হোসেন। আনন্দে ভাসে বাংলাদেশের ডাগআউট, যেন পুরো দুবাইও।