বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচক (গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স) অনুযায়ী, সিঙ্গাপুর হলো এশিয়ার সবচেয়ে ইনোভেটিভ (উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন) দেশ। কয়েক বছর ধরে সিঙ্গাপুর ধারাবাহিকভাবে প্রথম অবস্থান ধরে রেখেছে।

২০২৪ সালের সূচকে, সুইজার‍ল‍্যান্ডের অবস্থান ছিল বিশ্বে প্রথম। দ্বিতীয় স্থানে সুইডেন। সিঙ্গাপুরের অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ এবং এশিয়া মহাদেশে প্রথম। ১৯ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৩টি দেশের মধ্যে ১০৬। আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ছাড়া বস্তুত সব দেশই সূচকে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে। শ্রীলঙ্কা (৮৯) কিংবা সেনেগালও (৯২) সূচকে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে। সূচকে ভারতের অবস্থান ৩৮ এবং চীনের অবস্থান ১১। প্রতি মিলিয়ন (১০ লাখ) মানুষের মধ্যে কতজন গবেষক ও উদ্ভাবক আছে, সে বিবেচনায় ইউরোপের অনেক দেশ চীন থেকে এগিয়ে। যেমন সুইডেনে প্রতি মিলিয়নে প্রায় ৯ হাজার গবেষক ও বিজ্ঞানী পাওয়া যায়।

এশিয়ার মধ্যে সিঙ্গাপুর কী করে উদ্ভাবনে সেরা, সেটা বুঝতে হলে তাদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে কিছু তথ‍্য দেওয়া দরকার। সিঙ্গাপুরের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম ন‍্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর (NUS)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বয়সে মাত্র ১৫ বছর পুরোনো। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক তালিকায় প্রথম ২০-৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে স্থান করে নেয়। এশিয়ার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান এটি। প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ শতাধিক পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হয়। প্রায় আড়াই হাজার পিএইচডি স্টুডেন্ট প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। গবেষণা করছে। সেসব স্টুডেন্টদের বয়স ২৫-২৬ বছর। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শেষ করে, ২২-২৩ বছর বয়সেই বেশির ভাগ স্টুডেন্ট পিএইচডি শুরু করেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও নিয়মটা এমনই।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে, যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে, প‍েসিফিক‍্যাম (PACIFICHEM) নামক একটা কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করি। কেমিস্টদের জন্য খুবই পরিচিত এই কনফারেন্স, প্রতি পাঁচ বছর পরপর হাওয়াইতেই অনুষ্ঠিত হয়। স্টকহোম ইউনিভার্সিটি থেকে আমি তখন সবে পিএইচডি শেষ করেছি। সে কনফারেন্সে সিঙ্গাপুরের একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অধ্যাপক ও তরুণ গবেষকদের উপস্থিতি ছিল। যাঁদের সবাই রসায়নের বিভিন্ন শাখার গবেষক ছিলেন। কনফারেন্সের বাইরে, তাঁরা আলাদা করে কয়েকটা আড্ডার আয়োজন করেন। আমারও থাকার সুযোগ হয় সেসব আড্ডায়।

সিঙ্গাপুরের পিএইচডি স্টুডেন্টরা গল্প করছিলেন তাঁদের গবেষণাজীবন কত পরিশ্রমের। কত প্রতিযোগিতার। অধ্যাপকেরা তাঁদের ফান্ডিং নিয়ে গল্প করছিলেন। বলছিলেন, গবেষণার জন্য কালের সেরা সেরা প্রপোজাল না হলে ফান্ডিং পাওয়া কঠিন। তাঁদের সঙ্গে গল্প করে, সিঙ্গাপুরের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে আমার একটা চমৎকার ধারণা হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের আদলে, সিঙ্গাপুরে আছে জাতীয় গবেষণা ফাউন্ডেশন (National Research Foundation), যেটা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অধীন পরিচালিত। এই ফাউন্ডেশনের খুবই শক্তিশালী একটা সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ড আছে, যারা বস্তুত সারা পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে, সিঙ্গাপুরকে বিজ্ঞান গবেষণা, আবিষ্কার-উদ্ভাবনে এগিয়ে নিতে সাহায‍্য করে। জাতীয় পলিসি তৈরিতে সাহায‍্য করে। সিঙ্গাপুর তাদের জিডিপির প্রায় ২ শতাংশ ব্যয় করে শুধু গবেষণায়, যেটা জাতীয় শিক্ষার বাজেট থেকে আলাদা।

সিঙ্গাপুরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে অবশ্যই পিএইচডি এবং পোস্ট–ডক্টরাল গবেষণা থাকতেই হবে। শুধু তা–ই নয়, খুব ভালো মানের গবেষণাপত্র (পাবলিকেশন) থাকতে হবে। এমনকি বয়সও একটা বিবেচনার বিষয়। অ্যাসিসট‍্যান্ট প্রফেসর হতে গেলে বয়সে হতে হবে তরুণ। সাধারণত ৩৫-এর নিচে। এবং নিয়োগের পর, একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত (৫-৭ বছর) যদি কেউ খুব ভালো মানের পাবলিকেশন না করে, তাহলে তাঁর ফান্ডিং ও প্রমোশন অনিশ্চিত হয়ে যায়। শিক্ষকদের অবসরের কোনো সময় নেই। অযথা অযাচিত সময় নষ্ট করার সামান্যতম সুযোগ নেই। রাজনীতি করার তো প্রশ্নই আসে না। তাঁদের লক্ষ‍্যই হলো বিশ্বমানের গবেষণা করা। বিশ্বমানের আর্টিকেল পাবলিশ করা। শিক্ষকতা ও গবেষণা নিয়েই পুরো কর্মদিবস ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের।

অথচ দুঃখজনক হলো, আমাদের শতবর্ষ বয়সী বিশ্ববিদ‍্যালয়টি, আজও বৈশ্বিক তালিকায় ৫০০তম স্থান করে নিতে পারে না। ‘প্রাচ‍্যের অক্সফোর্ড’ বলে যে উপাধিটি আমরা ব‍্যবহার করি, সে উপাধি ব‍্যবহার করেও পৃথিবীর মানুষদের সে প্রতিষ্ঠান চেনাতে পারি না। সিঙ্গাপুর আয়তনে বাংলাদেশের ঢাকা জেলার চেয়েও ছোট। অথচ সে দেশের শুধু একটা বিশ্ববিদ‍্যালয়েই প্রায় আড়াই হাজার পিএইচডি স্টুডেন্ট আছে। অথচ আমাদের দেশের সবচেয়ে পুরোনো বিশ্ববিদ‍্যালয়ে, ২৫ বছর বয়সী ৫০ জন পিএইচডি স্টুডেন্ট নেই। তাহলে উদ্ভাবনে আমরা কী করে এগিয়ে থাকব?

বাংলাদেশের তরুণেরা কি মেধাবী না? তাঁরা কি আবিষ্কার-উদ্ভাবন ও গবেষণায় বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন না? —অবশ্যই রাখেন। কিন্তু তাঁদের তো প্রশিক্ষণ দরকার। তাঁদের তো মেন্টর দরকার। সে মানের পরিবেশ তাঁদের দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হলো সেই আঙিনা। অথচ সেখানে কি সে প্রশিক্ষণ তাঁরা পাচ্ছেন? একটা দেশ আবিষ্কার-উদ্ভাবনে এগিয়ে যাওয়ার প্রধান শর্ত হলো, সে দেশের একাডেমিক গবেষণাকে শক্তিশালী করা।

দুনিয়ার কোনো ভালো বিশ্ববিদ‍্যালয়ে এখন পিএইচডি-পোস্টডক ছাড়া সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ হয় না। অথচ আমাদের দেশে এই নিয়মটাই এখনো জোরালোভাবে চালু হয়নি। নিয়ম চালু হলেই যে রাতারাতি এটা ব‍্যাপকভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে, তা কিন্তু নয়। তবে যদি ফোকাসটা থাকে এবং তীব্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভালো গবেষকদের নিয়োগ দেওয়ার চর্চা শুরু হয়, তাহলে হয়তো ১০ বছর পর সেটা আরেও বিস্তৃত হবে। একজন শিক্ষক যদি বিশ্ববিদ‍্যালয়ে নিয়োগ পাওয়ার পরও উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা জন্য ৭-৮ বছর সময় ব্যয় করেন, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে সেটা সমাজের জন্য মোটেও টেকসই কিছু বয়ে আনবে না। এই নিয়মগুলো ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনার লক্ষ‍্য থাকতে হবে।

দেশের একাডেমিক গবেষণার সংস্কৃতি উন্নত না হলে, আবিষ্কার-উদ্ভাবনে এগিয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আর দেশের একাডেমিক গবেষণার সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করতে হলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভালো মানের পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতেই হবে। তরুণেরা যেন দেশেই পিএইচডি-পোস্টডক করতে পারেন, সেই লক্ষ‍্য নিয়ে এগোতে হবে। আর সে জন‍্য চাই ভালো মানের প্রচুর মেন্টর।

একাডেমিক গবেষণার সংস্কৃতি শক্ত হলে, সেটার প্রভাব বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও পড়বে। বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনো আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রমোশনে নেই শক্ত কোনো নিয়মনীতি। গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নেই আন্তর্জাতিক কোলাবোরেশন। এমনকি একটা ভালো মানের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ড ছাড়াই চলছে প্রতিষ্ঠানগুলো। বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ড থাকা খুব জরুরি। এবং সেই বোর্ড গঠিত হয় দেশি-বিদেশি মূল ধারার গবেষকদের দিয়ে। একাডেমিক গবেষণা উন্নত হলে, সেটার প্রভাব প্রাইভেট শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও পড়বে। দেশের বড় বড় শিল্পকারখানাতে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ উন্নত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর অনেক ভালো মানের পাবলিকেশন করতে হয়। বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ইত‍্যাদি থেকে করতে হয় প‍্যাটেন্ট। পাবলিকেশন ও প‍েটেন্ট হলো গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সের একটা মাপকাঠি। বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক পেটেন্ট হয় না বললেই চলে। আন্তর্জাতিক পেটেন্ট বলতে বোঝানো হয়, কোন উদ্ভাবনের পেটেন্ট আবেদন ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপারটি অর্গানাইজেশনের (WIPO) মাধ্যমে ফাইল করা। যেটাকে পিসিটি অ্যাপ্লিকেশনও (PCT Application) বলা হয়। এতে করে একটি আবেদনের মধ‍্য দিয়ে, প্রতিষ্ঠানটির সদস‍্যভুক্ত প্রতিটি দেশে আবেদন করার অধিকার অর্জন করা হয়। একটা নির্দিষ্ট সময় পর আলাদা করে পৃথক পৃথক সদস‍্যদেশে আবার আবেদন ফাইল করতে হয়।

কোলাবোরেশন হলো উদ্ভাবন সংস্কৃতির আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ও চর্চা। পৃথিবীর অন‍্যরা কী ভাবছে, কী করছে, কীভাবে ভাবছে, কীভাবে চ‍্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে ইত‍্যাদি বিষয় কোলাবোরেশনের মাধ্যমে মোকাবিলা করা সহজ হয়ে ওঠে। তরুণদের খুব কম বয়স থেকেই গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হলো আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীরা যখন স্নাতক পর্যায়ে থাকে, তখনই বিভিন্ন প্রজেক্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। সেসব কাজ তাঁদের ভিতকে অনেক শক্ত করে। তাঁদের ভাবনার জগৎ, সৃষ্টিশীলতার জগৎ প্রসারিত করে। দেশের বিশ্ববিদ‍্যালয়ে গবেষক শিক্ষার্থীদের ব‍্যাচলর করার সময়ই ভালো মানের গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।

আবিষ্কার-উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকলে সমাজের টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এমনকি রপ্তানি আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে সমাজ। অতিমাত্রায় বিদেশি পণ‍্য–নির্ভরতাও কমে না। সুতরাং আবিষ্কার-উদ্ভাবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় নীতিমালা দরকার। এবং কয়েকটা পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একাডেমিক গবেষণাকে শক্তিশালী করতে গুরুত্ব ও প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে। উন্নয়নশীল দেশ ব্রেইন-ড্রেইন বন্ধ করতে পারবে না। তরুণেরা দেশ ছেড়ে বিদেশে গিয়ে প্রশিক্ষিত হচ্ছেন, সেটা খারাপও না। তবে সেটার বিপরীত প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষিত করার বদলে, যথারীতি প্রশিক্ষিতদের মধ‍্য থেকে শিক্ষক নিয়োগকে প্রাধ‍্যান‍্য দিতে হবে। সে জন‍্য শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করতে হবে। সবাইকে গণহারে বয়সভিত্তিক অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়ার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ এবং পদোন্নতির নীতিমালা আধুনিক করতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনায় উন্নত মানের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি বোর্ড তৈরি করতে হবে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণায় একটা নির্দিষ্ট বাজেট ব্যয় করার জন্য সরকারকে চাপ দিতে হবে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন সমাজের তরুণদের প্রশিক্ষণে অর্থ ব্যয় করে, সে বিষয়ে চাপ দিতে হবে। একাডেমিক ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণার দৃঢ় মেলবন্ধন তৈরি করতে হবে।

জাতীয়ভাবে গবেষকদের উদ্বুদ্ধ করতে আকর্ষণীয় পুরস্কার প্রণয়ন করতে হবে। পেটেন্ট ও ভালো পাবলিকেশনের জন্য গবেষকদের ভালো প্রণোদনা দিতে হবে। সর্বোপরি জিডিপির একটা বড় অংশ গবেষণায় ব্যয় করতে হবে এবং সে ব্যয় যেন সঠিক খাতে হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কালে, আবিষ্কার উদ্ভাবনে উন্নত না হলে, দেশের বহু ক্ষেত্রের অগ্রযাত্রা শ্লথ হয়ে যাবে।

ড.

রউফুল আলম টেকসই উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক লেখক

[email protected]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র অবস থ ন কনফ র ন স র প এইচড র জন য প রথম র একট দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তিপণ্যের বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক, দামও অপরিবর্তিত

চলতি সপ্তাহে ঢাকার বিভিন্ন কম্পিউটার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রসেসরসহ সব ধরনের কম্পিউটার যন্ত্রাংশের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এর পাশাপাশি ক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় প্রায় সব ধরনের প্রযুক্তিপণ্যই বেশ ভালো পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার একাধিক কম্পিউটার বাজার ঘুরে কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম তুলে ধরা হলো।

প্রসেসর

ইন্টেল: কোর আই–৯ ৬.০০ গিগাহার্টজ (গি.হা.) ১৪ প্রজন্ম ৭২ হাজার টাকা; কোর আই–৯ ৫.৮০ গি.হা. ১৩ প্রজন্ম ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা; কোর আলট্রা ৭ ২৪৫ কেএফ (৫.৫ গি.হা.) ৫০ হাজার টাকা; কোর আই–৭ ৫.৬০ গি.হা. ১৪ প্রজন্ম ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা; কোর আই–৭ ৫.৪০ গি.হা. ১৩ প্রজন্ম ৪৩ হাজার টাকা; কোর আলট্রা-৫ ২৪৫ কেএফ (৫.২ গি.হা.) ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা; কোর আই–৫ (৫.৩০ গি.হা.) ১৪ প্রজন্ম ৩২ হাজার টাকা; কোর আই–৫ (৪.৬০ গি.হা.) ১৩ প্রজন্ম ২২ হাজার ৫০০ টাকা এবং কোর আই–৩ (৪.৫০ গি.হা.) ১৩ প্রজন্ম ১৩ হাজার ৫০০ টাকা।

এএমডি: রাইজেন–৯ ৭৯০০এক্স ৪.৭০-৫.৬০ গি.হা. ৪২ হাজার টাকা; রাইজেন–৭ ৫৭০০জি ৩.৮- ৪.৬ গি.হা. ১৭ হাজার টাকা; রাইজেন–৭ ৭৭০০এক্স ৪.৫০-৫.৪০ গি.হা. ৩৩ হাজার টাকা এবং রাইজেন–৫ ৫৬০০জি ৩.৯০-৪. ৪০ গি.হা. ১৩ হাজার ২০০ টাকা।

মাদারবোর্ড

আসুস: ইএক্স-এইচ৬১০এম-ভি৩ ডিডিআর–৪ ৯ হাজার ৮০০ টাকা এবং টাফ গেমিং বি৫৫০এম প্লাস ডিডিআর–৪ ১৯ হাজার ৩০০ টাকা।

গিগাবাইট: গিগাবাইট বি৭৬০এম গেমিং এক্স ডিডিআর-৪ ইন্টেল মাদারবোর্ড ২০ হাজার ২০০ টাকা এবং গিগাবাইট বি৪৫০এম ডিএস৩এইচ ভি২ ডিডিআর-৪ এএমডি মাদারবোর্ড ১১ হাজার টাকা।

এমএসআই: প্রো এইচ ৬১০ এম-জি (ডিডিআর-৪) ১১ হাজার টাকা এবং বি৪৫০এম-এ প্রো ম্যাক্স ৮ হাজার টাকা।

র‍্যাম

ট্রান্সসেন্ড: জেটর‍্যাম ৪ জিবি (ডিডিআর ৪) ১ হাজার ৬০০ টাকা এবং জেটর‍্যাম ৮ জিবি (ডিডিআর ৪) ২ হাজার ৪০০ টাকা।

করজেয়ার: ভেনজিন্স এলপিএক্স ৩২০০ মেগাহার্টজ (ডিডিআর ৪) ৮ জিবি ২ হাজার ৫৯০ টাকা এবং ভেনজিন্স এলপিএক্স ৩২০০ মেগাহার্টজ (ডিডিআর ৪) ১৬ জিবি ৩ হাজার ৯০০ টাকা।

জিস্কিল: ট্রাইডেন্ট জেড ৩২০০ মেগাহার্টজ ৮ জিবি (ডিডিআর ৪) ৩ হাজার ৩০০ টাকা।

টুইনমস: ডিডিআর-৩ ১৬০০ বাস ৪ জিবি ১ হাজার ৩৫০ টাকা; ডিডিআর-৪ ৪ জিবি ২৪০০ মেগাহার্টজ ১ হাজার ৩০০ টাকা; ডিডিআর-৩ ১৬০০ বাস ৮ জিবি ১ হাজার ৯৯০ টাকা এবং ডিডিআর-৪ ২৪০০ মেগাহার্টজ ৮ জিবি ২ হাজার ৩০০ টাকা।

হার্ডডিস্ক ড্রাইভ (এইচডিডি)

সিগেট: বারাকুডা৩৫ ৭২০০ আরপিএম সাটা ২ টে.বা. ৯ হাজার ২০০ টাকা।

তোশিবা: ২ টে.বা. তোশিবা পি৩০০ ৭২০০ আরপিএম ৭ হাজার ৬০০ টাকা এবং ৪ টে.বা. তোশিবা এক্স৩০০ ৭২০০ আরপিএম ১৭ হাজার টাকা।

সলিড স্টেট ড্রাইভ (এসএসডি)

স্যামসাং: ৮৭০ ইভো ৫০০ জিবি সাটা–৩ ৬ হাজার ৮০০ টাকা; ৯৮০ এনভিএমই ৫০০ জিবি ৬ হাজার ৭৫০ টাকা; ৯৭০ ইভো প্লাস ৫০০ জিবি ৭ হাজার ৮০০ টাকা এবং ৯৮০ প্রো ৫০০ জিবি এনভিএমই পিসিআইই জেন৪ ৯ হাজার টাকা।

এইচপি: এস৭০০ ১২০ জিবি ২ হাজার টাকা; এস৭০০ প্রো ১২৮ জিবি ২ হাজার ৮০০ টাকা; এস৭০০ ২৫০ জিবি ৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং ইএক্স৯০০ ৫০০ জিবি ৪ হাজার ৩০০ টাকা।

বহনযোগ্য হার্ডডিস্ক

ওয়েস্টার্ন ডিজিটাল: মাই পাসপোর্ট ১ টে.বা. ৭ হাজার টাকা; মাই পাসপোর্ট ২ টে.বা. ৮ হাজার ৭০০ টাকা এবং মাই পাসপোর্ট ৪ টে.বা. ১৩ হাজার টাকা।

তোশিবা: ক্যানভিও বেসিক এ৫ ২ টে.বা. ৯ হাজার ৫০০ টাকা।

এডেটা: এইচডি ৩৩০ ৪ টে.বা. ১৭ হাজার ২০০ টাকা।

ট্রান্সসেন্ড: স্টোরজেট ২৫এইচ৩ ১ টে.বা. ৭ হাজার ৮০০ টাকা; স্টোরজেট ২৫এইচ৩ ২ টে.বা. ৯ হাজার ৭০০ টাকা এবং স্টোরজেট ২৫এইচ৩পি ৪ টে.বা. ১৬ হাজার টাকা।

মনিটর

এইচপি: ১৯.৫ ইঞ্চি পি২০৪ভি ১০ হাজার টাকা; ২১.৫ ইঞ্চি পি২২এইচ জি৫ ফুল এইচডি ১৪ হাজার ৫০০ টাকা; ২১.৫ ইঞ্চি এম২২এফ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং ২৪ ইঞ্চি এম২৪এফ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা।

ডেল: ১৮.৫ ইঞ্চি ডি১৯১৮এইচ ১০ হাজার ৫০০ টাকা; ১৯.৫ ইঞ্চি ডি২০২০এইচ ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং ২২ ইঞ্চি এসই২২২২এইচ ১৩ হাজার টাকা।

এমএসআই: প্রো এমপি২২৩ ২১.৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি ১০ হাজার ২০০ টাকা; জি২৪সি৪ ই২ ২৩.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি কার্ভড ২৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্রো এমপি২৫১ ২৪.৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি ১৯ হাজার ৫০০ টাকা।

এলজি: ২২এমপি৪০০-বি ২২ ইঞ্চি ১০ হাজার ২০০ টাকা; ২২এমকে৬০০এম ২১.৫ ইঞ্চি ১৩ হাজার টাকা এবং ২৪জিএন৬০আর-বি ২৪ ইঞ্চি ফুল এইচডি ২৬ হাজার টাকা।

স্যামসাং: এলএস২২সি৩১০ইএই ২২ ইঞ্চি ১৩ হাজার টাকা।

গ্রাফিকস কার্ড

গিগাবাইট: জিটি ১০৩০ ২ জিবি ১০ হাজার টাকা, আরটিএক্স ৪০৬০ টিআই ইগল ওসি ৮ জিবি ৬৩ হাজার ২০০ টাকা এবং আরটিএক্স ৩০৭০ ইগল ৮ জিবি জিডিডিআর-৬ ৭৫ হাজার টাকা।

আসুস: জিফোর্স জিটি ২ জিবি জিডিডিয়ার-৫ ৯ হাজার ৩০০ টাকা এবং ডুয়াল রেডিয়ন আরএক্স ৭৬০০ ভি২ ওসি ৪২ হাজার ৫০০ টাকা।

এমএসআই: জিফোর্স আরটিএক্স ৫০৮০ ১৬জি ভেন্টাস ৩এক্স ওসি প্লাস ১৬ জিবি জিডিডিআর৭ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা; জিটিএক্স ১৬৫০ ডি৬ ৪ জিবি ১৮ হাজার ৫০০ টাকা; আরটিএক্স ৩০৬০ ভেনটাস ওসি ১২ জিবি ৪২ হাজার টাকা এবং আরটিএক্স ৪০৬০ ভেনটাস ওসি ১৬ জিবি ৬৫ হাজার টাকা।

কি–বোর্ড

লজিটেক: কে১২০ ৭৭০ টাকা, কে৩৮০ মাল্টি ডিভাইস ব্লুটুথ ৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং কে২৭০ ওয়্যারলেস ২ হাজার ৬৫০ টাকা।

এফোরটেক: কেআরএস-৮২ ৮৫০ টাকা; এফকে১১ ৯৫০ টাকা; এফবিকে২৫ ব্লুটুথ ও ইউএসবি ১ হাজার ৭০০ টাকা।

হ্যাভিট: কেবি২৭১ আলট্রা থিন ৫০০ টাকা; কেবি২৭৫এল গেমিং ৯২০ টাকা; কেবি৪৮৮এল গেমিং ১ হাজার ৫০ টাকা এবং কেবি ৪৮৭এল গেমিং ১ হাজার ৩৬০ টাকা।

রয়েল ক্লুজ: আরকে৭১ ডুয়াল মোড গেমিং ৩ হাজার ৯০০ টাকা এবং আরকে ৮৪ ট্রাই মোড গেমিং ৪ হাজার ৯০০ টাকা।

প্রিন্টার

এইচপি: ডেস্কজেট ইঙ্ক অ্যাডভান্টেজ ২৭৭৫ (রঙিন) ৮ হাজার ৫০০ টাকা এবং ডেস্কজেট ইঙ্ক অ্যাডভান্টেজ ২৮৭৫ ওয়াই-ফাই (রঙিন) ১১ হাজার টাকা।

এপসন: ইকোট্যাংক এল৩২১০ ১৭ হাজার টাকা (রঙিন) এবং ইকোট্যাংক এল৩২৫০ ১৯ হাজার টাকা (রঙিন)।

ক্যানন: পিক্সমা জি১০১০ (রঙিন) ১৪ হাজার ৫০০ টাকা; ইমেজক্লাস এলবিপি৬০৩০ লেজার প্রিন্টার (সাদা–কালো) ১৭ হাজার ৩০০ টাকা এবং ইমেজক্লাস এলবিপি৬০৩০ডব্লিউ লেজার প্রিন্টার (সাদা–কালো) ১৯ হাজার ৫০০ টাকা।

কেসিং

১ হাজার টাকা থেকে ৩৮ হাজার ৮০০ টাকা।

ইউপিএস

ম্যাক্সগ্রিন: এমজি সিলভার (৬৫০ ভিএ) ৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং এমজি-এলআই-ইএপি (১২০০ ভিএ) ৬ হাজার ৭৫০ টাকা।

অ্যাপোলো: ১০৬৫ এ/১০৬৫ (৬৫০ ভিএ) ৩ হাজার ২০০ টাকা; ১১২০এফ (১২০০ভিএ) ৬ হাজার ৬০০ টাকা এবং ১২৪০ (২০০০ ভিএ) ১১ হাজার ৮০০ টাকা।

ডিজিটাল এক্স: ৬৫০ ভিএ ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং ৮৫০ ভিএ ৪ হাজার ১০০ টাকা।

অ্যান্টিভাইরাস

ক্যাসপারস্কি: ক্যাসপারস্কি স্ট্যান্ডার্ড ১ ব্যবহারকারী অ্যান্টিভাইরাস (১ বছর) ৬০০ টাকা; ক্যাসপারস্কি স্ট্যান্ডার্ড ৩ ব্যবহারকারী অ্যান্টিভাইরাস (১ বছর) ১ হাজার ২২৫ টাকা এবং ক্যাসপারস্কি টোটাল সিকিউরিটি ১ ব্যবহারকারী (১ বছর) ১০০০ টাকা।

ইসেট: এনওডি৩২ অ্যান্টিভাইরাস ১ ব্যবহারকারী (১ বছর) ৪৫০ টাকা; ইন্টারনেট সিকিউরিটি ১ ব্যবহারকারী (৩ বছর) ১ হাজার ১৫০ টাকা এবং স্মার্ট সিকিউরিটি প্রিমিয়াম ১ ব্যবহারকারী (১ বছর) ২ হাজার ২৫০ টাকা।

বিটডিফেন্ডার: ইন্টারনেট সিকিউরিটি ১ ব্যবহারকারী (১ বছর) ৫৭৫ টাকা এবং টোটাল সিকিউরিটি ১ ব্যবহারকারী (১ বছর) ৮৫০ টাকা।

প্যান্ডা: ডোম অ্যাডভান্স ১ ব্যবহারকারী (১ বছর) ৬০০ টাকা এবং ডোম অ্যাডভান্স ইন্টারনেট সিকিউরিটি ৩ ব্যবহারকারী (১ বছর) ১ হাজার ৩০০ টাকা।

রাউটার

টিপি-লিংক: টিএল-ডাব্লিউআর৮৪০এন ৩০০ এমবিপিএস ইথারনেট সিঙ্গেল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ১ হাজার ৫০০ টাকা; আর্চার সি২০ এসি৭৫০ এমবিপিএস ইথারনেট ডুয়াল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং আর্চার সি৬৪ ওয়্যারলেস অ্যান্ড ইথারনেট ডুয়াল-ব্যান্ড এসি১২০০ এমবিপিএস গিগাবিট ৩ হাজার ২০০ টাকা।

ডি-লিংক: ডিআইআর-৬১৫ জেড১ ৩০০ এমবিপিএস ইথারনেট সিঙ্গেল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ডিআইআর-৮৪১ এসি১২০০ এমবিপিএস গিগাবিট ডুয়াল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ২ হাজার ৫০০ টাকা।

টেন্ডা: এফ৩ ৩০০ এমবিপিএস ইথারনেট সিঙ্গেল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ১ হাজার ৩০০ টাকা এবং এফ৬ এন৩০০ এমবিপিএস ইথারনেট সিঙ্গেল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ১ হাজার ৫০০ টাকা।

আসুস: আরটি-এন১২+ ৩০০ এমবিপিএস ইথারনেট সিঙ্গেল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই ২ হাজার ৩০০ টাকা এবং আরটি-এএক্স৫২ এএক্স১৮০০ এমবিপিএস গিগাবিট ডুয়াল-ব্যান্ড ওয়াই-ফাই৬ ৭ হাজার ৩০০ টাকা।

এখানে শুধু যন্ত্রাংশের দাম দেওয়া হয়েছে। পুরো কম্পিউটার কেনার ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ সংযোজিত হবে। ঢাকার বিভিন্ন বাজার থেকে সংগৃহীত যন্ত্রাংশের দামে হেরফের হতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রযুক্তিপণ্যের বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি স্বাভাবিক, দামও অপরিবর্তিত