দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, দুর্নীতির কারণে সুশাসন সংকটে পড়ে। অনিয়মে মদদদাতা হিসেবে অনেক সময় রাজনীতিবিদদের ভূমিকা থাকে। দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোরদের নির্বাচিত করলে এমন সংকট আসবে। কাজেই দুর্নীতিবাজকে ভোট দেওয়া যাবে না।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে দুদকের জেলা সমন্বিত কার্যালয় আয়োজিত গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এ বিষয়ে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করছে। পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারের অগ্রগতি এখনো সন্তোষজনক নয়। চেষ্টা অব্যাহত আছে, তবে দেশের টাকা বাইরে নিতে যাদের সহযোগিতা লাগে, আগে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের দেওয়া কিছু বিবরণের ভিত্তিতে কোম্পানি গড়ে তুলে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে টাকা বিদেশে পাচার করা হয়।

হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে দুর্নীতির তদন্ত পাঁচ বছরেও শেষ না হওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক কোনো বিচারকারী প্রতিষ্ঠান নয়। তবে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুতই আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

তিনি আরো জানান, ১৭৭২ সাল থেকে হবিগঞ্জ জেলার সিলিকা বালু লুট হয়ে আসছে। এ বিষয়ে সবার সোচ্চার থাকা জরুরি।

এর আগে গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দুদক চেয়ারম্যান। বিশেষ অতিথি ছিলেন—দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ও সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। পুলিশ সুপার (এসপি) এএনএম সাজেদুর রহমানসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গত দুই সপ্তাহে হবিগঞ্জ জেলায় দুদকের ১০টি বুথ স্থাপন করা হলে প্রায় ২০০ অভিযোগ জমা পড়ে। এসবের বেশিরভাগই রেলওয়ে, হাসপাতাল, নির্বাচন, রেজিস্ট্রি, বিআরটিএ, পাসপোর্ট অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরকে ঘিরে। এর মধ্যে একই তফসিলভুক্ত অভিযোগ বাতিল করে ৮০টি অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্য শুনানি করা হয়েছে।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ও.পি.এ’র স্বেচ্ছাসেবকদের গ্রীন মিশন

সিদ্ধিরগঞ্জ ১ নং ওয়ার্ডে অর্গানাইজেশন অফ পিস অ্যাসোসিয়েটরস (ও.পি.এ) মশাবাহিত রোগের বিস্তার রোধে এক ব্যাপক মশকনিধন অভিযান পরিচালনা করেছে।

ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া এবং জিকা ভাইরাসসহ মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি ক্রমবর্ধমান। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই ধরনের রোগের প্রতিরোধে শুধু সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়; সমাজ ও সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ও.পি.এ জনকল্যাণমূলক অভিযান পরিচালনা করেছে।

সোমবার ( ২৪ নভেম্বর ) সকাল থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ ১ নং ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, ড্রেন, খাল, পার্ক এবং আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে মশকনিধন কার্যক্রম চালানো হয়।

অভিযান চলাকালীন, ও.পি.এ–এর স্বেচ্ছাসেবকরা লিফলেট বিতরণ করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছেন। লিফলেটগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে—মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে বাড়ি ও আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা, পানি জমতে না দেওয়া, এবং নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্য সচেতনতা বজায় রাখা কতটা জরুরি।

ও.পি.এ–এর মুখপাত্র সোহাদ হোসেন প্রান্ত বলেন, মশাবাহিত রোগ বর্তমানে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশেষ করে বর্ষাকালে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। শুধুমাত্র সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।

সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের আজকের এই অভিযান সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষদের সুরক্ষিত রাখতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

অভিযানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সমাজকর্মী, নারী ও যুব স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা ও.পি.এ–এর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, এমন সমন্বিত প্রচেষ্টা দীর্ঘমেয়াদে মশাবাহিত রোগের বিস্তার রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, শুধু ডেঙ্গু নয়, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া এবং জিকা ভাইরাসের মতো মশাবাহিত রোগগুলোও জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। সঠিক সময়ে মশকনিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করলে এই রোগগুলোকে যথেষ্ট পরিমাণে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ও.পি.এ’র স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, আজকের অভিযান শুধুমাত্র মশকনিধনেই সীমাবদ্ধ নয়। তারা স্থানীয় মানুষদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাইছেন।

আমরা চাই, মানুষ নিজেই বুঝুক কীভাবে ছোট ছোট উদ্যোগ, যেমন বাড়ির চারপাশের পানি জমে না রাখা, আবর্জনা সঠিকভাবে ফেলা এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, তাদের পরিবারকে মশাবাহিত রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে,বললেন একজন স্বেচ্ছাসেবক।

ও.পি.এ’র এই উদ্যোগে স্থানীয় স্কুল, মসজিদ কমিটি এবং যুব সংঘের সদস্যরাও অংশ নিয়েছে। এই সমন্বিত প্রচেষ্টা স্থানীয় জনগণকে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রাণিত করছে।

ও.পি.এ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতেও তারা নিয়মিতভাবে সিদ্ধিরগঞ্জ এবং অন্যান্য এলাকায় এই ধরনের জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। সংগঠনটি আশা করছে, এই ধরনের উদ্যোগ শুধু সিদ্ধিরগঞ্জ নয়, নারায়ণগঞ্জ এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।

উক্ত অভিযান স্থানীয়দের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায়ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনসচেতনতা, নিয়মিত মশকনিধন কার্যক্রম এবং স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মশাবাহিত রোগের বিস্তার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।

অর্গানাইজেশন অফ পিস অ্যাসোসিয়েটরস (ও.পি.এ) আশা প্রকাশ করেছে, এই ধরনের সচেতনতামূলক অভিযান নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং আগামী দিনে আরও ব্যাপক ও সমন্বিত জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ