চিকিৎসকদের নিজের দায়িত্ব, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও সক্ষমতা নিয়ে চিকিৎসা সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। 

সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সিভিল সার্জন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। জেলা সিভিল সার্জনদের নিয়ে দু’দিনব্যাপী সম্মেলন আজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা যে স্বাস্থ্যহীন সেটা আমরা সবাই বুঝি এবং একে অপরকে দোষ দেই। কিন্তু দোষ দিলে তো স্বাস্থ্যহীনতা দূর হয়ে যাবে না। এটার প্রতিকার করতে হবে যাতে করে আমরা স্বাস্থ্যসেবা সঠিক করতে পারি। দুনিয়ার যত দেশ আছে, যত জাতি আছে তারা যদি নিজ নিজ স্বাস্থ্যসেবা আমাদের চাইতে ভালো করতে পারে তাহলে আমাদের মধ্যে কী গাফিলতি আছে, কী অভাব আছে যে আমরা পারছি না। নিজেদের কাছে আত্মজিজ্ঞাসা কীভাবে আমরা এটা ঠিক করতে পারব।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যতটুকু চিকিৎসা সরঞ্জাম বা সুযোগ সুবিধা রয়েছে, এই পরিস্থিতির মধ্যে যদি আমরা পরিবর্তনের জন্য নিজের মন ঠিক করতে পারি তাহলে আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার ২৫ শতাংশ উন্নতি হয়ে যাবে । 

সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম কোভিড মহামারি ও জুলাই আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা করায় সকল চিকিৎসককে অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

স্বাস্থ্যসেবায় সিভিল সার্জনরা মূল কাণ্ডারি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে আমাদের যথেষ্ট সাফল্য থাকলেও ওষুধখাত, যন্ত্রপাতিসহ জনবলের ঘাটতি প্রকট থাকায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত এখনও অনেকটাই পেছনে। কিন্তু সিভিল সার্জনরা তাদের মেধা মনন ও দায়িত্বশীলতাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসাখাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। 

সাত হাজার সুপার নিউমারি পদ সৃষ্টি করে প্রমোশনের কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। শুধু ডাক্তার নয়, নার্সও নিয়োগ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড.

সাইয়েদুর রহমান বলেন, প্রমোশন, পদায়ন, বাজেট এবং ঔষধের অপ্রতুলতা সমস্যার সমাধান হলেই স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি সম্ভব। স্বাস্থ্যখাত পুনর্গঠনের জন্য ইউনিক হেলথ কার্ড করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আজকের সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সিভিল সার্জন ড. মো. জিল্লুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু জাফর।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড ইউন স স ভ ল স র জন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কাশবনের হাতছানিতে ব্রহ্মপুত্রের তীরে ভিড়

চারদিকে জেগে ওঠা ব্রহ্মপুত্র নদের বালুচর। এর মাঝখানে স্বচ্ছ পানির আধার। ওপরে নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ। আর চরজুড়ে শুভ্র কাশফুল। প্রকৃতির দানেই তৈরি হয়েছে এ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। বাতাসে দুলতে থাকা কাশফুলের এ সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের মনে দেয় একধরনের প্রশান্তি। তাই প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করছেন এখানে।

এ অপার সৌন্দর্যের দেখা মিলবে জামালপুর শহরের ফৌজদারি এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নদের ধারে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী মানুষের। সবাই নিজেদের মতো করে ছবি তুলছেন, কেউবা কাশফুল ছিঁড়ে তৈরি করছেন তোড়া।

গত মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, শহরের মোড় থেকে শুরু করে নদের তীর পর্যন্ত মানুষের ভিড়। ছোট্ট একটি সেতু পার হয়ে সবাই ছুটছেন নদীর ধারে। প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে ফুটেছে কাশফুল। সবুজ লম্বা পাতার বুক থেকে বেরিয়ে আসা শুভ্র কাশফুল কোথাও থোকা থোকা, কোথাও গুচ্ছ আকারে। দূর থেকে মনে হবে, বালুচরে যেন সাদা চাদর বিছানো। হাওয়ায় দুলে ওঠা কাশফুলে মন ভরে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের।
চরের যে অংশে কাশবনের সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে জনবসতি নেই। আছে স্বচ্ছ পানির লেকের মতো একটি ডোবা। কাশফুলঘেরা সেই পানিতে ডিঙিনৌকা নিয়ে ঘুরছেন দর্শনার্থীরা। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা সন্তানদের নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছেন।

ব্রহ্মপুত্র নদের চরের যে অংশে কাশবনের সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে জনবসতি নেই। আছে স্বচ্ছ পানির লেকের মতো একটি ডোবা

সম্পর্কিত নিবন্ধ