চিকিৎসাখাতে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা
Published: 12th, May 2025 GMT
চিকিৎসকদের নিজের দায়িত্ব, সৃজনশীলতা, মননশীলতা ও সক্ষমতা নিয়ে চিকিৎসা সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সিভিল সার্জন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। জেলা সিভিল সার্জনদের নিয়ে দু’দিনব্যাপী সম্মেলন আজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা যে স্বাস্থ্যহীন সেটা আমরা সবাই বুঝি এবং একে অপরকে দোষ দেই। কিন্তু দোষ দিলে তো স্বাস্থ্যহীনতা দূর হয়ে যাবে না। এটার প্রতিকার করতে হবে যাতে করে আমরা স্বাস্থ্যসেবা সঠিক করতে পারি। দুনিয়ার যত দেশ আছে, যত জাতি আছে তারা যদি নিজ নিজ স্বাস্থ্যসেবা আমাদের চাইতে ভালো করতে পারে তাহলে আমাদের মধ্যে কী গাফিলতি আছে, কী অভাব আছে যে আমরা পারছি না। নিজেদের কাছে আত্মজিজ্ঞাসা কীভাবে আমরা এটা ঠিক করতে পারব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যতটুকু চিকিৎসা সরঞ্জাম বা সুযোগ সুবিধা রয়েছে, এই পরিস্থিতির মধ্যে যদি আমরা পরিবর্তনের জন্য নিজের মন ঠিক করতে পারি তাহলে আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবার ২৫ শতাংশ উন্নতি হয়ে যাবে ।
সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম কোভিড মহামারি ও জুলাই আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা করায় সকল চিকিৎসককে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যসেবায় সিভিল সার্জনরা মূল কাণ্ডারি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে আমাদের যথেষ্ট সাফল্য থাকলেও ওষুধখাত, যন্ত্রপাতিসহ জনবলের ঘাটতি প্রকট থাকায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত এখনও অনেকটাই পেছনে। কিন্তু সিভিল সার্জনরা তাদের মেধা মনন ও দায়িত্বশীলতাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসাখাতকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
সাত হাজার সুপার নিউমারি পদ সৃষ্টি করে প্রমোশনের কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। শুধু ডাক্তার নয়, নার্সও নিয়োগ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড.
আজকের সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা সিভিল সার্জন ড. মো. জিল্লুর রহমান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু জাফর।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স স ভ ল স র জন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ধামাকা শপিংয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডি
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’–এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে এসব সম্পত্তি ক্রোক করা হয়।
সিআইডি জানায়, ধামাকা শপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম ডি জসীম উদ্দিন চিশতীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে গ্রাহকদের অর্থ হস্তান্তর করা হয়। এমনকি মাইক্রোটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে। এ বিষয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতায় বনানী মডেল থানায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর একটি মামলা করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত একটি বহুতল ভবন, যার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে থাকা ৪১ শতাংশ জমিও (মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা) ক্রোক করা হয়েছে। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ১৬ জুন এই সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ধামাকা শপিং নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি বৈধ কোনো নিবন্ধন ছাড়াই ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত হচ্ছিল। স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহের লোভ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি হাজার হাজার গ্রাহক ও বিক্রেতার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। তাদের নিজস্ব কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকমের সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারা লেনদেন করত। সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হলেও ২০২১ সালের ২৭ জুন মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা স্থিতি ছিল, যা আর্থিক জালিয়াতির সুস্পষ্ট প্রমাণ।