আ’লীগের পোড়া অফিস দখল করে বিএনপি নেতাদের সাইনবোর্ড
Published: 12th, May 2025 GMT
কুড়িগ্রামের উলিপুরে আগুনে পুড়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের কার্যালয় দখল করে নিয়েছেন বিএনপির নেতারা। তারা সেখানে ‘চর উন্নয়ন কমিটি, উলিপুর শাখা’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন। রোববার বিকেলে সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট উপজেলা আওয়ামী লীগের এ কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। পুড়ে যাওয়া কার্যালয়টিতে বর্তমানে দরজা-জানালা নেই। সেখানে কুড়িগ্রামে চর উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়। চরাঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিতে এ কমিটি কাজ করছে। কমিটিতে বিএনপি ও সমমনা লোকদের রাখা হয়েছে। তবে দায়িত্বশীলদের দাবি, এটি অরাজনৈতিক সংগঠন।
জানা গেছে, উপজেলা চর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক সোলায়মান আলী সরকার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদুল হাবীব নয়ন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ কমিটির বেশির ভাগ সদস্য বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাইনবোর্ড টাঙানো প্রসঙ্গে সোলায়মান আলী বলেন, ‘ভবনটি নোংরা ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। একে পরিচ্ছন্ন রাখতে চর উন্নয়ন কমিটির অফিসকক্ষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। আইনি কোনো বাধা থাকলে সরে যাব।’
সোলায়মান আরও বলেন, ‘আমরা যতটা জানি, জায়গাটি কারও নামে নেই। চর উন্নয়ন কমিটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন। আমরা মনে করি, জায়গাটি যদি ব্যবহার করা যায় তাহলে আশপাশের পরিবেশ ভালো থাকবে।’
এরশাদুল হাবীব বলেন, ‘এটি আওয়ামী লীগের কার্যালয় ছিল। কিন্তু যথাযথ কাগজপত্রের হদিস পাবেন না। তারা অবৈধভাবে এটি ব্যবহার করেছে। আমরা প্রক্রিয়া মেনে এ জায়গা ব্যবহার করব। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে লিজ নেওয়া যায় তা দেখা হবে। পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে আপাতত ভবনটিতে উপজেলা চর উন্নয়ন কমিটির কার্যক্রম চালানো হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘এভাবে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় দখল করা নিন্দনীয়। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের কিছু করার নেই। নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারছি না।’
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হায়দার আলী মিয়া বলেন, সাইনবোর্ড টাঙানোর বিষয় আমরা অবগত নয়। এ ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
উলিপুর থানার ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি জানি না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ব এনপ স ইনব র ড ব এনপ র র জন ত কম ট র উপজ ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
কেবিসির মঞ্চে সোফিয়া-ব্যোমিকারা, শুরু বিতর্ক
গত ২২ এপ্রিল তারিখে ভারত-নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুর পরই সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে পাল্টা পদক্ষেপ নেয় ভারত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের নয়টি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
সেই অভিযানের খুঁটিনাটি গোটা ভারতবাসীকে তুলে ধরার সময় নারীশক্তিকেই এগিয়ে রাখে ভারতীয় সেনা। সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিগুলোকে কিভাবে শনাক্ত করা হয়, কিভাবে আঘাত হানা হয়, কত সময় ধরে ওই অভিযান চলে- সে সময় অভিযানের খুঁটিনাটি দেশবাসীকে বোঝানোর দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহকে। নারীশক্তিকে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি, এই দুই কর্মকর্তাকে সামনে রেখে নাগরিকদের ঐক্য এবং সম্প্রীতির বার্তাও দেয় ভারতীয় সেনা।
এবার সেই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহকে দেখা যাবে ভারতের জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি (কেবিসি)-তে। এই দুই সেনা কর্মকর্তার পাশাপাশি ভারতীয় নৌবাহিনীর কমান্ডার প্রেরণা দেওস্থালিকেও ওই শোতে অংশ নিতে দেখা যাবে।
আরো পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে: ট্রাম্প
পাকিস্তানের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করলো ভারত
আগামী ১৫ আগস্ট, ভারতীয় সময় রাত নয়টায় দেশটির স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ পর্বে এটি সম্প্রচার করা হবে সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশনে। কেবিসির ১৭তম এডিশনে ওই অনুষ্ঠানের উপস্থাপক অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন।
ইতোমধ্যেই সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশন তাদের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে ‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কে মেগাস্টারের সঙ্গে তাদের আলাপচারিতার একটি প্রোমো শেয়ার করেছে। ওই তিন সেনা কর্মকর্তাকে স্বাগত জানানোর সময় অমিতাভ বচ্চনকে দেশপ্রেমের অনুভূতি হিসাবে ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
ওই প্রোমোর শুরুতেই কর্নেল সোফিয়া, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা এবং কমান্ডার প্রেরণা নিজেদের পরিচয় দেন। পরে কেবিসির হট সিটে বসে বচ্চনের সঙ্গে কথা বলার সময়, সোফিয়া জানান, “পাকিস্তান ইয়ে (সন্ত্রাসবাদি কার্যকলাপে মদদ দেওয়া) করতা চালা অরহা হ্যায়। তো জওয়াব দেনা বানতা থা স্যার। ইসিলিয়ে অপারেশন সিঁদুর কো প্ল্যান কিয়া গয়া’ (পাকিস্তান এটি করেই চলেছে। তার একটা জবাব দেওয়া দরকার ছিল। তাই অপারেশন সিঁদুরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল)।
কমান্ডার ব্যোমিকা বলেন, ‘রাত কো এক বাজ কার পাঁচ মিনিট সে লেকার দেড় বাজে তক, পঁচিশ মিনিট মে খেল খতম কর দিয়া (রাত ১টা ৫টা থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত, আমরা ২৫ মিনিটের মধ্যে পুরো অপারেশন শেষ করেছি)। আমাদের লক্ষ্যগুলো ধ্বংস করা হয়েছিল এবং কোনো বেসামরিক লোকের কোনো ক্ষতি হয়নি।
তবে, একটি টেলিভিশন রিয়েলিটি শোতে উপস্থিত হয়ে সেনাবাহিনীর নারী কর্মকর্তাদের মুখে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান সম্পর্কে কথা বলার বিষয়টি মোটেই ভালোভাবে নেয়নি নেটিজেনরা। অনেকে আবার সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত নারী কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানোর বাধ্যবাধকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ মোহিত চৌহান নামে একজন লিখেছেন, “একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্রে কোনো সামরিক অভিযানের পরে আপনি কি কখনও এমন কিছু দেখেছেন? সামরিক চাকরিরত ব্যক্তিকে টিভি শোতে বসার জন্য কিভাবে অনুমোদন দেওয়া হলো? আসলে কেন্দ্রের বর্তমান সরকার নির্লজ্জভাবে আমাদের বাহিনীকে তাদের তুচ্ছ রাজনীতি এবং অতি-জাতীয়তাবাদের জন্য ব্যবহার করছে।”
ব্রুশ ওয়েনি নামে একটি এক্স হ্যান্ডেল অ্যাকাউন্ট থেকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রোটোকল কেবিসির মতো রিয়েলিটি শোতে সেনা কর্মকর্তাদের পাঠানোর অনুমতি দেয় কি না, এই প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কিছু প্রোটোকল, কিছু মর্যাদা এবং বিশাল সম্মান আছে। রাজনীতিবিদরা তাদের ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য এটি নষ্ট করছেন। এটা খুবই লজ্জাজনক।”
তৃতীয় একজন মন্তব্য করেছেন, “আমাদের সেনাবাহিনী পবিত্র, রাজনীতির ঊর্ধ্বে, জনসংযোগের ঊর্ধ্বে। জাতিকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সেনাবাহিনী, কোনো রাজনীতিকের ব্র্যান্ড রক্ষা করার জন্য নয়।”
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ