অবৈধ নির্বাচনের মেয়র হতে চাইলে সেটা কি বৈধ হয়, প্রশ্ন সারজিসের
Published: 19th, May 2025 GMT
‘যে নির্বাচন অবৈধ, সেই নির্বাচনের মেয়র আমি কীভাবে হতে চাই? সেটা কীভাবে বৈধ হয়?’ এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে উদ্দেশ করে একটি পোস্ট দিয়েছেন সারজিস। যেখানে তিনি এই প্রশ্নগুলো রাখেন।
ফেসবুক পোস্টে সারজিস লিখেছেন, “ইশরাক ভাইকে আমি চিনতাম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে হিসেবে। যেদিন হাসিনার পুলিশের হাত থেকে বুক চিতিয়ে নিজের কর্মীকে ছিনিয়ে আনলেন, সেদিন থেকে ইশরাক ভাইকে আমি তার পরিচয়ে চিনি, রাজনীতিবিদ হিসেবে চিনি। তার সাথে একাধিকবার কথা হয়েছে।গতানুগতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা বাংলাদেশের পার্সপেক্টিভে বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক দলের অন্য দশজন নেতার মতো গতানুগতিক চিন্তাধারার মনে হয়নি।”
আরো পড়ুন:
গোলাপ শাহ মাজার মোড় অবরোধ করে ইশরাক সমর্থকদের বিক্ষোভ
কেসিসি নির্বাচন: হাতপাখার প্রার্থীকে জয়ী দাবি করে মামলা
“তিনি (ইশরাক) অনেক ক্ষেত্রেই সত্যটাকে অকপটে স্বীকার করেছেন, ইভেন সেটা দলের বক্তব্যের সাথে না মিললেও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে এই প্রজন্মের যারা আছেন, তাদের থেকে সময়ের, জনগণের ও আমাদের প্রত্যাশাটা অন্যদের তুলনায় বেশি। ইশরাক ভাই তাদের মধ্যে অন্যতম।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপি তাদের জায়গা থেকে অসংখ্যবার বলেছে এবং এটাই সত্য যে বিগত তিনটা জাতীয় নির্বাচন এবং অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনগুলো ছিল একপাক্ষিক, প্রশ্নবিদ্ধ এবং অবৈধ। যে নির্বাচন অবৈধ, সেই নির্বাচনের মেয়র আমি কীভাবে হতে চাই? সেটা কীভাবে বৈধ হয়? তাহলে তো সেই নির্বাচনকে আমি বৈধতা দিয়ে দিচ্ছি!”
“তাহলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) শুধু ইশরাক ভাই কেন, সকল জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড ও সংসদীয় আসনে সবাইকে তাদের জায়গা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। মেয়র হয়ে সাময়িক ক্ষমতার ব্যবহার করা, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা; এসবের দিকে তাকিয়ে সামান্য কয়েক দিনের জন্য একটা চেয়ারে বসে অবৈধ নির্বাচনগুলোকে ইশরাক ভাই যদি বৈধতা দেন, তাহলে এটি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একটি কালো দাগ হয়ে থাকবে।”
সারজিস বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তায় এই মাইলস্টোনগুলো ধীরে ধীরে অর্জন করে নিতে পারবেন। কিন্তু সাময়িক প্রাপ্তির আশায় অবৈধ নির্বাচনের সো-কল্ড বৈধ মেয়র হিসেবে বসে তিনি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এতো বড় একটি দাগ লাগাবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাকেই নেওয়া উচিত।”
সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্ট
“একটি বিষয় বিচারাধীন প্রক্রিয়ায় থাকাকালীন স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে নগর ভবনের সামনে এর চেয়ে কয়েকগুণ বড় বিক্ষোভ কিংবা অবস্থান কর্মসূচি এখন যেমন করছেন, আগামীতেও তিনি করতে পারবেন। সেই তুমুল জনপ্রিয়তা তার আছে। কিন্তু এই জনপ্রিয়তাকে তিনি অপরাধের বৈধতা উৎপাদনে ব্যবহার করতে পারেন না। তার সাথে এটা যায় না।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির এ নেতা উল্লেখ করেন, “উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কথা চিন্তা করে না হোক, অভ্যুত্থানের সামনের সারির আপসহীন একজন নেতৃত্ব ও যোদ্ধার কথা চিন্তা করে হলেও তার স্থানীয় কিছু কর্মীদের মাধ্যমে তিনি আসিফ মাহমুদকে এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করাতে পারেন না, অপমানিত করাতে পারেন না, গালিগালাজ করাতে পারেন না, বাবা-মা তুলে কথা বলাতে পারেন না।এটা কখনোই রাজনৈতিক শিষ্টাচারপন্থী না। পরোক্ষভাবে এই দায় তার ওপরেও বর্তায়।”
সারজিস বলেন, “যারা আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি, তারাই যদি বিগত অবৈধ নির্বাচনগুলোকে বৈধতা দেওয়ার জন্য নিজেদের সক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাহলে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিক্রমায় ঐতিহাসিক দায় তৈরি করবে। ইশরাক ভাই সেই দায় সারাজীবনের জন্য বহন করবেন কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা তাকে ব্যক্তিত্বের আনকম্প্রোমাইজের জায়গা থেকে যে উচ্চতায় প্রত্যাশা করি, এসব গতানুগতিক কালচার পলিটিক্সের কারণে সেটা তিনি নির্দ্বিধায় হারাবেন। রাজনৈতিক দীর্ঘ পথ চলার প্রারম্ভেই ক্ষমতার সাথে নীতির নেগোসিয়েশন-সাদেক হোসেন খোকার উত্তরসূরির মানায় না, ইশরাক ভাইয়ের মানায় না।”
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ জ ত য় ন গর ক প র ট ইশর ক ভ ই র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে ৩টি কারখানাসহ ৩ শতাধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন, জরিমানা
সিদ্ধিরগঞ্জে তিনটি বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কারখানা সহ তিন শতাধিক অবৈধ গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। দুইটি কারখানাকে জরিমানা করা হয়েছে দুই লক্ষ টাকা।
জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমান এর নেতৃত্বে সোমবার (১৯ মে) দুপুরে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধিন জালকুঁড়ি, তালতলা ও আমতলা এলাকার তিনটি স্থানে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
পরে কারখানাগুলোর অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন সহ জব্দ করা হয় বিপুল পরিমান অবৈধ পাইপ, রাইজার ও বার্ণার। একই সাথে অবৈধ সংযোগ স্থলগুলো স্থায়ীভাবে সীলগালা করে দেয় তিতাস কতৃপক্ষ।
পরে এক কিলোমিটার বিস্তৃত অর্ধ শতাধিক বাসা বাড়ির তিন শতাধিক আবাসিক অবৈধ গ্যাসের সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়ন
জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমান বলেন, আমাদের অভিযানকালে তিতাসের আবাসিক লাইনের সংযোগস্থল থেকে দুইটি ওয়াশিং কারখানা ও একটি মেটাল ফার্ণিচার কারখানায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগের প্রমান পাওয়া যায়।
ফলে তিনটি কারখানারই অবৈধ সংযোগ আমরা বিচ্ছিন্ন করি। এর মধ্যে জিসান ওয়াশিং লন্ড্রি নামে একটি ওয়াশিং কারখানা এবং শাহ জালাল ফার্নিচার নামে একটি মেটাল খানাটুলি কারখানা থেকে এক লক্ষ টাকা করে মোট দুই লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
তবে বিসমিল্লাহ মেটাল নামে আরেকটি কারখানায় মালিকপক্ষের কাউকে না পাওয়ায় জরিমানা করা সম্ভব হয় নি।
আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন তিতাসের নারায়ণগঞ্জ জোনের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোস্তাক মাসুদ মো. ইমরান ও ফতুল্লা জোনের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মশিউর রহমান সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা।