সর্বকালের সেরা ১০ ফুটবলার: কারা আছেন আইএফএফএইচএসের তালিকায়
Published: 19th, May 2025 GMT
ফুটবলে সর্বকালের সেরা কে—এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই। এ নিয়ে বিতর্কও চলে আসছে যুগের পর যুগ। পেলে, ম্যারাডোনা, মেসি নাকি রোনালদো? যুক্তি, তর্ক ও বিশ্লেষণের পর বিশ্লেষণ করেও শেষ পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তরে সর্বসম্মতিক্রমে কাউকে বেছে নেওয়ার উপায় নেই। পাল্টা যুক্তি ওঠেই।
আরও পড়ুনআনচেলত্তির ব্রাজিল দলে কারা ডাক পাচ্ছেন২ ঘণ্টা আগেযেমন ধরুন, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফুটবল হিস্টরি অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকস (আইএফএফএইচএস) তাদের ওয়েবসাইটে সর্বকালের সেরা ১০ ফুটবলারের তালিকা প্রকাশ করেছে, লিওনেল মেসি যেখানে সবার ওপরে। এই তালিকা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক। পেলে–ডিয়েগো ম্যারাডোনার ভক্তরা তো চুপ করে থাকবেন না। প্রতিবাদ জানাতে পারেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সমর্থকেরাও।
সেই যুক্তি-তর্কে যাওয়ার আগে আইএফএফএইচএস সমন্ধে একটু জানাশোনারও দরকার আছে। জার্মানির কেমিস্ট ও খেলাধুলার ইতিহাসবিদ আলফ্রেড পোগে ১৯৮৪ সালে লাইপজিগে আইএফএফএইচএস প্রতিষ্ঠা করেন। অ্যাসোসিয়েশন ফুটবলের পরিসংখ্যান, রেকর্ড ও ইতিহাস সংরক্ষণ করে এই সংস্থা। ফিফার সঙ্গে এই সংস্থার কোনো অধিভুক্তি নেই, তবে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির ওয়েবসাইটে আইএফএফএইচএসের দেওয়া বিভিন্ন পুরস্কার ও রেকর্ডের স্বীকৃতি আছে। ২১১টির বেশি ফুটবল খেলা দেশগুলোর প্রতিনিধিত্ব রয়েছে আইএফএফএইচএসে। বার্ষিকভাবে বিভিন্ন পুরস্কারও দেয় এই সংস্থা—বিশ্বের সেরা রেফারি, ক্লাব কোচ, জাতীয় দল কোচ, গোলকিপার, প্লে–মেকার, টিম অব দ্য ইয়ার.
আইএফএফএইচএস কীভাবে সর্বকালের সেরা ১০ ফুটবলার বেছে নিয়েছে, সেটা অবশ্য ব্যাখ্যা করেনি। তবে যেহেতু পরিসংখ্যান নিয়েই মূলত তাদের কাজকারবার, ধারণা করা যায়, পরিসংখ্যানই এখানে প্রধান বিবেচ্য ছিল। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কাও জানিয়েছে, আইএফএফএইচএস সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের এই তালিকা প্রস্তুত করেছে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ও দলীয় পরিসংখ্যান ও অর্জনের নিরিখে।
আরও পড়ুনবাপ কা বেটা: পর্তুগালের জার্সিতে রোনালদো জুনিয়রের প্রথম ‘সিউ’৫ ঘণ্টা আগেশীর্ষে থাকা মেসির দলগত শিরোপা ৪৬টি। বার্সেলোনার হয়ে জিতেছেন ৩৫টি, পিএসজির হয়ে তিনটি, ইন্টার মায়ামির হয়ে দুটি ও ছয়টি শিরোপা জিতেছেন আর্জেন্টিনার হয়ে। এর বাইরে আছে আটটি ব্যালন ডি’অর, ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু, ফিফা বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল, কোপা আমেরিকা গোল্ডেন বল...। দলীয় ও ব্যক্তিগত ট্রফি বিচারে মেসিই ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল।
দ্বিতীয় পেলের শিরোপাসংখ্যা মেসির তুলনায় বেশ কম। মার্কা ২০২২ সালে পেলের মৃত্যুর পর প্রকাশ করা প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ক্যারিয়ারে ২৯টি শিরোপা জিতেছেন পেলে। তবে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির চেয়ে বেশি বিশ্বকাপ (তিনটি) কেউ জিততে পারেনি। পেলে যখন খেলতেন তখন ব্যালন ডি’অর শুধু ইউরোপিয়ানদের দেওয়া হতো। তবে ব্যালন ডি’অর যারা দেয়, সেই ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকী ২০১৫ তাদের এক বিশেষ সংস্করনে জানিয়েছিল, পেলে তাঁর ক্যারিয়ারে সাতবার ব্যালন ডি’অর পেতে পারতেন।
ছেলেদের সর্বকালের সেরা ১০ ফুটবলারের তালিকাউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ১০ ফ টবল র পর স খ য ন
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।