সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে সোমবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা-পুলিশ। তার বিরুদ্ধে এক নারীকে সাত মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডেমরা থানায় একটি নারী নির্যাতন মামলা হয়েছে বলে জানান ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান।

তিনি জানান, মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত কণ্ঠশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নোবেলের গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ্য আসার পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তার সাবেক স্ত্রী মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদ। মঙ্গলবার দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে সালসাবিল লিখেছেন, ‘আমি বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছি এবং আমি কারও বিরুদ্ধেই কোনো প্রকারের মামলা দায়ের করিনি।’

২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদকে বিয়ে করেন। পরে তিনি নোবেলের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন। পরে দুজনের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।

ডেমরা থানায় করা এক নারীর মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয় এবং নোবেলের সঙ্গে তার মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে যোগাযোগ হতো। গত বছরের ১২ নভেম্বর নোবেল ওই নারীর সঙ্গে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গিয়ে দেখা করেন। তারপর নোবেল তার ডেমরার বাসার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ওই নারীকে বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আরও ২/৩ জনের সহযোগিতায় নোবেলের বাসায় তাকে আটক রাখেন। ঘটনার সময় নোবেল ভিকটিমের মোবাইল ভেঙে ফেলেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারধর করেন। তারপর ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গতকাল ১৯ মে পর্যন্ত ভুক্তভোগীকে নোবেলের বাসায় আটক রাখেন। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই নারীকে নোবেলের মারধরের একটি ভাইরাল হয়, যার মাধ্যমে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে চিনতে পেরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে। পরে সোমবার রাত সাড়ে ৯টার ঘটিকায় ডেমরা থানা পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে।

দুই বছর আগেও নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সেবার প্রতারণার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। একটা অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন নোবেল। কিন্তু পরে আর তিনি সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। এ ঘটনায় ২০২৩ সালে নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর স লস ব ল ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

এবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন উমামা

ষড়যন্ত্র ও নোংরামির অভিযোগ এনে ‘বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম’ থেকে সরে যাওয়ার পর এবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ফেসবুকে প্রকাশিত একটি স্ট্যাটাসে তিনি ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। উমামার অভিযোগ, শহীদ ও আহত পরিবারের সেবা প্রদানে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশন তাদের দায়িত্বপালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

তিনি বলেন, “চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন ছিল ফাউন্ডেশনের প্রধান কর্তব্য, কিন্তু কীভাবে টাকা এসেছে, কীভাবে বিতরণ হয়েছে, কারা পেয়েছে এবং কতজন এখনো পাওনা আছে—এসব বিষয় স্পষ্ট নয়।”

উমামা আরো জানান, অর্ধেকের বেশি আহতই ফাউন্ডেশনের প্রথম ধাপের আর্থিক সহায়তা পায়নি। এছাড়া, এক বছর পেরিয়ে গেলেও ফাউন্ডেশন আহতদের তালিকা তৈরি করতে পারেনি এবং পুরো প্রক্রিয়াটির গোঁজামিল অবস্থা বিরাজ করছে।

এই অবস্থায় মঙ্গলবার ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ফাউন্ডেশনকে দ্রুত দায়িত্বশীল ও দক্ষ ব্যক্তিদের হাতে হস্তান্তর করে আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে।” 

গতকাল শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ভাঙচুর করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন। গতকাল সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই অফিস কক্ষে প্রথমে তালা লাগানো হয়। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হামলাকারীদের অভিযোগ, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে তিন থেকে চারবার ঘোরানো হয়েছে। এরপর গতকাল টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু গতকালও টাকা দেওয়া হয়নি।

এর আগে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ২৭ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান উমামা। এছাড়া, গত  ২৮ এপ্রিল উমামা জানিয়েছিলেন, নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ