বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম সম্মানজনক ‘বুকার পুরস্কার’ পেলেন ভারতীয় লেখক বানু মুশতাক। মঙ্গলবার (১৯ মে) ঘোষণা করা হয় ৭৭ বছর বয়সী এই বিজয়ীর নাম। খবর এনপিআরের। 

কান্নাড়া ভাষায় রচিত গল্পসমগ্র ‘হার্ট ল্যাম্প’ বইটির জন্য বিশেষ এই সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। প্রথমবারের মতো কোনো গল্পসংকলন আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেল। বইটি ইংরেজি ভাষায় অনূদিত করেছেন দিপা ভাস্তি।

এই গল্পসংকলনে ভারতীয় মুসলিম নারীদের দৈনন্দিন জীবনের টানাপড়েন, স্বামী, শাশুড়ি ও ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংঘাত এবং তাদের প্রতিরোধের গল্প উঠে এসেছে।

আরো পড়ুন:

অতিবৃষ্টিতে পানির নিচে ভারতের ‘সিলিকন ভ্যালি’, নিহত ৩

জন্মদিনে বিশালের বিয়ে: ১২ বছরের ছোট কনেকে নিয়ে চর্চা

বানু মুশতাক পেশায় আইনজীবী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী। তিনি বলেন, “আমার গল্পগুলো সমাজ, ধর্ম ও রাজনীতির দ্বারা নারীদের ওপর আরোপিত নিঃশর্ত আনুগত্যের দাবি এবং তার ফলে সৃষ্ট নিষ্ঠুরতার প্রতিচ্ছবি। আমার হৃদয়ই আমার গবেষণাক্ষেত্র।”

পুরস্কারপ্রাপ্তির পর বানু মুশতাক অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন, “যেন হাজারো জোনাকি ক্ষণিকের জন্য আকাশে সম্মিলিতভাবে তীব্র আলো ছড়াচ্ছে। এই বইটি আমার ভালোবাসার বার্তা—এই বিশ্বাস থেকে যে কোনো গল্প শুধুই ‘স্থানীয়’ নয়। আমার গ্রামের বটগাছের নিচে জন্ম নেওয়া গল্পও আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলো ফেলতে পারে।”

বানু মুশতাক কান্নাড়া ভাষায় লেখালেখি করেন। এই ভাষার লেখকদের মধ্যে তিনিই প্রথম বুকার পুরস্কার পেলেন। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার পাউন্ড (৬৭ হাজার ডলার), যা অনুবাদক দীপা ভাস্তির সঙ্গে তিনি সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।

বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ম্যাক্স পোর্টার ‘হার্ট ল্যাম্প’-কে ‘ইংরেজি পাঠকদের জন্য সত্যিকারের নতুন কিছু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিপ্লবাত্মক (র‍্যাডিক্যাল) অনুবাদ, যা ভাষার গতিপথ বদলে দেয়, ভিন্ন ভিন্ন ইংরেজির মধ্যে নতুন রূপ ও ছোঁয়া তৈরি করে। এটি আমাদের অনুবাদের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এবং বিস্তৃত করে।’

 

বিচারকমণ্ডলীর প্রধান ম্যাক্স পোর্টার বলেন, “হার্ট ল্যাম্প শুধু নিপীড়নের গল্প নয়, এতে রয়েছে সাহস, রসিকতা ও ব্যঙ্গ। মুসলিম জীবনের প্রতি পশ্চিমাদের একমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে গল্পগুলো চ্যালেঞ্জ করে।”

তিনি আরও বলেন, “অনুবাদটিও ছিল ব্যতিক্রমী। যেখানে অধিকাংশ অনুবাদ পাঠকের কাছে মূল ভাষা আড়াল করে রাখতে চায়, সেখানে দীপ্তা ভাস্তির অনুবাদ ছিল ‘দৃশ্যমান’- ভারতীয় অভিব্যক্তি ও কথার ভঙ্গি গল্পগুলোকে প্রাণবন্ত করেছে।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ক র প রস ক র ম শত ক অন ব দ

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?

মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।

কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। 

 

ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।

 

জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)। 

 

১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।

 

ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া। 

 

অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।

 

মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ। 

 

ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ