নাঈম-সাইফের ফিফটির দিনে বৃষ্টির বাধা
Published: 21st, May 2025 GMT
সকালে আকাশ ছিল রৌদ্রোজ্জ্বল। লাল বলের ক্রিকেটের জন্য আদর্শ আবহ। কিন্তু সময় যত গড়াতে থাকে, ততই আকাশের মন খারাপ হতে শুরু করে। দিনের শেষভাগে কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ, আর বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হয় নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ ও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের মধ্যকার দ্বিতীয় চারদিনের ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল। প্রথম দিন খেলা হয়েছে মাত্র ৫৭.
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ‘এ’ দলের শুরুটা ছিল দারুণ। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় প্রথম সেশন নির্বিঘ্নে পার করেন। তারা ২৭ ওভারে দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করান ১১৩ রান। এ সময় ফিফটি তুলে নেন নাঈম। এরপর ফিফটির পথে এগোচ্ছিলেন এনামুল।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানে পাঁচ দিনে বাংলাদেশের তিন টি-টোয়েন্টি
শেষটা জয়ে রাঙালো রাজস্থান, চেন্নাইও পেল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত
কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পরেই ছন্দপতন ঘটে। ফিরে এসেই দুই ওভারের ব্যবধানে আউট হন দুই সেট ব্যাটার। ৪৮ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এনামুল। পেসার ফলকসের স্লোয়ার ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েন। নাঈম ৮২ বলে ৭৬ রান করে আউট হন। স্পিনার লেনক্সের বলে মিড-অন থেকে দৌড়ে লং অনে গিয়ে ফক্সক্রফ্ট দারুণ এক ক্যাচ নেন। ১০টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ছিল নাঈমের ইনিংস।
এরপর সাইফ হাসান ও জাকির হাসান মিলে জুটি গড়েন। তাদের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। তবে জাকির বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। কিউইরা আক্রমণে আনে লেগ স্পিনার ম্যাট বোয়েলকে এবং প্রথম ওভারেই আসে সাফল্য। সুইপ করতে গিয়ে টপ এজে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাকির। তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান।
এরপর নতুন ব্যাটার অমিত হাসানকে সঙ্গে নিয়ে সাইফ হাসান দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। ফিফটি তুলে নেন সাইফ। তার ব্যাটিংয়ে মনে হচ্ছিল দল বড় সংগ্রহের দিকে এগোবে। কিন্তু তিনিও ভুল শটে উইকেট দিয়ে আসেন। ফলকসের বাউন্সার পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন।
এরপর খেলা বেশিদূর এগোয়নি। আট বল পরেই নামে বৃষ্টি, আর মাঠ ছাড়েন খেলোয়াড়রা। দিনের শেষে অমিত হাসান ১৬ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।