ঢাকার বাড্ডায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় মা-বাবা ও এক বোনের পর মারা গেল শিশু মিথিলা আক্তার (৭)। এ ঘটনায় দগ্ধ পাঁচ জনের মধ্যে চার জনই মারা গেলেন। 

শুক্রবার (২৩ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। 

এর আগে গত ২১ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিশুটিরা বাবা তোফাজ্জল হোসাইন। তার ৮০ শতাংশ দগ্ধ ছিল।  গত ১৮ মে বিকেল ৩টার দিকে বার্ন ইনস্টিটিউটের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মিথিলার বোন তানজিলা (৪)। এর ৭ ঘণ্টা পর মারা যান তার মা মানসুরা (২৪)।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, মিথিলার শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তার শ্বাসনালীও পুড়ে গিয়েছিল। এ ঘটনায় দগ্ধ মিথিলার আরেক বোন তানিশা ভর্তি আছে। তার শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

গত ১৬ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আফতাব নগরের দক্ষিণ আনন্দনগর এলাকার আনসার ক্যাম্প বাজারসংলগ্ন একটি তিন তলা ভবনের নিচতলায় বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে। এতে একই পরিবারের পাঁচ জন দগ্ধ হন।

তোফাজ্জল হোসাইনের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং গ্রামে। তিনি পেশায় একজন নির্মাণশ্রমিক এবং পরিবারসহ আফতাব নগরে বসবাস করেন। বাসায় না থাকায় আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বড় মেয়ে।

ওই দিন তোফাজ্জল হোসাইনে প্রতিবেশী মোহাম্মদ হোসেন শরীফ জানান, রান্না করার জন্য রাতে চুলায় আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ হয়। এতেই সবাই দগ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের আগুনে প্রায়ই দগ্ধ হচ্ছে মানুষ। তাদের অনেকে চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসছেন। কিন্তু সবাইকে বাঁচানো যাচ্ছে না বলে জানান চিকিৎসকরা। 

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিসাবে, শুধু ২০২৪ সালে আগুনে দগ্ধ হয়ে ১২ হাজার ৮১১ জন রোগী জরুরি বিভাগে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৬৮০ জন রোগী। ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারা যান ১০০২ জন। অর্থাৎ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ঢাকা/বুলবুল/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ