মারধর থেকে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে জামাতার ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত
Published: 24th, May 2025 GMT
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় এক ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে তাঁর শাশুড়ি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় ওই নারীর মেয়ে ও ভাগনে আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চাউলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত নারীর নাম বাহা বেশরা (৫৫)। তিনি চাউলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সামিয়েল মার্ডি (৪০)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় আহত হয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন তাঁর স্ত্রী ও বাহার মেয়ে মিনি হাসদা (৩৬) ও শ্যালক সুবল কিসকু (৩৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন মিনি হাসদা ও সামিয়েল মার্ডি দম্পতির মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে এক মাস ধরে মিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সামিয়েল মাদকাসক্ত ছিলেন। গতকাল রাতে সামিয়েল শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যেতে চান। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে মিনিকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। শাশুড়ি বাহা বেশরা ও শ্যালক সুবল কিসকু ঠেকাতে গেলে তাঁদের মারধর করেন সামিয়েল। এ সময় সামিয়েলের ছুরির আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বাহা। পরে আহত অবস্থায় মিনি ও সুবলকে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা।
বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল গফুর বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে জামাতার হাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ