করণ যেভাবে প্রভাবশালী প্রযোজক হয়ে উঠলেন
Published: 25th, May 2025 GMT
‘করণ জোহর সত্যিই তাঁর বাবার ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং উত্তরাধিকার হিসেবে ধর্মা প্রোডাকশনসকে দারুণ একটি জায়গায় দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন।’ কথাগুলো অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের।
পারিবারিক ব্যবসার দায়িত্ব নেওয়া বেশ দুরূহ একটি ব্যাপার। কিন্তু করণ জোহর সেই দুরূহ কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। ২৬ বছরের বেশি সময় হয়ে গেল করণ জোহর তাঁর বাবা যশ জোহর প্রতিষ্ঠিত ধর্মা প্রোডাকশনসের দায়িত্ব নিয়েছেন। করণ যখন দায়িত্ব নেন, তখন এটি মাঝারি মানের একটি প্রোডাকশন হাউস ছিল। আর এখন?
দায়িত্ব নেওয়ার পর
১৯৯৮ সালে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ সিনেমা দিয়ে পরিচালক হিসেবে বলিউডে যাত্রা শুরু করেন করণ। এর পর থেকে ধর্মা প্রোডাকশনসের ব্যানারে তিনি ৫০টি সিনেমা নির্মাণ করেছেন। মাঝখানে তিনি সিনেমা পরিচালনা থেকে দূরে ছিলেন। সাত বছরের বিরতির পর ২০২৩ সালে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ দিয়ে পরিচালনায় ফেরেন। এটি ছিল তাঁর ৫০তম পরিচালনা। এতে অভিনয় করেছেন আলিয়া ভাট। আলিয়া ভাটের উক্তি দিয়েই লেখা শুরু করেছি।
করণ জোহরের বাবার ছিল রপ্তানির ব্যবসা। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সে পেটা লোহা রপ্তানি করতেন। পাশাপাশি তিনি সিনেমা নির্মাণের ঝোঁক থেকে প্রতিষ্ঠা করেন ধর্মা প্রোডাকশনস। কিন্তু সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি খুব একটা উন্নতি করতে পারেননি। করণের মা হিরু জোহর বাবার এমন অবস্থা দেখে করণকে ভালো কোনো চাকরিতে মনোনিবেশ করার কথা বলতেন। তাঁর মা তাঁকে আর্টস ডিগ্রি অর্জন করার জন্য তাগাদা দিতেন। ফলে করণ কমার্স কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি কমার্সে মহারাষ্ট্রের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করেন। কিন্তু ওই যে তিনি তো হিন্দি সিনেমা দেখে বড় হয়েছেন, আবার বাবাও সিনেমা নিয়ে কাজ করেন! করণ শেষ পর্যন্ত সিনেমা নিয়েই কাজ করার জন্য মনস্থির করেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ পরিচালনা করেন এবং সিনেমাটি ‘বেস্ট পপুলার ফিল্ম’ ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। করণ সেই ধারা বজায় রাখেন। ২০০১ সালে তৈরি করেন আরেকটি ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘কাভি খুশি কাভি গম’। এটিও একাধিক ক্যাটাগারিতে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। ২০০৩ সালে ‘কাল হো না হো’ মুক্তি পাওয়ার মাসখানেক পর করণের বাবা যশ জোহর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ‘কাল হো না হো’ প্রযোজনা করেন করণ জোহর এবং পরিচালনা করেন নিখিল আদভানি। এটিও দুটি পুরস্কার এনে দেয়। বাবা মারা যাওয়ার পর অ্যাকাউন্ট বিভাগ সামলানোর জন্য স্কুলের বন্ধু অপূর্ব মেহতাকে ডেকে আনেন।
অপূর্ব তখন আদিত্য চোপড়ার যশ রাজ ফিল্মসের লন্ডন শাখায় কর্মরত। তখন থেকে অপূর্ব ধর্মা প্রোডাকশনসের সিইও এবং করণ জোহরের অন্যতম উপদেষ্টা। করণ যখন পরিচালনা ও অন্যান্য সৃজনশীলতা নিয়ে মেতে থাকতেন, তখন ব্যবসার দিকটা অপূর্বই সামলাতেন। এই দুজন মিলেই গড়ে তুলেছেন আজকের ধর্মা প্রোডাকশনস। যেটা এখন ফিল্ম ফ্যাক্টরি।
করণ জোহর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ড কশনস ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
অনিরাপদ ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে সতর্ক করবে গুগল ক্রোম
ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে গুগল। ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে প্রকাশিতব্য ক্রোম ব্রাউজারের ১৫৪তম সংস্করণে ডিফল্টভাবে সব ওয়েবসাইট নিরাপদ এইচটিটিপিএস (হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল সিকিউর) সংযোগে লোড হবে। কোনো ওয়েবসাইট যদি এখনো অনিরাপদ এইচটিটিপি (হাইপারটেক্সট ট্রান্সফার প্রোটোকল) প্রোটোকলে চলে, তবে সেই সাইটে প্রবেশের আগে ব্যবহারকারীর অনুমতি চাইবে ক্রোম।
গুগল ২০২১ সালে ‘এইচটিটিপিএস ফার্স্ট মোড’ চালু করে। ওই সুবিধা চালু থাকলে ব্যবহারকারীরা চাইলে ব্রাউজারে ‘অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস’ অপশনটি সক্রিয় করতে পারতেন। এতে ক্রোম প্রথমে নিরাপদ সংযোগে সাইটে প্রবেশের চেষ্টা করে। সংযোগ না পাওয়া গেলে সতর্কবার্তা দেখায়। এবার গুগল ফিচারটি ডিফল্টভাবে সক্রিয় করতে যাচ্ছে, যাতে ব্যবহারকারীরা অনিরাপদ সংযোগে কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ না করেন এবং মাঝপথে কেউ ডেটা চুরি বা বিকৃত করতে না পারে।
গুগলের ক্রোম নিরাপত্তা দল এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২৬ সালের অক্টোবর মাসে ক্রোম ১৫৪ সংস্করণ প্রকাশের সময় থেকে ডিফল্টভাবে অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস চালু করা হবে। এর ফলে কোনো ওয়েবসাইটে নিরাপদ সংযোগ না থাকলে প্রথমবার প্রবেশের আগে ক্রোম ব্যবহারকারীর অনুমতি চাইবে। গুগল আরও জানিয়েছে, অনিরাপদ সংযোগের সুযোগ নিয়ে আক্রমণকারীরা ব্রাউজারের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং ব্যবহারকারীর অজান্তে ক্ষতিকর কনটেন্ট, ম্যালওয়্যার বা বিভ্রান্তিকর তথ্য পাঠাতে পারে। এতে তথ্য চুরি বা সামাজিক প্রকৌশলভিত্তিক আক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
তবে ক্রোম একই ওয়েবসাইটে বারবার সতর্কবার্তা দেখাবে না। কোনো অনিরাপদ সাইট নিয়মিত ব্যবহার করলে সেই সাইটে আর সতর্কতা দেখানো হবে না। নতুন বা খুব কম দেখা ওয়েবসাইটে ঢোকার সময়ই কেবল সতর্কবার্তা দেখানো হবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে শুধু পাবলিক ওয়েবসাইটের জন্য এই সতর্কতা চালু রাখতে পারবেন অথবা পাবলিক ও ব্যক্তিগত দুই ধরনের সাইটের জন্যই সেটিংটি সক্রিয় করতে পারবেন। যদিও ব্যক্তিগত বা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যেও কিছু ঝুঁকি থাকে, তবু সেগুলো সাধারণত পাবলিক সাইটের তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এসব সাইট সাধারণত গৃহস্থালি ওয়াই–ফাই বা কোনো প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে সীমাবদ্ধ থাকে, যেখানে বাইরের আক্রমণের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম।
গুগল জানিয়েছে, এই পরিবর্তনে ব্যবহারকারীদের ঘন ঘন সতর্কবার্তা দেখার আশঙ্কা নেই। বর্তমানে ইন্টারনেটে ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ ওয়েবসাইট ইতিমধ্যে নিরাপদ এইচটিটিপিএস প্রোটোকল ব্যবহার করছে, যেখানে ২০১৫ সালে এই হার ছিল মাত্র ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ।
সব ব্যবহারকারীর জন্য সুবিধাটি চালুর আগে, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশিতব্য ক্রোমের ১৪৭তম সংস্করণে ‘এনহান্সড সেফ ব্রাউজিং’ সুবিধা ব্যবহারকারী এক শ কোটি মানুষের জন্য প্রকাশ্য ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস’ চালু করা হবে। গুগল বলেছে, ‘আমরা আশা করছি, এই পরিবর্তন অধিকাংশ ব্যবহারকারীর জন্য নির্বিঘ্ন হবে। তবে কেউ চাইলে ব্রাউজারের সেটিং থেকে “অলওয়েজ ইউজ সিকিউর কানেকশনস” বন্ধ করতে পারবেন। ওয়েব ডেভেলপার বা তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবীদের এখনই এই ফিচারটি সক্রিয় করে রাখা উচিত, যাতে আগেভাগেই অনিরাপদ ওয়েবসাইট শনাক্ত করা যায়।’
ইন্টারনেট নিরাপত্তা বাড়াতে গুগল আগেও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্রোমে ‘এইচটিটিপিএস আপগ্রেড’ নামের ফিচার যোগ করা হয়, যা ওয়েবপেজের অভ্যন্তরীণ এইচটিটিপি লিংক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপদ সংযোগে রূপান্তর করে।
সূত্র: ব্লিপিংকম্পিউটার ডটকম