‘করণ জোহর সত্যিই তাঁর বাবার ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন এবং উত্তরাধিকার হিসেবে ধর্মা প্রোডাকশনসকে দারুণ একটি জায়গায় দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন।’ কথাগুলো অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের।


পারিবারিক ব্যবসার দায়িত্ব নেওয়া বেশ দুরূহ একটি ব্যাপার। কিন্তু করণ জোহর সেই দুরূহ কাজ করতে সক্ষম হয়েছেন। ২৬ বছরের বেশি সময় হয়ে গেল করণ জোহর তাঁর বাবা যশ জোহর প্রতিষ্ঠিত ধর্মা প্রোডাকশনসের দায়িত্ব নিয়েছেন। করণ যখন দায়িত্ব নেন, তখন এটি মাঝারি মানের একটি প্রোডাকশন হাউস ছিল। আর এখন?

দায়িত্ব নেওয়ার পর
১৯৯৮ সালে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ সিনেমা দিয়ে পরিচালক হিসেবে বলিউডে যাত্রা শুরু করেন করণ। এর পর থেকে ধর্মা প্রোডাকশনসের ব্যানারে তিনি ৫০টি সিনেমা নির্মাণ করেছেন। মাঝখানে তিনি সিনেমা পরিচালনা থেকে দূরে ছিলেন। সাত বছরের বিরতির পর ২০২৩ সালে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’ দিয়ে পরিচালনায় ফেরেন। এটি ছিল তাঁর ৫০তম পরিচালনা। এতে অভিনয় করেছেন আলিয়া ভাট। আলিয়া ভাটের উক্তি দিয়েই লেখা শুরু করেছি।

করণ জোহরের বাবার ছিল রপ্তানির ব্যবসা। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সে পেটা লোহা রপ্তানি করতেন। পাশাপাশি তিনি সিনেমা নির্মাণের ঝোঁক থেকে প্রতিষ্ঠা করেন ধর্মা প্রোডাকশনস। কিন্তু সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি খুব একটা উন্নতি করতে পারেননি। করণের মা হিরু জোহর বাবার এমন অবস্থা দেখে করণকে ভালো কোনো চাকরিতে মনোনিবেশ করার কথা বলতেন। তাঁর মা তাঁকে আর্টস ডিগ্রি অর্জন করার জন্য তাগাদা দিতেন। ফলে করণ কমার্স কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি কমার্সে মহারাষ্ট্রের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করেন। কিন্তু ওই যে তিনি তো হিন্দি সিনেমা দেখে বড় হয়েছেন, আবার বাবাও সিনেমা নিয়ে কাজ করেন! করণ শেষ পর্যন্ত সিনেমা নিয়েই কাজ করার জন্য মনস্থির করেন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ পরিচালনা করেন এবং সিনেমাটি ‘বেস্ট পপুলার ফিল্ম’ ক্যাটাগরিতে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। করণ সেই ধারা বজায় রাখেন। ২০০১ সালে তৈরি করেন আরেকটি ব্লকবাস্টার সিনেমা ‘কাভি খুশি কাভি গম’। এটিও একাধিক ক্যাটাগারিতে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। ২০০৩ সালে ‘কাল হো না হো’ মুক্তি পাওয়ার মাসখানেক পর করণের বাবা যশ জোহর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ‘কাল হো না হো’ প্রযোজনা করেন করণ জোহর এবং পরিচালনা করেন নিখিল আদভানি। এটিও দুটি পুরস্কার এনে দেয়। বাবা মারা যাওয়ার পর অ্যাকাউন্ট বিভাগ সামলানোর জন্য স্কুলের বন্ধু অপূর্ব মেহতাকে ডেকে আনেন।

অপূর্ব তখন আদিত্য চোপড়ার যশ রাজ ফিল্মসের লন্ডন শাখায় কর্মরত। তখন থেকে অপূর্ব ধর্মা প্রোডাকশনসের সিইও এবং করণ জোহরের অন্যতম উপদেষ্টা। করণ যখন পরিচালনা ও অন্যান্য সৃজনশীলতা নিয়ে মেতে থাকতেন, তখন ব্যবসার দিকটা অপূর্বই সামলাতেন। এই দুজন মিলেই গড়ে তুলেছেন আজকের ধর্মা প্রোডাকশনস। যেটা এখন ফিল্ম ফ্যাক্টরি।

করণ জোহর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ড কশনস ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ