মামলা থেকে নাম বাদ দিতে ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

তারা হলেন, গোবিপ্রবি শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব ওমর শরীফ সরকার ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ফয়সাল জামান ফাহিম।

এছাড়া একই ঘটনায় সদস্য সচিব ও সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিববের আর্থিক অসঙ্গতি সম্পৃক্ততার বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে পদত্যাগ করেছেন যুগ্ম-আহ্বায়ক সোহেল রানা।

আরো পড়ুন:

চবিতে শিক্ষক-সাংবাদিকের ওপর হামলা: ৪ জনের শাস্তি, ৬ জনের মুক্তি

কুবিতে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিলেন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী

সোমবার (২৬ মে) কেন্দ্রীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য (দপ্তর সেল) মারজিউর রহমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত রবিবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলা থেকে আসামিদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য ৮ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ফয়সাল জামান ফাহিম।

তিনি বলেন, “গত ২৫ জানুয়ারি আমাদের ওপর হামলার একটি ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় আমি বাদী হয়ে মামলা করি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কয়েকজন ছাত্রনেতার সহযোগিতায় আমরা আলোচনা করে মামলা তুলে নিতে আগ্রহী হই এবং কিছু শর্ত দেই। শর্তগুলোর মধ্যে ছিল, আসামিদের কাছ থেকে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না এবং কোনো টাকাই আমার কাছে আসবে না।”

তিনি আরো বলেন, “এরপরও ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষার্থী আমার কাছে টাকার প্রস্তাব নিয়ে আসে এবং সমঝোতার অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। আমি তা প্রশাসনকে জানাই। পরে ২২ মে জানতে পারি, সমন্বয়ক ওমর শরীফ আসামিদের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা দাবি করেছেন।”

ফাহিম বলেন, “টাকার প্রস্তাব দেওয়ার সময় ঘটনাটি কেউ একজন অডিওতে রেকর্ড করে, যা পরে আমার কাছে আসে। সেই রেকর্ডে শরীফ বলছেন, মামলার বাদী ও ছাত্রদলের রাকিব ভাইকে টাকার অংশ দিতে হবে।”

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ওমর শরীফকে বলতে শোনা যায়, ‘মামলা তুলে নিতে হলে ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। এখানে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনকে ম্যানেজ করতে হবে, সবাইকে টাকা দিতে হবে। টাকা নগদ না দিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে দেন।”

এ ঘটনায় সোমবার (২৬ মে) কেন্দ্রীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পত্রে জানানো হয়েছে, সাংগঠনিক শৃংখলা পরিপস্থি স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে সদস্য সচিব ওমর শরীফ সরকার ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ফয়সাল জামান ফাহিমকে সাংগঠনিক বিধি অনুযায়ি সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।

পত্রে তাদের কেনো স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, সে মর্মে আগামী সাতদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।

পত্রে আরো বলা হয়েছে, সদস্য সচিবের অবর্তমানে সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিবের দায়িত্ব অর্পণ করা হলো।

৮ লাখ টাকা দাবি ও সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে ওমর শরীফ বলেন, “আমি এখন বাইরে রয়েছি। আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।”

সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়ে সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ফয়সাল জামান ফাহিমকে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে পদত্যাগ করা যুগ্ম-আহ্বায়ক সোহেল রানা বলেন, “আমি আমার পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।” আহ্বায়কের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবোবে তিনি বলেন, “এটা আহ্বায়কের কাছ থেকে জেনে নেবেন।”

আহ্বায়ক বেলাল হোসেন আরিয়ান বলেন, “সাংগঠনিক শৃংখলা পরিপস্থি স্বেচ্ছাচারিতা এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ কেন্দ্র থেকে সদস্য সচিব ওমর শরীফ ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক ফয়সাল জামান ফাহিমকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। স্থায়ী বহিষ্কার কেনো করা হবে না, সেজন্য সাতদিনের মধ্যে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।”

যুগ্ম-আহ্বায়ক সোহেল রানার পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি এখনো কোনো পদত্যাগপত্র পাইনি।”

গত ২৫ জানুয়ারি ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ও নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে আসেন। এসময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করতে গেলে তাকে ছাড়িতে আনতে যায় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সমন্বয়ক ওমর শরীফ, সাংবাদিক আতিক ফয়সালসহ কয়েকজন আহত হন।

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ য গ কর

এছাড়াও পড়ুন:

গভীর রাতে ঢাকায় ভূমিকম্প অনুভূত

ভারতের মণিপুর রাজ্যে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। এর প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়েছে। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ২৪মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ২১৭ কিলোমিটার দূরে ভারতের মনিপুর রাজ্যে। ভূমিকম্প নিয়ে অনেককে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিতে দেখা যায়। 

ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরিবিষয়ক ওয়েবসাইট ভলকানো ডিসকভারি জানিয়েছে, ভারতের মণিপুর রাজ্যের ইম্ফলের ৩৯ কিলোমিটার (২৪ মাইল) দূরে ৫ দশমিক ২ মাত্রায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ৪৭ কিলোমিটার (২৯ মাইল) অগভীর, যার কারণে কম্পন বিস্তৃত এলাকাজুড়ে জোরালোভাবে অনুভূত হয়।

ওয়েবসাইটটি আরও জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল অগভীর হওয়ায় একই মাত্রার গভীর ভূমিকম্পের চেয়ে ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি এর প্রভাব বেশি ছিল।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টা ২মিনিটে ৩ দশমিক ৪ মাত্রার একটি ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দূরে মায়ানমারের চিন হাখা অঞ্চলে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ