প্রস্তাবিত লাইসেন্স নীতিমালায় প্রাধান্য পাচ্ছে মোবাইল অপারেটরদের স্বার্থ
Published: 28th, May 2025 GMT
টেলিযোগাযোগ খাতের লাইসেন্সিং নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) যে খসড়া প্রস্তুত করেছে, তাতে বিদেশি কোম্পানি বিশেষ করে মোবাইল অপারেটরদের স্বার্থকে বড় করে দেখা হয়েছে। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং নীতিমালা: কোন পথে এনটিটিএন’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা করেন। আজ বুধবার টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্কস বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এ আয়োজন করে।
এনটিটিএন হলো ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক। এনটিটিএন অপারেটরদের কাজ ভূগর্ভস্থ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল দিয়ে ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবকাঠামোগত সেবা দেওয়া।
অনুষ্ঠানে এনটিটিএন প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান মইনুল হক সিদ্দিকী বলেন, নতুন খসড়া লাইসেন্সিং নীতিমালার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি হিসেবে বর্তমান টেলিযোগাযোগ কাঠামো প্রযুক্তিবান্ধব নয় বলা হলেও তা সঠিক নয়। প্রস্তাবিত নীতিমালায় অনেক ছোট টেলিকম ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হবে। অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়বে।
টেলিযোগাযোগ খাত বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ লাগবে। এটার উপর জোর দেওয়া যুক্তিসঙ্গত। এজন্য নতুন নীতিমালায় লাইসেন্সিংয়ের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এমনটা বলছে কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)। কিন্তু টেলিযোগাযোগ খাতের সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ইস্যু জড়িত, তাই এই খাতে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগ থাকা উচিত নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রয়োজন ছিল নীতিমালায় দেশীয় সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া।
ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ গভর্নেন্স অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক তার উপস্থাপনায় এনটিটিএনের ভবিষ্যতের শঙ্কা তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশজুড়ে ৬ এনটিটিএন অপারেটরের প্রায় দেড় লাখ কিলোমিটার ফাইবার ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। এখন যদি মোবাইল অপারেটররাও ফাইবার স্থাপনের সুযোগ পায় তাহলে এনটিটিএন খাত টিকবে না।
অনুষ্ঠানে দেশে স্টারলিংকের আগমনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বক্তারা বলেন, মোবাইল অপারেটররা যদি সরাসরি ইন্টারনেট সেবা দেওয়া শুরু করে, তবে টেলিযোগাযোগ খাতে বিপর্যয় তৈরি করবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫