ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান আলোচনায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নেতানিয়াহুর দপ্তর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসে গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।

মার্কিন সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে সন্দেহের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামরিক হামলার পক্ষে জোর দিচ্ছেন। তাঁর এই চেষ্টা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আলোচনার চেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে নিউইয়র্ক টাইমসের এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে একে ‘ভুয়া সংবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।

প্রতিবেদনে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন যখন ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন নেতানিয়াহু ইরানের প্রধান পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে হামলা চালানোর হুমকি দিচ্ছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখার সেরা উপায় কী হবে, তা নিয়ে মতবিরোধের কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে অন্তত একবার ফোনে উত্তেজনাপূর্ণ কথাবার্তা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওই সব বৈঠকেও উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। যদিও এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

ইসরায়েল এই আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের এই আলোচনাকে ‘গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ–ও বলেছে, দুই দেশ একটি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ইসরায়েল অবশ্য বরাবরই বলছে, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম রোধ করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সামরিক পদক্ষেপ।

এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে ওমান। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে মতপার্থক্য দূর করতে ওমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে ওমানের রাজধানী মাসকটে তিনটিসহ মোট পাঁচটি বৈঠক হয়েছে।

ইরান চায়, তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করা হোক। বিনিময়ে তারা কিছু পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে পারে। তবে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অধিকার বজায় থাকবে।

এই পরিস্থিতি এমন একসময়ে সৃষ্টি হয়েছে, যখন ইরান ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে পারমাণবিক আলোচনায় দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা চলছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায়। এখন দুই পক্ষই নতুন শর্তে তা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশসহ নিহত ৫

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের মধ্যাঞ্চলে এক বন্দুকধারীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও রয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট দিয়ে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস জানান, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘আঘাত’ করা হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মেয়র।

যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র পরবর্তী সময় বলেন, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার—কোনোটাই করতে পারছেন না।

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল ৩৪৫ পার্ক এভিনিউ এবং ইস্ট ফিফটি ওয়ান স্ট্রিটের চারপাশ এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারী নিহত হয়েছেন। যদিও তাঁর নাম-পরিচয় এখনো জানানো হয়নি।

এক্সে পোস্ট দিয়ে পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিসচ লিখেন, এ মুহূর্তে ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানান, একটি অফিস ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন পাশেই ছিলাম। তিনি (বন্দুকধারী) একের পর এক ফ্লোরে ঘুরছিলেন।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানান, ঘটনাটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির একটি কার্যালয়ে ঘটেছে।

ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স জড়ো করা হয়েছে। আকাশে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিক ও উৎসুক জনতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

ম্যানহাটানের ওই এলাকায় বেশকিছু পাঁচ তারকা হোটেল এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিউইয়র্কের রাস্তায় নীল সোনম কাপুর
  • ভুল এলিভেটর, যাকে খুশি গুলি, যেন কোনো শুটিং গেম
  • যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে তাহলে কি ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠছে
  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • নিউ ইয়র্কে গুলিতে নিহত রতনের কুলাউড়ার বাড়িতে শোকের ছায়া 
  • নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দিদারুলের কুলাউড়ার বাড়িতে শোকের ছায়া
  • তিনি ছিলেন আমাদের গর্ব—নিহত দিদারুলকে নিয়ে বললেন নিউইয়র্কের মেয়র
  • নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশসহ নিহত ৫