বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি এখন স্থল নিম্নচাপ আকারে ঢাকা ও এর আশপাশে আছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নিম্নচাপটির এ অবস্থানের কথা আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়। সূত্র জানান, গভীর নিম্নচাপ থেকে এটি এখন স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

আজ এটি লঘুচাপে পরিণত হবে। অর্থাৎ আজকের মধ্যেই এর শক্তি অনেকটাই কমে আসবে। তবে এর প্রভাবে আজ দিনভর বৃষ্টি হবে এবং আগামীকাল শনিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর এর মধ্যে জানিয়েছে, আজ এই নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের অন্তত পাঁচ বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মো.

শাহিনুল ইসলাম আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গভীর নিম্নচাপটি গতকাল রাতেই স্থল নিম্নচাপ আকারে সাতক্ষীরা ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নেয়। এর পর থেকে এটি স্থল নিম্নচাপ আকারে রূপ নেয়। এখন নিম্নচাপের কেন্দ্র ঢাকা ও এর আশপাশে আছে। এটি ধীরে ধীরে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে এগোতে থাকবে।

নিম্নচাপের প্রভাবে ব্যাপক বৃষ্টির মধ্যে গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় অতিবর্ষণের কারণে।

গতকাল বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় গতকাল থেকে প্রবল বর্ষণ চলছে। গতকাল নোয়াখালীর মাই থেকে উঠে ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। রাজধানীতেও প্রবল বৃষ্টি হয়। এ সময় রেকর্ড করা হয় ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে আজ ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারী বৃষ্টি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতিভারী বৃষ্টি বলা হয়।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপটি আজই দিনের পরের দিকে লঘুচাপে পরিণত হতে পারে। তবে এর প্রভাব রয়ে যাবে, অর্থাৎ বৃষ্টি হতেই থাকবে। এই নিম্নচাপের গতি এখন সিলেটমুখী।

গতকাল থেকে নিম্নচাপের প্রভাবে বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে শুরু করে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উঁচু জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভোলা-পটুয়াখালীসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ