প্র্যাডো দেখতে ছোটখাটো হাতির মতো। প্রাডোর শরীরের সামনের অংশ কালো। মাথার মাঝখান দিয়ে এবং পেছন ও পেটের পুরো অংশ সাদা লোমে আবৃত। ১১শ’ কেজি ওজনের শরীর নিয়ে প্রাডো যখন হাঁটে, তখন মাটিতে ধপ ধপ শব্দ হয়। তার রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অপরিচিত কাউকে দেখলেই প্র্যাডো অস্থির হয়ে যায়। লাফালাফি শুরু করে দেয়। 

এমনই একটি অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরু লালনপালন করছেন আইইউবি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ) এর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইবনুল রায়াত কাজী। তিনি বগুড়ার আরএসবি এগ্রো ফার্মের পরিচালকও। এবারের কোরবানিতে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান। 

প্র্যাডোর মালিক ইবনুল রায়াত কাজী জানালেন, শুধু প্রাডো নয়; দেশী, শাহীওয়াল, অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের কোরবানিযোগ্য ২৪টি গরু তার খামারে ছিল। সবগুলোর মধ্যে প্র্যাডোর শরীরই দীর্ঘদেহী। এক বছর আগে ৪ লাখ টাকা দিয়ে ষাড়টি কিনে তার খামারে এনেছেন। তখন ষাড়টির ৪ দাঁত ছিল। আর ওজন ছিল ৭০০ কেজির মতো। বর্তমানে এটি ৬ দাঁতের হয়ে গেছে। প্র্যাডো উচ্চতায় ৬ ফিট আর চওড়ায় ১০ ফিট। প্রতিদিন ষাঁড়টিকে দানাদার খাবার, পানিসহ ৬০ কেজি খাবার দিতে হয়।  

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে দেশি গরুর চাহিদা বেশি

৪০ মণের ‘যুবরাজ’কে ঘরের বাইরে নিতে হবে দেয়াল ভেঙে 

ষাড়টির নাম প্র্যাডো রাখার প্রসঙ্গে রায়াত বলেন, ‘‘প্র্যাডো গাড়ি তো আসলে অনেক বড়, লাক্সারি। আমার ষাঁড়টিও অনেক লম্বা। বড়। আমার কাছে লাক্সারি একটি ষাড়। তাই এর নাম শখ করে প্র্যাডো রেখেছি।’’ 

তিনি আরো জানান, তার ইচ্ছে ছিল উত্তরবঙ্গে যে গরুরমেলা হয়, সেখানে প্র্যাডোর প্রদর্শনী করানো। কিন্তু সেটা এবার হয়নি। ষাঁড়টি তিনি হাটে উঠাবেন না। তিনি অনলাইন প্লাটফর্ম বা ফেসবুক মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ষাঁড়টি বিক্রি করতে চান। অনেকে প্র্যাডোকে দেখে কেনার ইচ্ছা পোষণ করছেন কিন্তু দামদরে না মেলায় তিনি বিক্রি করছেন না।  প্র্যাডোর দাম তিনি ১০ লাখ টাকা চাচ্ছেন। তবে কেউ যদি নিতে চায় তাহলে আলোচনার মাধ্যমে কম-বেশি করতে রাজি আছেন তিনি।

পড়াশোনার পাশাপাশি গরুর খামার পরিচালনা করছেন, কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, আর গরুর খামারই কেন করলেন জানতে চাইলে রায়াত কাজী জানান, শখ থেকে এই খামার গড়ে তুলেছেন। করোনার পর ২০২১ সাল থেকে তিনি খামার দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় কোরবানির ঈদে তারা গরুর হাটে যেতে পারেননি। ২০২১ সালে পরবর্তী কোরবানির ঈদের জন্য গরু কিনে নিয়ে আসেন। তাদের বাড়িতে আগে থেকে তিনটি গরু ছিল। এই চারটি গরু একত্রে পালন করতে গিয়ে গরুগুলোর প্রতি মায়া জন্মে যায়। এরপর থেকে বিভিন্ন হাট ঘুরে ঘুরে ৪০টির মতো গরু খামারে নিয়ে আসেন। সেই থেকে শুরু।

তিনি আরো জানান, চলতি বছর তার খামারে কোরবানীযোগ্য ২৪টি গরু ছিল। এর মধ্যে ছয়টি বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে ১৮টি রয়েছে। এছাড়া গাভী গরু রয়েছে ১৫টি। 

রায়াত কাজী বলেন, ‘‘খামার পরিচালনা করতে গিয়ে আমার তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কারণ আমি যখন ঢাকায় থাকি, তখন সিসি টিভি ক্যামেরায় দেখি। এছাড়া আমার মা, ছোট ভাই রয়েছে। পাঁচজন লোক রয়েছেন খামার দেখাশোনা করার জন্য। গরুর যদি কোনো রোগবালাই হয়, তখন আমরা সদরের প্রাণিসম্পদ অফিসের কাছ থেকে সহযোগিতা নিই। পরামর্শ নিই। এভাবে পালন করছি।’’

ভবিষ্যতে গরুর খামার আরো বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বগুড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.

রায়হান জানান, সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৩০০ জন উদ্যোক্তা খামারি এবার ৭২ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করেছেন। উপজেলায় চাহিদা ৭০ হাজার পশু। কোরবানি ঘিরে বগুড়া সদর উপজেলায় এবার প্রায় ৪৮৩ কোটি টাকার লেনদেন হবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ক রব ন করছ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ