নিউমার্কেট এলাকায় এখনো জমে আছে পানি, ব্যবসায়ী ও পথচারীদের দুর্ভোগ
Published: 30th, May 2025 GMT
রাজধানী ঢাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা রাত ধরে চলেছে বৃষ্টি। আর আজ শুক্রবার বৃষ্টি হয়েছে থেমে থেমে। এই বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। আজ দুপুরের পর বিভিন্ন এলাকার সড়ক থেকে পানি নামলেও নিউমার্কেট এলাকার সড়কে এখনো পানি জমে আছে। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী, পথচারী ও সাধারণ মানুষ।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিন নিউমার্কেট এলাকায় দেখা যায়, মূল সড়ক ও সংলগ্ন গলিগুলোয় পানি জমে আছে। কোথাও কোথাও হাঁটুসমান পানি। রিকশা চললেও যাত্রীদের অনেক সময় ভ্যান বা হেঁটেই চলতে হচ্ছে। দোকানপাটের মধ্যেও পানি ঢুকেছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে পথচারী জোবায়েদা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে কোচিংয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু পানি আর কাদা মাড়িয়ে হাঁটা যায় না।’ কয়েক বছর ধরে নিউমার্কেট এলাকার পানি দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকে। সিটি করপোরেশন আদৌ কোনো কাজ করে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে।
ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (জোন-১) সাইফুল ইসলাম জয় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নিউমার্কেট এলাকার পানি পিলখানার ভেতর দিয়ে বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়ার কথা। কিন্তু ওই পথটি আপাতত বন্ধ। নতুন পথ তৈরির পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন বিকল্প পথ হয়ে পানি সরাতে একটু সময় লাগছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, নীলক্ষেত, আজিমপুর এলাকার জলাবদ্ধতা এখন নিয়মিত দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
নগর–পরিকল্পনাবিদেরা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য কার্যকর ড্রেনেজ–ব্যবস্থা না থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। ড্রেন নির্মাণের পাশাপাশি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে নগরবাসীকে প্রতি বর্ষায় এমন দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাইয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জাতীয় সনদ’ ঘোষণা করা হতে পারে: বদিউল আলম মজুমদার
আগামী জুলাই মাসে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তবে এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার মতবিনিময় শুরু হবে। আশা করছি, দ্বিতীয়বারের আলোচনায় আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। তার ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ হবে। এই সনদে সবাই স্বাক্ষর করবে। আমরা আশা করছি, এটা জুলাইয়ে হতে পারে। এটা আমার আকাঙ্ক্ষা। এটা কোনো সিদ্ধান্ত না।’
সুজন সম্পাদক বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা, যেদিন আবু সাঈদ প্রাণ দিয়েছিল, যাঁর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ জেগে উঠেছিল, সেদিন যদি আমরা এটা করতে পারি, এটা আবু সাঈদ, মুগ্ধ যাঁরা শহীদ তাঁদের রক্তের ঋণ আমরা শোধ করতে পারব। জাতি হিসেবে আমরা ঋণমুক্ত হতে পারব।’
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা শীর্ষক নাগরিক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার এ কথাগুলো বলেন। ‘সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার জনগোষ্ঠীই গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’ স্লোগানে রংপুর আরডিআরএস মিলনায়তনে এ সংলাপের আয়োজন করে সুজনের রংপুর মহানগর কমিটি। সভাপতিত্ব করেন মহানগর কমিটির সভাপতি খন্দকার খায়রুল আনাম।
একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হলে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে সেমিনারে উল্লেখ করেন বদিউল আলম মজুমদার। কেন বিপজ্জনক সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে বদিউল আলম বলেন, ‘ক্ষমতা কুক্ষিগত হওয়ার কতগুলো পন্থা আছে। একটা পন্থা হলো এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী–শাসিত সরকার। অর্থাৎ মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সব সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর অগাধ ক্ষমতা।’
একই ব্যক্তি আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকলে তাঁর পক্ষে স্বৈরাচারী হওয়া স্বাভাবিক বলে মত দেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘অতীতে যেটা ঘটেছে, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, সংসদ নেতা হয়েছেন। একই সঙ্গে দলীয় প্রধান হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হলো নির্বাহী বিভাগের প্রধান। সংসদ নেতা হলো আইনসভার প্রধান। একই ব্যক্তি যদি দুটো আসন অলংকৃত করেন, তাহলে ক্ষমতার বিভাজন নীতির বরখেলাপ।’
জুলাই প্রক্লেমেশন (জুলাই ঘোষণাপত্র) ও জুলাই সনদ এক কি না জানতে চাইলে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘জুলাই প্রক্লেমেশন হলো একটি ঐতিহাসিক ঘোষণা। গত জুলাইয়ের আন্দোলন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে তারা তুলে ধরবে। জাতীয় সনদ হবে একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব। রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে ও স্বাক্ষর করবে। তারা নির্ধারণ করবে কীভাবে এটা বাস্তবায়িত হবে। আমার মতে দুটো ভিন্ন জিনিস।’
বদিউল আলম মজুমদার মত দেন যেসব সংস্কারের ক্ষেত্রে ঐকমত্যের প্রয়োজন নেই, সেগুলো শুরু করতে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর যেসব সংস্কার দরকার, প্রার্থী নির্বাচনের জন্য যেসব প্রস্তুতি দরকার এখন থেকে শুরু করতে পারে। সরকারের সেসব সংস্কারের জন্য সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে না, সেসব সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের প্রয়োজন হবে না। সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করলে দ্রুততার সঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ সুগম হবে। তিনি আশা করেন, সবাই যার যার করণীয় তাই করবেন।