শেষের পথে সূচনা, হৃদয়ের ডাকে ঘরে ফিরলেন ডি মারিয়া
Published: 30th, May 2025 GMT
সময়টা ২০০৭ সাল। এক তরুণ রাইটব্যাক উইঙ্গার আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরের আলো-আঁধারিতে ফুটবল খেলে বেড়াতেন। তখনকার সেই ছেলেটিই আজ বিশ্বের অন্যতম নামী ফুটবল তারকা। আর ১৮ বছরের ইউরোপভিত্তিক ঝলমলে অধ্যায় শেষে তিনি ফিরেছেন ঠিক সেই পুরোনো ঠিকানায়—রোজারিও সেন্ট্রাল।
হ্যাঁ, কথা হচ্ছে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে নিয়ে। ৩৭ বছর বয়সে, ক্যারিয়ারের শেষভাগে এসেও তার ভেতরের ছেলেটি হারিয়ে যায়নি। বরং অনেক দূর থেকে ফিরে এসে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের গল্প এখনও শেষ হয়নি।’
ডি মারিয়ার এই ফিরে আসাটা শুধুই এক ক্লাব বদলের গল্প নয়। এটা তার শিকড়ে ফেরার, নিজের শৈশবকে আবার ছুঁয়ে দেখার প্রয়াস। রোজারিও সেন্ট্রালের যুব দলে পা রাখা সেই কিশোর আজ বিশ্বজয় করে ফিরেছেন একই মাঠে, যেখানে একদিন স্বপ্ন বুনেছিলেন।
আরো পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত দিনে ‘কুল-বিএসজেএ’ মিডিয়া কাপে ফুটবল আনন্দ
কনফারেন্স লিগ জিতে ইউরোপীয় ফুটবলে চেলসির অন্যরকম পূর্ণতা
তার ফিরে আসার ঘোষণায় রোজারিওর আকাশে যেন উৎসবের আলো। সমর্থকরা অপেক্ষায়—আবারও মাঠে দেখবেন তাদের 'হারানো রত্ন'কে।
২০০৭ সালে ডি মারিয়া ইউরোপে পা রাখেন পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাতে। সেখান থেকেই শুরু তার নতুন জীবন। এরপর রিয়াল মাদ্রিদে পাঁচ মৌসুম; যেখানে তিনি জিতেছেন লা লিগা, কোপা দেল রে ও চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো শিরোপা।
এরপর একের পর এক গন্তব্য— ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি, জুভেন্টাস। সব জায়গায় রেখে গেছেন নিজের স্বাক্ষর।
সবশেষ মৌসুমেও তিনি খেলেছেন বেনফিকায়। এবং এখানেই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী মাসে ক্লাব বিশ্বকাপে বেনফিকার জার্সিতেই মাঠে নামবেন তিনি। এরপরই একেবারে নিজের দেশে ফিরে আসবেন চূড়ান্তভাবে।
ডি মারিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও বার্তাটি যেন তার ফিরে আসার সবচেয়ে সুন্দর ভাষ্য। তিনি বলেন, “আমাদের গল্প এখনও লেখার অনেক পৃষ্ঠা বাকি। এটা কোনো বিদায় নয়, এটা হলো নতুন করে শুরু।” এই কয়েকটি বাক্যেই যেন ফুটে উঠেছে তার আবেগ, ভালোবাসা আর রক্তে মিশে থাকা রোজারিও।
ডি মারিয়ার ফেরা কেবল একটি ক্লাব পরিবর্তনের ঘটনা নয়, বরং এটি ফুটবলপ্রেমী আর্জেন্টিনার এক আবেগঘন মুহূর্ত। বিশ্বজয়ী একজন সৈনিক নিজের শেকড়ে ফিরেছেন, হাতে করে নিয়ে এসেছেন বিশ্বমঞ্চের অভিজ্ঞতা, সাফল্য আর ভালোবাসা।
রোজারিও সেন্ট্রালের সমর্থকেরা জানেন, তাদের মাঠে যে আবার খেলতে নামবে, সে একজন কিংবদন্তি—তাদেরই ঘরের ছেলে।
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্লাববদল যেন শুধুই একটি চুক্তি নয়, বরং নিজের অতীতকে আবার ছুঁয়ে দেখার এক স্মৃতির খোঁজ। যেখানে শেষ হতে যাচ্ছে এক জৌলুমপূর্ণ অধ্যায়, সেখানে শুরু হচ্ছে এক নতুন আবেগের অধ্যায়, ফুটবল যখন হৃদয়ের গল্প।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
ব্যক্তিগত সম্পদ ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম এবিসির এক সাংবাদিকের ওপর ভীষণ চটে যান। ওই সাংবাদিকের কারণে ‘অস্ট্রেলিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে’ বলে সতর্ক করেন তিনি। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে ওই সাংবাদিকের ব্যাপারে নালিশ করারও হুমকি দেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এবিসির সাংবাদিক জন লায়ন্সও তাঁকে প্রশ্ন করছিলেন। লায়ন্স এবিসিতে প্রচারিত ফোর কর্নারস অনুষ্ঠানের জন্য সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।
গতকাল লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কতটা ধনী হয়েছেন? তিনি আরও উল্লেখ করেন, ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে অবস্থান করা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না।’ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ট্রাম্প অর্গানাইজেশন নামে তাঁর যে পারিবারিক ব্যবসাটি আছে, সেটি এখন তাঁর সন্তানেরা পরিচালনা করেন।
ট্রাম্পের দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বেশির ভাগ ব্যবসায়িক চুক্তি হয়েছে।
লায়ন্সের সঙ্গে কথোপকথনে ট্রাম্প এটাও বলেছেন যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে ওই বৈঠক হতে পারে।এরপর লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’
এরপর লায়ন্সকে ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেন, তিনি (লায়ন্স) কোথা থেকে এসেছেন।
এরপর ট্রাম্প চটে গিয়ে বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে লায়ন্স ‘অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি’ করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলতে থাকেন, ‘আমার মতে, আপনি এ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার অনেক ক্ষতি করছেন। আর তারা আমার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। আপনি জানেন, আপনার নেতা (অ্যান্থনি আলবানিজ) শিগগিরই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। আমি তাঁকে আপনার ব্যাপারে বলব। আপনি খুব খারাপ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। আপনি আরও ভালোভাবে কথা বলুন।’
সাংবাদিক লায়ন্স ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা ঠিক কি না? ট্রাম্প বলেন, ‘আসলে আমি নই, আমার সন্তানেরা ব্যবসা চালাচ্ছে।’এরপর লায়ন্স আবারও কিছু বলতে গেলে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘চুপ করুন’।
গত জুনে কানাডায় জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ও আলবানিজের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তবে হঠাৎই তা বাতিল হয়ে যায়। এর পর থেকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের চেষ্টা করছেন আলবানিজ।
আরও পড়ুনট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগ্বিতণ্ডার পর কী বললেন স্টারমার ও আলবানিজ০১ মার্চ ২০২৫সম্প্রতি আলবানিজ বলেছেন, নিউইয়র্কে বিশ্বনেতাদের সম্মেলন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানকালে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর দেখা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে আমাদের একে অপরের সঙ্গে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার রাতে তিনি একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ বিভিন্ন ফোরামে আমাদের দেখা হবে। এটা সম্মেলনের মৌসুম।’
ট্রাম্পের সঙ্গে আলবানিজের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে পেন্টাগনের অকাস পারমাণবিক সাবমেরিন চুক্তি এবং প্রতিরক্ষা খাতে আরও ব্যয় বাড়াতে ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে দাবি জানিয়েছেন, তা নিয়ে পর্যালোচনা।