লন্ডন-বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ; গ্রীষ্মের দলবদলের বাজারে যেন উত্তাপ ছড়াচ্ছে তিন দিক থেকেই। তবে সবার দৃষ্টি এখন দুই বিশেষ নামের দিকে, এমি মার্টিনেজ ও মার্কাস র‍্যাশফোর্ড।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, যিনি ২০২০ সালে আর্সেনাল ছাড়েন অ্যাস্টন ভিলার ডাকে সাড়া দিয়ে। আবার সেই পুরনো ‘গানার’ ঘরে ফিরতে পারেন, এমন জোরালো ইঙ্গিত দিচ্ছে ইংলিশ গণমাধ্যম। তিন বছর ধরে ভিলার হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা মার্টিনেজ এবার নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজছেন। আর সেটি যদি হয় পরিচিত লন্ডনের মাঠে, তবে আবেগ তো থাকবেই!

এদিকে, আর্সেনালের বর্তমান গোলরক্ষক দাভিদ রায়ার ওপর নজর রেখেছে রিয়াল মাদ্রিদ। যদি রায়া সত্যিই স্পেনে পাড়ি জমান। তবে তার বদলি হিসেবে পুরনো সৈনিক মার্টিনেজকে আবারও দলে ফেরাতে পারে মিকেল আর্তেতার শিষ্যরা।

আরো পড়ুন:

শেষের পথে সূচনা, হৃদয়ের ডাকে ঘরে ফিরলেন ডি মারিয়া

বৃষ্টিস্নাত দিনে ‘কুল-বিএসজেএ’ মিডিয়া কাপে ফুটবল আনন্দ

আর্সেনালের ট্রান্সফার পরিকল্পনায় আছে আরও বড় চমক। জার্মান উইঙ্গার লেরয় সানেকে ফ্রি ট্রান্সফারে দলে ভেড়াতে চায় তারা। বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে এই রাইট ব্যাকের। ফলে গ্রীষ্মে তার ক্লাব পরিবর্তন নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে।

স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ এখন ভবিষ্যতের দল গড়তে মনোযোগী। তাদের নজরে উঠেছে লেভারকুজেনের প্রতিভাবান জার্মান মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান ভির্টজ। কোচ জাভি আলোনসোর আগ্রহে রিয়ালের স্কাউটরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে লিভারপুলও ভির্টজকে পেতে তৎপর। ফলে শেষ হাসি কে হাসে তা সময়ই বলবে।

অন্যদিকে, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা যেন নাটকীয় চমক তৈরি করতে চায়। ইংলিশ তারকা মার্কাস র‍্যাশফোর্ডের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে কাতালান ক্লাবটি। গুঞ্জন বলছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন কোচ রুবেন আমোরিমের পরিকল্পনায় নিজেকে না দেখতে পেয়ে স্পেনের দিকে ঝুঁকছেন এই ফরোয়ার্ড। আর যদি বার্সার সঙ্গে র‍্যাশফোর্ডের নতুন অধ্যায় শুরু হয়, তবে তা হবে দলবদলের জগতে বড় এক আলোচনার বিষয়।

এদিকে, চেলসিও বসে নেই। কনফারেন্স লিগ জয়ের আত্মবিশ্বাসে এবার তারা নজর দিয়েছে তরুণ ইংলিশ স্ট্রাইকার লিয়াম ডিলাপের দিকে। ইপসউইচ টাউনে দুর্দান্ত সময় কাটানোর পর, সাবেক ম্যানসিটি ফুটবলারকে স্কোয়াডে নিতে ব্লুজদের খরচ করতে হতে পারে প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ইউরো।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ