চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাব চত্বরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশে হামলাকে ভিন্নমত ও চিন্তা দমনের লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেছেন ৩২ নাগরিক। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন নাগরিকেরা।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নামে মব সৃষ্টি করে হামলা করা হয়েছে। এতে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত আছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন মতপ্রকাশ চর্চা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে, তা নস্যাতেই পরিকল্পিত ও কাপুরুষোচিত ফ্যাসিবাদী এই আক্রমণ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে ৩২ বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, ‘আমরা জেনেছি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার ত্রুটিপূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর যদি এটিকে সঠিক মনে না হয়, তবে তাদের আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে “শাহবাগবিরোধী ঐক্য” নামে উচ্ছৃঙ্খল মব সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।  বাস্তবে “শাহবাগবিরোধী ঐক্য” নামের ব্যানারের আড়ালে একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র এই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে ইতিমধ্যে প্রতীয়মান হয়েছে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার, ভিন্নমত, চিন্তা ও কথা বলার অধিকার এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য—বিবৃতিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীম, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুবাদক জি এইচ হাবীব, আর রাজী, সায়মা আলম, মুনমুন নেছা, জিহান করিম, সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ মুনির, কবি ঋষিন দস্তিদার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য, স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতনের সমন্বয়কারী ধ্রুব জ্যোতি হোড়, কবি ও লেখক সৈকত দে, নিপীড়নবিরোধী আইনজীবী মঞ্চের আহ্বায়ক ভুলন ভৌমিক, শিক্ষক জুলেখা আক্তার, গবেষক ঈশিতা দস্তিদার প্রমুখ।

যা ঘটেছিল সেদিন

গত বুধবার নগরের জামালখানের চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’–এর ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে।

হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীসহ দুজনকে পেছন থেকে লাথি মারছেন এক ব্যক্তি। যিনি লাথি মেরেছেন, তাঁর নাম আকাশ চৌধুরী। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় নগরের লাভলেন এলাকায় মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের পক্ষ বলা হয়, হামলায়  ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা জড়িত।

যদিও ঘটনাস্থলে শিবিরের কেউ ছিলেন না বলে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার শিবিরের সভাপতি মো.

তানজীর হোসেন ও সেক্রেটারি মুমিনুল হক। শিবিরের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, আকাশ চৌধুরী বর্তমানে শিবিরের দায়িত্বশীল কোনো পদে নেই। শিবিরের কোনো কর্মী এ ধরনের কাজে জড়িত নন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল 

বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”

গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।

তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • যে ১০ কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বেশি ঝগড়া হয়
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট 
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড