ছাত্র জোটের সমাবেশে হামলা ভিন্নমত ও চিন্তা দমনের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ
Published: 30th, May 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের প্রেসক্লাব চত্বরে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশে হামলাকে ভিন্নমত ও চিন্তা দমনের লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী আক্রমণ হিসেবে অভিহিত করেছেন ৩২ নাগরিক। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই কথা বলা হয়। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন নাগরিকেরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নামে মব সৃষ্টি করে হামলা করা হয়েছে। এতে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন গুরুতর আহত আছেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ভয়মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন মতপ্রকাশ চর্চা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত হয়েছে, তা নস্যাতেই পরিকল্পিত ও কাপুরুষোচিত ফ্যাসিবাদী এই আক্রমণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে ৩২ বিশিষ্ট নাগরিক বলেন, ‘আমরা জেনেছি, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দেওয়ার ত্রুটিপূর্ণ বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর যদি এটিকে সঠিক মনে না হয়, তবে তাদের আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু তার পরিবর্তে “শাহবাগবিরোধী ঐক্য” নামে উচ্ছৃঙ্খল মব সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বাস্তবে “শাহবাগবিরোধী ঐক্য” নামের ব্যানারের আড়ালে একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র এই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে ইতিমধ্যে প্রতীয়মান হয়েছে।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার, ভিন্নমত, চিন্তা ও কথা বলার অধিকার এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য—বিবৃতিতে এ কথা উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন লেখিকা ফেরদৌস আরা আলীম, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুবাদক জি এইচ হাবীব, আর রাজী, সায়মা আলম, মুনমুন নেছা, জিহান করিম, সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ মুনির, কবি ঋষিন দস্তিদার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ইন্দ্রানী ভট্টাচার্য, স্বপ্ননগর বিদ্যানিকেতনের সমন্বয়কারী ধ্রুব জ্যোতি হোড়, কবি ও লেখক সৈকত দে, নিপীড়নবিরোধী আইনজীবী মঞ্চের আহ্বায়ক ভুলন ভৌমিক, শিক্ষক জুলেখা আক্তার, গবেষক ঈশিতা দস্তিদার প্রমুখ।
যা ঘটেছিল সেদিন
গত বুধবার নগরের জামালখানের চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্র জোটের ব্যানার কেড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’–এর ব্যানারে এই হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে।
হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীসহ দুজনকে পেছন থেকে লাথি মারছেন এক ব্যক্তি। যিনি লাথি মেরেছেন, তাঁর নাম আকাশ চৌধুরী। এ নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় নগরের লাভলেন এলাকায় মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের পক্ষ বলা হয়, হামলায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা জড়িত।
যদিও ঘটনাস্থলে শিবিরের কেউ ছিলেন না বলে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার শিবিরের সভাপতি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক ছ ত র জ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে চলে যান’
প্রধান উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নেওয়ার কথা বলেছেন বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
তিনি বলেন, “১০ মাস লাগে না এ সংস্কার করতে, নির্বাচন দিতে। অথচ আপনারা ১০ মাস অতিক্রান্ত করেছেন। আমাদের নেতা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। এর মধ্যে নির্বাচন দেওয়া খুব একটা বড় সংস্কার বলে মনে করি না। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে চলে যাবেন। আমরা সবাই সহযোগিতা করবো।”
শনিবার (৩১ মে) ঢাকা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আইনজীবীদের ছেলে-মেয়েদর মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন ও উপস্থিত বক্তব্যেরও আয়োজন করা হয়।
জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকার চেয়েছিল জিয়াউর রহমানকে সকলের অন্তর থেকে মুছে ফেলতে। তারা চিন্তা করেছিল, জিয়ার নাম মুছে ফেলতে। কিন্তু মানুষের মন থেকে তাকে মুছে ফেলা যায় না।”
তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান মানুষের জীবনে, অন্তরে চিরদিন থাকবেন। তার পরিবার, পরিজনও সংগ্রাম, দুর্যোগ অতিক্রম করে বেঁচে আছেন। আল্লাহ সহায় থাকলে কেউ মেরে ফেলতে চাইলেও পারে না। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল, পারেনি। আগের চেয়ে এখন ভালো আছেন। তারেক রহমান বাপের স্মৃতি ধরে রেখেছেন। হাজার মাইল দূরে থেকে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করে রেখেছেন। গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছেন। আগেও করেছেন, সামনেও করবেন।”
ঢাকা আইনজীবী সমিতির (বার) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের, ট্রেজারার আব্দুর রশীদ মোল্লার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হেলাল উদ্দিন, বারের সাবেক সভাপতি মহসিন মিয়া, বারের সহ-সভাপতি শহীদুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নূরজাহান বেগম (বিউটি), লাইব্রেরি সম্পাদক নার্গিস পারভীন মুক্তি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক মো. ইলতুৎমিশ সওদাগর এ্যানি, ঢাকা বার ইউনিটের সদস্য সচিব নিহার হোসেন ফারুক, সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/এম/ইভা