দশ দিন আগে সাইকেল নিয়ে স্কুলের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় আবদুল্লাহ তামিম। এরপর আর ফেরেনি সে। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে কেঁদে ফিরছেন মা। বাবা নজরুল ইসলামও 
রয়েছেন উৎকণ্ঠায়।
তামিম রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাঁজুরিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় সরিষা প্রেমটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। নিখোঁজের ঘটনায় বাবা নজরুল ইসলাম ২১ মে পাংশা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 
২০ মে বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় তামিম। নির্দিষ্ট সময়ের পর স্কুলে খোঁজ নেয় স্বজনরা। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলে দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে বাবা-মায়ের। আশপাশে সব জায়গায় খোঁজ করা হয়। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেও পাওয়া যায়নি তাকে। একমাত্র ছেলেকে না পেয়ে উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন তার বাবা-মা। পথ চেয়ে প্রহর গুনছেন তারা। 
তামিমের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তামিম শান্ত ও নম্র স্বভাবের। নিয়মিত নামাজ পড়ে। তাকে ঘিরেই আমাদের জীবন। হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ায় আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। সে বাড়ি নেই– এটি ভাবতেই পারছি না।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘যে কোনো মূল্যে আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই। কেউ তার খোঁজ দিতে পারলে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।’
পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, নিখোঁজ তামিমের সন্ধান পেতে পুলিশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। দেশের সব থানায় তার ছবিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। পুলিশের চেষ্টায় কোনো ঘাটতি নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ