২১ জুন ঢাকায় বড় সমাবেশ করতে চায় জামায়াত
Published: 31st, May 2025 GMT
আগামী ২১ জুন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় সমাবেশ করতে চায় জামায়াতে ইসলামী। ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) এ কর্মসূচির বিষয়ে শনিবার চিঠি দিয়েছে তারা। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০২৩ সালের ১০ জুন এক দশক পর ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সমাবেশ করে জামায়াত। একই বছরের ২৮ অক্টোবর শেষ সময়ের মৌখিক অনুমতিতে মতিঝিলে সমাবেশ করে। সেদিন পুলিশের হামলায় বিএনপির মহাসমাবেশ পন্ড হয়ে যাওয়ার পর, আর ঢাকায় সমাবেশ করতে পারেনি জামায়াত।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে কোনঠাসা অবস্থায় থাকায় জামায়াতকে গত বছরের ১ আগস্ট নিষিদ্ধ করে শেখ হাসিনার সরকার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পলায়নে ফের প্রকাশ রাজনীতিতে ফিরেছে জামায়াত।
তবে ১০ মাসে, প্রায় সব জেলায় কর্মী সমাবেশ করলেও ঢাকায় বড় সমাবেশ করেনি জামায়াত। এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে ১৮ এপ্রিল পল্টন মোড়ে সমাবেশ করে। এছাড়া বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস এবং মে দিবসে একই স্থানে সমাবেশ করে। এটিএম আজহার মুক্তি পাওয়ার পর ২৮ মে শাহবাগে সংবর্ধনা দেয়।
৫ আগস্টের পর বিএনপি ঢাকায় দুটি বড় সমাবেশ করেছে। হেফাজত ইসলামও করেছে। নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিও সমাবেশ করেছে। জামায়াত নেতারা জানান, তারাও একটি বড় সমাবেশ করে অবস্থান জানান দেবেন। আগামীকাল রোববার আপিল বিভাগে দলে নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার বিষয়টিও নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছেন তারা।
এহসানুল মাহবুব জানিয়েছেন, ২১ জুন সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গণপূর্ত এবং পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা শিগগির দেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম সম ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
গুরুত্ব পেয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনীতি
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনীতি গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। এ সফরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ১০০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা, আগামী ৫ বছরে কমপক্ষে ১ লাখ শ্রমিক নিয়োগ, মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি এসেছে টোকিও থেকে। এ ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের বিষয়টিও দ্রুততম সময়ে সইয়ের অঙ্গীকার করেছে দু’দেশ।
স্বাধীনতার পর থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিক থেকে জাপানের অবস্থান শীর্ষে বলে সফরের বিশ্লেষণে মত দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির। তিনি সমকালকে বলেন, অর্থনৈতিকভাবে জাপান বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। জাপানের সঙ্গে ইপিএ বাংলাদেশকে সামনের দিনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করবে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের এ ধরনের চুক্তির প্রয়োজন হবে। জাপানের সঙ্গে এ ধরনের চুক্তি এ বছরের মধ্যে সই হলে সেটি একটি মাইলফলক হবে।
প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরকে একাধিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি এনে দিয়েছে বলে মনে করেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এই সফরের মাধ্যমে শুধু বিনিয়োগই নয়, বাংলাদেশি কর্মীদের জাপানে পাঠানোর জন্যও একটি বড় পথ উন্মুক্ত হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে জাপানে ১ লাখ বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। আগামীতে জাপান বাংলাদেশের জন্য বড় শ্রমবাজারে পরিণত হবে।
প্রেস সচিব জানান, জাপান সফরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প মাতারবাড়ী নিয়ে। মাতারবাড়ী প্রকল্পে জাপান বড় ধরনের বিনিয়োগ করবে। এ প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৃহৎ অংশ জাপান দেবে।
গত ৩০ মে টোকিওতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সাত সমঝোতা স্মারক সই করে দু’দেশ। বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (বিডা) ওয়ানস্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সিস্টেম, প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন, ব্যাটারিচালিত সাইকেলের জন্য কারখানা স্থাপন, তথ্য সুরক্ষার জন্য একটি পাইলট প্রকল্প চালু এবং বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বিএসইজেড) সঙ্গে ভূমি চুক্তিসহ সমঝোতা স্মারক সই হয়।
অর্থনীতির পাশাপাশি সফরে গুরুত্ব পেয়েছে ভূরাজনীতি ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। সফরে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তর-সংক্রান্ত চুক্তিতে বাংলাদেশ ও জাপান নীতিগতভাবে একমত হয়েছে এবং চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে উভয় পক্ষ। এ ছাড়া জাপানের অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্সের (ওএসএ) আওতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে পাঁচটি টহল জাহাজ দ্রুত সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কৌশলগত অংশীদার হিসেবে এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে একটি মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য তাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি
কূটনীতিকদের মতে, ড. ইউনূসের সফরটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্ব দিয়েছে টোকিও। প্রধান উপদেষ্টার সফরটি শুরুতে নিক্কেই ফোরামের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা ছিল। তবে এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে পিছপা হয়নি জাপান। আর গত ২৬ মে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিক্কেই ফোরামের বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে বৈঠকটি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সফরটি দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে আশা করেছে টোকিও।