ব্রাজিলের হারানো গৌরব ফেরাবেন আনচেলত্তি, বিশ্বাস ‘সাদা পেলে’র
Published: 1st, June 2025 GMT
কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কার্লো আনলচেত্তিকে ঘিরে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন ব্রাজিলিয়ানরা। তাঁদের অনেকেরই বিশ্বাস আনচেলত্তিই পারবেন ব্রাজিলের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে। অভিজ্ঞ এই কোচের হাত ধরে যেসব ব্রাজিলিয়ান নতুন দিনের সম্ভাবনা দেখছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন কিংবদন্তি জিকোও।
‘সাদা পেলে’খ্যাত সাবেক এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মনে করেন, ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের সঙ্গে আনচেলত্তির দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। পাশাপাশি ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের প্রতি আনচেলত্তির বিশেষ টানও আছে। এ বিষয়গুলো ব্রাজিল দলে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ কোচের কাজকে অনেক সহজ করে দিতে পারে।
বর্তমানে জে-লিগ ক্লাব কাশিমা অ্যান্টলার্সের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন ৭২ বছর বয়সী জিকো। বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে আলাপকালে সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার বলেছেন, ‘আনচেলত্তি ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলেছেন। তিনি বিভিন্ন দলে ব্রাজিলিয়ানদের নিয়ে কোচ হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এবং সব সময় ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি তাদের এমনভাবে খেলিয়েছেন, যাতে তারা তাকে সাহায্য করতে পারে।’
আরও পড়ুনকেমন হলো আনচেলত্তির ব্রাজিল দল২৮ মে ২০২৫আনচেলত্তির ফুটবলদর্শনও ব্রাজিলকে উত্তরণে সহায়তা করবে বলে বিশ্বাস জিকোর, ‘আনচেলত্তির ফুটবল সম্পর্কে গভীর বোঝাপড়া আছে, তিনি ফুটবলকে ভালোবাসেন। ফুটবলের প্রতি তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ব্রাজিলিয়ান মানসিকতার সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। এ কারণেই আমি বিশ্বাস করি, তিনি সফল হতে পারবেন। তিনি তার জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের বিকশিত হতে সাহায্য করতে পারবেন।’
`সাদা পেলে’ খ্যাাত জিকো.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।