কম টাকায় খাবার ও চিকিৎসা চান শ্রমজীবী হেলাল উদ্দিন
Published: 1st, June 2025 GMT
৩০ বছর আগে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় আসি। তখন থেকেই দিনমজুরি করি। গাবতলী বালুর ঘাটে ইট, বালু ও পাথর টানার কাজ। আট ওড়া (টুকরি) বালু বহন করলে কখনো ২০ টাকা, আবার কখনো ৪০ টাকা দেয়। একেকটি ওড়ায় ৪০ থেকে ৪৫ কেজি ধরে। শরীর ভালো থাকলে কোনো দিন এক হাজার টাকাও কামাই (আয়) করা যায়। মাঝেমধ্যে শরীর ভালো না থাকলে ৩০০–৪০০ টাকা আয় হয়। মাসে আয় হয় ১৩ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
ঢাকায় যখন প্রথম আসি তখন ১৫০ টাকার ঘর ভাড়ায় থাকতাম। এখন ঘরভাড়া দুই হাজার টাকা। সময়ের সঙ্গে খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি আয়ও বেড়েছে। কিন্তু জীবনের উন্নতি হয়নি। এখনো আগের মতোই বাজারে গেলে ইচ্ছেমতো সব কিনতে পারি না। বাজারে ৫০০ টাকা নিয়ে গেলে তেল, চাল ও ডাল কেনার পর আর কিছু কেনার সুযোগ থাকে না। এখন তো আধা কেজি গরুর মাংস কিনতে গেলেও ৩৫০ টাকা লাগে। একদিকে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে, অন্যদিকে বয়স বাড়ায় আগের মতো খাটতে পারি না।
কয়েক বছর আগেও ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনেছি। এখন মোটা চাল ৬২ টাকা কেজি। ঢাকায় একা থাকি। তাতেও নিজের থাকাখাওয়াসহ মাসে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বাড়িতে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা পাঠানোর চেষ্টা করি। বয়স এখন ৫০–এর কাছাকাছি। আগের মতো শরীরে জোর পাই না। অনেক ওজন বহন করতে হয়। প্রায়ই ঘাড় ও কোমরে ব্যথা হয়। তাই মাসে ২০ দিনের কমবেশি কাজ করতে পারি।
কয়েক মাস আগে পায়ে ব্যথা পেয়েছি। প্রায় তিন মাস বেকার ছিলাম। সরকারি হাসপাতালে গেলেও নিজের টাকায় বেশির ভাগ ওষুধ কিনতে হয়েছে। তাই আমাদের মতো গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য সরকার যদি বাজেটে কোনো সুবিধা রাখে, তাহলে খুব ভালো হয়।
ঢাকায় কোনো স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় টিসিবির পরিবার কার্ড পাইনি। সারা দিন মাল টানি বলে টিসিবির চাল ও অন্যান্য পণ্য কেনার লাইনে দাঁড়ানোর সময় পাই না। তাই আমাদের মতো শ্রমিকদের জন্য আলাদা কার্ডের ব্যবস্থা করলে কম টাকায় খাবার কিনে খেতে পারতাম।
আগেও কোনো সরকারের আমলে বাজেটে কোনো প্রত্যাশা ছিল না। এবারও নেই। শুধু একটাই আশা, আমরা যেন বাজারে গিয়ে কম দামে চাল–ডালসহ খাবার কিনতে পারি। আর হাসপাতালে গিয়ে কম দামে ওষুধ ও চিকিৎসা পাই।
আমি চাই, সরকার যেন আমাদের মতো দিনমজুরদের সুদ ছাড়া ঋণ বা ভাতা দেয়। তাহলে হয়তো গ্রামে একটা গরু কিনতাম, আর একটা মুদিদোকান দিতাম। তাহলে গ্রামে চলে গিয়ে পরিবারের নিয়ে একসঙ্গে থাকতে পারতাম।
হেলাল উদ্দিন, দিনমজুর, গাবতলী বালুর ঘাট, ঢাকা
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কারও ওপর আক্রমণ হলে যৌথভাবে জবাব দেবে পাকিস্তান ও সৌদি আরব
পাকিস্তান ও সৌদি আরব ‘কৌশলগত যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ সই করেছে। বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ চুক্তি সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রিয়াদের ইয়ামামা প্রাসাদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজ শরিফের বৈঠক হয়। সেখানে দুই নেতা চুক্তিতে সই করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ জোরদার করার লক্ষ্যে দুই দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও নিজেদের সুরক্ষিত করা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি অর্জনের জন্য উভয় দেশের অভিন্ন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে এই চুক্তিতে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসলামাবাদ ও রিয়াদের মধ্যে ‘প্রায় আট দশকের ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব...ভ্রাতৃত্ব ও ইসলামি সংহতির বন্ধন...অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ এবং ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ভিত্তিতে এ চুক্তি সই করা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলেছে, দু্ই পক্ষ ও তাদের প্রতিনিধিদল উভয় দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। একই সঙ্গে দুই পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এর আগে সৌদি আরব সফররত শাহবাজ শরিফ ইয়ামামা প্রাসাদে পৌঁছালে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সৌদি যুবরাজ। এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে সৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।