আইএফআইসি ব্যাংকের কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর শাখার ম্যানেজারসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রবিবার (১ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলা সদরের হাবিব কমপ্লেক্সের দোতলায় অবস্থিত ব্যাংকটির  উপ শাখায় ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়। দুপুরে ব্যাংকের ম্যানেজার সৌমিক জামান খানসহ অন্য ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠায়।

আরো পড়ুন:

নারীকে ‘লাথি মেরে’ বহিষ্কার সেই জামায়াতকর্মী গ্রেপ্তার

জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা

কিশোরগঞ্জের ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো.

নাজমুস সাকিব বলেন, ‍“খবর পেয়ে আমিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে কর্মকর্তারা অসুস্থ হন বলে ধারণা করা হচ্ছে।” 

তিনি বলেন, “প্রথমে ব্যাংকের ম্যানেজারসহ চারজন কর্মকর্তা এবং পরে দুইজন গার্ড অসুস্থ হন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।”

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, “এটি বাজিতপুর আইএফআইসি ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে চলছে। এজেন্ট ব্যাংকের লকারসহ সবকিছুই ঠিকঠাক রয়েছে। আমরা আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। কী কারণে এমনটি হয়েছে তা ব্যাংকের যারা অসুস্থ তারা সুস্থ হলে জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি ফুড পয়জনিং বা রুমের ভেতরে কোনো গ্যাসের কারণে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  ব্যাংকের ভেতরে কেমিক্যাল জাতীয় কিছুর তীব্র দুর্গন্ধ ছিল। যারা সেখানে যাচ্ছে, তাদেরই মাথা ঘুরছে।”

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা

আইএফআইসি গ্যারান্টেড শ্রীপুর টাউনশীপ গ্রীন জিরো কূপন বন্ড ইস্যুতে জালিয়াতির কারণে সালমান এফ রহমান ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এছাড়া সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে আজীবন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ ও আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টের সাবেক সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে সালমান এফ রহমানকে ১০০ কোটি টাকা, আহমেদ সায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা ও ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিংকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ৯৬৫তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের শনাক্ত করে সিআইবিতে রিপোর্ট করার নির্দেশ

বুধবার (৩০ জুলাই) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসি জানায়, ‘আইএফআইসি গ্যারান্টিড শ্রীপুর টাউনশিপ জিরো কুপন বন্ড’ শীর্ষক ১৫০০ কোটি টাকা অভিহিত মূল্যের ও ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের বন্ড ২০২৩ সালের ৪ জুন ৮৭১তম কমিশন সভায় অনুমোদিত হয়েছিল। ওই বছরের ১২ জুলাই সেটার সম্মতিপত্র ইস্যু করা হয়েছিল। ওই বন্ডটির ইস্যুয়ার ছিল শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড, যা ওই বছরের ২ মার্চ নিবন্ধিত একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। কোম্পানিটি নিবন্ধিত হওয়ার পরপরই ২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল ওই বন্ড ইস্যুর আবেদন করেছিল। ওই কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ছিল ৫০০ কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ছিল ৩৩৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে মাত্র ৪ দিনের ব্যবধানে ২৪৮ কোটি টাকার নগদ অর্থ ভূমি ক্রয় বা উন্নয়ন সংক্রান্ত কারণে উত্তোলন করা হয়েছিল, যেটি কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

এছাড়া ওই বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি, অ্যাডভাইজার ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড, ট্রাস্টি হিসেবে সন্ধানী লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড, নিরীক্ষক হিসেবে এমজে আবেদীন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দায়িত্ব পালন করেছে। আইএফআইসি ব্যাংক ওই বন্ড ইস্যু করেনি, মূলত রিয়েল এস্টেট কোম্পানি শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড (এসটিএল) ওই বন্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বন্ডের নাম হিসেবে ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীকে ধারণা দেয় যে, এ বন্ড আইএফআইসি ব্যাংক ইস্যু করেছে। কিন্তু আইএফআইসি ব্যাংক ছিল মূলত বন্ডটির জামিনদার (গ্যারান্টার)। এভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা হয়। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি কর্তৃক অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালিত হয়েছে এবং এর প্রতিবেদন কমিশনে জমা হয়েছে।

এ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমানকে ১০০ কোটি ও ব্যাংকের তৎকালীন ভাইস-চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে ৫০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার এবং পুঁজিবাজারে উভয়কে আজীবন অবাঞ্ছিত (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

একই সঙ্গে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার এবং তৎকালীন কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের তৎকালীন সিইও ইমরান আহমেদকে ৫ বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সব ধরনের কাজে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে অ্যানফোর্সমেন্ট কার্যক্রম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইসঙ্গে আইএফআইসি ব্যাংককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ব্যাংকের তৎকালীন মনোনীত পরিচালক এ আর এম নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং তৎকালীন স্বতন্ত্র পরিচালক সুধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ক্রেডিট রেটিং প্রদানকারী হিসেবে ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এছাড়া ওই বন্ড সংশ্লিষ্ট অনিয়ম ও বিধিবিধান ভঙ্গের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সালমান, শিবলী ও সায়ান পুঁজিবাজারে ‘আজীবন অবাঞ্ছিত’
  • সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা