কিশোরগঞ্জে হঠাৎ অসুস্থ ব্যাংকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী
Published: 1st, June 2025 GMT
আইএফআইসি ব্যাংকের কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর শাখার ম্যানেজারসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে বাজিতপুর উপজেলার ভাগলপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
রবিবার (১ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলা সদরের হাবিব কমপ্লেক্সের দোতলায় অবস্থিত ব্যাংকটির উপ শাখায় ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিনের মতো আজ সকালে ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়। দুপুরে ব্যাংকের ম্যানেজার সৌমিক জামান খানসহ অন্য ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠায়।
আরো পড়ুন:
নারীকে ‘লাথি মেরে’ বহিষ্কার সেই জামায়াতকর্মী গ্রেপ্তার
জিএম কাদেরসহ ২৮০ জনের বিরুদ্ধে বরিশালে মামলা
কিশোরগঞ্জের ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো.
তিনি বলেন, “প্রথমে ব্যাংকের ম্যানেজারসহ চারজন কর্মকর্তা এবং পরে দুইজন গার্ড অসুস্থ হন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।”
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, “এটি বাজিতপুর আইএফআইসি ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে চলছে। এজেন্ট ব্যাংকের লকারসহ সবকিছুই ঠিকঠাক রয়েছে। আমরা আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। কী কারণে এমনটি হয়েছে তা ব্যাংকের যারা অসুস্থ তারা সুস্থ হলে জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি ফুড পয়জনিং বা রুমের ভেতরে কোনো গ্যাসের কারণে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যাংকের ভেতরে কেমিক্যাল জাতীয় কিছুর তীব্র দুর্গন্ধ ছিল। যারা সেখানে যাচ্ছে, তাদেরই মাথা ঘুরছে।”
ঢাকা/রুমন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৪ সালে আইএফআইসি ব্যাংকের লোকসান ১২১ কোটি টাকা
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আইএফআইসি ব্যাংক ২০২৪ সালে ১২১ কোটি টাকা নিট লোকসান করেছে। প্রায় এক দশক ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর বিভিন্ন পরিদর্শনে উঠে এসেছে, সালমান এফ রহমান পদে থাকার সময় ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিভিন্ন কায়দায় অর্থ তুলে নেন। এর ফলে লোকসানে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকটি।
গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ২০২৪ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন হয়। এতে কোনো লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেবে না।
ব্যাংকটির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি ৬৩ পয়সা লোকসান হয়েছে। আগের বছর শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৫৬ পয়সা আয় হয়েছিল। সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৩ টাকা ৪৮ পয়সা, যা আগের বছর ৩ টাকা ৩৬ পয়সা ছিল। গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৮ টাকা ১৬ পয়সা।
আগামী ১১ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় হাইব্রিড পদ্ধতিতে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ জুলাই।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে ব্যাংকটি ৩০০ কোটি টাকা ও ২০২২ সালে ৩৪৪ কোটি টাকা নিট মুনাফা করে। গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭ হাজার ১৮২ কোটি টাকা বা ৩৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ইতিমধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে।
আইএফআইসি ব্যাংকে ২০১৫ সাল থেকে ব্যাংকটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছিলেন সালমান এফ রহমান। ব্যাংকটি থেকে ২০২০ সালে ৪৪০ কোটি টাকা নিলেও ২০২১ সালে কোনো টাকা নেননি। এরপর ২০২২ ও ২০২৩ সালে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি করে এই সময়ে প্রায় তিন হাজার টাকা তুলে নেন। এতে ব্যাংকটিতে ৬ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা আটকে পড়েছে। আরও বিভিন্ন নামে ব্যাংকটি থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সুবিধাভোগী তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২২ সালে আইএফআইসি ব্যাংক কয়েকটি নতুন প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে। এই অর্থের বড় অংশ দ্রুত নগদে তুলে নেওয়া হয়। সন্দেহ হওয়ায় ব্যাংকটির এসব ঋণ পরিদর্শনে একটি দলকে পাঠানো হয়। তবে সেই কর্মকর্তারা ব্যাংকটিতে পৌঁছামাত্র সালমান এফ রহমান গভর্নরকে ফোন করে চাপ দেন। পরপরই সেই দলটিকে কাজ না করে ফিরিয়ে আনা হয়। তখনই বুঝতে পারি, এই ঋণের সুবিধাভোগী বেক্সিমকো গ্রুপ। এর পর থেকে ব্যাংকটির ওপর তদারকি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিদায়ী বছর থেকে।’