টানা ভারী বর্ষণে বান্দরবানে ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়েছে। এ অবস্থায় জেলার লামা উপজেলার পাহাড়ের ঢালুতে অবস্থিত ঝুঁকিপূর্ণ ৬০টি রিসোর্ট সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (১ জুন) লামা উপজেলা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

মঈন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘‘ভূমিধসে প্রাণহানির ঝুঁকি এড়াতে মিরিঞ্জা ভ্যালিসহ উপজেলার ৬০টি রিসোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নির্দেশনায় রিসোর্টগুলো আবারো চালু করা হবে।’’

আরো পড়ুন:

বৃষ্টিতে লামা-সুয়ালক সড়কের ৩ স্থানে ভাঙন, যান চলাচল বন্ধ

হবিগঞ্জে নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, বাঁধে ধস

লামা উপজেলা পর্যটন শিল্প মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে রিসোর্টগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও রিসোর্ট মালিক সমিতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

বান্দরবান আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘গত ২৪ ঘণ্টায় (সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত) জেলায় ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতিভারি বৃষ্টিপাতের ফলে জেলায় ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে।’’

বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টিতে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাকখালী নদীর পানি বাড়লেও এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।’’

জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ‘‘দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলার সাতটি উপজেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও এনজিওদের সমন্বয়ে ‘দুর্যোগকালীন জরুরি সেবা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।’’

ঢাকা/চাই মং/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প হ ড় ধস ভ ম ধস উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কালীগঞ্জ কাঁপাচ্ছে বিশাল আকৃতির নিগ্রো!

গাজীপুরের কালীগঞ্জে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে একটি বিশাল আকৃতির ষাঁড়- নাম তার ‘নিগ্রো’। 

উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের খৈকড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের জুয়েল আকন্দ (৩২) শখের বশে লালন-পালন করা এই বিরল দৃষ্টিনন্দন ষাঁড়টির ওজন প্রায় ১১৫০ কেজি। 

জুয়েলের নিজ বাড়িতে ষাঁড়টি বিক্রির অপেক্ষায় থাকলেও এর চাহিদা ও কৌতূহল এখন ছড়িয়ে পড়েছে দূর-দূরান্তে।

আরো পড়ুন:

প্রস্তুত হাট, আসছে গরু-অপেক্ষা ক্রেতার

খুলনার জোড়াগেট হাটে হাসিল কমেছে ১ শতাংশ

জুয়েল আকন্দ জানান, প্রায় দেড় বছর আগে পাশের গ্রামের নাওয়ানের মোড় থেকে মাত্র দুই দাঁতের অবস্থায় কালো রঙের ষাঁড়টি কেনেন। এরপর থেকেই প্রাকৃতিক খাদ্য ও যত্নে তিনি গড়ে তুলেছেন ‘নিগ্রো’কে। কোনো স্টেরয়েড বা কৃত্রিম উপাদান ছাড়াই ঘাস, ভুসি, ছোলা, গাজর, কলাই, ও দানাদার খাবার খেয়ে বড় হয়েছে ষাঁড়টি। দিনে দুইবার গোসল আর পর্যাপ্ত চলাফেরার সুযোগে নিগ্রো এখন একেবারে স্বাস্থ্যবান এবং ঝলমলে চেহারার একটি ষাঁড়।

জুয়েল বলেন, “নিগ্রো নামটি আমি দেইনি, কালো জিভ আর কুচকুচে কালো গায়ের রঙ দেখে লোকজনই এ নাম দিয়েছিল। সেই নামেই পরিচিতি পেয়েছে।”

এখন প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন নিগ্রোকে একনজর দেখতে। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ করছেন ফেসবুক লাইভ। এমন উৎসাহ অনেকটাই মেলা মেলার পরিবেশ তৈরি করেছে জুয়েলের বাড়িতে।

মূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা, তবে স্থানীয় পশু ব্যবসায়ীদের মতে নিগ্রোর প্রকৃত মূল্য আরও বেশি হতে পারে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেকে দাম বলছেন, কেউ আবার বুকিং দিতে চাইছেন কিন্তু এখনো কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় জুয়েল ষাঁড়টি ছাড়েননি।

“শখের বসে লালন করেছি, তাই হেলায় ছাড়তে চাই না। তবে কেউ সঠিক মূল্য দিলে নিগ্রোর রশি তার হাতেই তুলে দেব।”-বলেন জুয়েল।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি শুধু একটি ষাঁড় নয়, এটি খৈকড়া গ্রামের গর্ব। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালিত এই ষাঁড় যেন সম্ভাবনার এক উজ্জ্বল প্রতীক।

জুয়েলের প্রতিবেশিরা জানান, এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে খুব ভালো অবস্থায় রয়েছে।

বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ ঘিরে প্রতিবছর যেমন লক্ষ লক্ষ পশু প্রস্তুত হয়, তেমনি বিরল আকৃতির পশুরাও হয়ে ওঠে আলোচনার বিষয়বস্তু। এবারের ঈদে কালীগঞ্জে নিগ্রো যেন সবার আগ্রহ ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। এটি বিক্রি হবে কি না, হবে তো কত দামে-তা সময়ই বলবে। তবে নিঃসন্দেহে, কালীগঞ্জের ঈদ উদযাপন নিগ্রোকে ঘিরেই এবার এক নতুন রঙে রাঙা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ