জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলা: কোনো পক্ষেরই মামলা নেয়নি পুলিশ
Published: 1st, June 2025 GMT
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনায় দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলাও নেয়নি পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে যান জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রংপুর জেলা সংগঠক আলমগীর রহমান নয়ন। তবে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে দাবি করেন তিনি। পরে অভিযোগপত্র দাখিল দেওয়া হয়। এতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ দলটির ১৮ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে এনসিপি নেতা আলমগীর রহমান নয়ন সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টির গুন্ডা বাহিনী আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে ও অতর্কিত হামলা চালায়। পরে ছড়ানো হয় তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’ তিনি জানান, এ ঘটনায় মামলা করদে গেলে ওসি ওপর মহলে কথা বলে ঘণ্টা দুয়েক গড়িমসি করেন। শেষে এসে বলেন, তারা অভিযোগটি নিয়েছেন। কিন্তু মামলা রেকর্ড হয়নি।
একইভাবে জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনায় শুক্রবার রাতে মহানগর কোতোয়ালি থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি ও এনসিপি নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তাতে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারটি দায়ের করেন জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সদস্যসচিব আরিফ আলী। সেটিও মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।
এ ব্যাপারে মহানগর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা হামলা করেছেন মর্মে এনসিপির পক্ষে আলমগীর রহমান নয়ন একটি অভিযোগ দিয়েছেন শনিবার রাতে। আমরা অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাতীয় পার্টির পক্ষে আরিফ আলীর দেওয়া এজাহার সম্পর্কেও একই ধরনের কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুরে আসেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। সন্ধ্যায় তিনি নগরীর সেনপাড়াস্থ বাসভবন ‘স্কাইভিউ’ এ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। জি এম কাদেরের রংপুরে অবস্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতাকর্মীরা। রাত ৯টার দিকে ওই বাসভবনে আকস্মিকভাবে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা ওই বাসার সামনে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প এম ক দ র র র রহম ন ব সভবন এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ