ভারতীয় এজেন্ডায় জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরানো হচ্ছে: জোনায়েদ সাকি
Published: 1st, June 2025 GMT
নিজেদের প্রয়োজনে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শেখ হাসিনা সরকার যে ফ্যাসিস্ট রোলার চালিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে দেশে ঐক্য গড়ে উঠেছে। এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভারতের এজেন্ডা– এমন কথা বলে জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে দেশটির পারপাস সার্ভ করা হচ্ছে। এ প্রচার ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে সাহায্য করবে।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাকি। গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভা আয়োজন করা হয়।
সাকি বলেন, ‘ভারতের কোনো মিডিয়া কিংবা কোনো রাজনীতিক বাংলাদেশে নির্বাচন চাইলেন, আর এখানে নির্বাচনের দাবি করা ভারতের ইচ্ছা অনুযায়ী হচ্ছে বলে মনে করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘যারা শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হতে সাহায্য করেছিলেন, এখন তারা নতুন বন্দোবস্ত করে বহাল তবিয়তে আছেন। ফ্যাসিজমের থেকে যাওয়া শিকড়ে পানি ঢেলে তারা আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘কোনো অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতারা এতটা বিতর্কিত হননি, যতটা এখন হচ্ছেন। তরুণরা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত হচ্ছেন, যা লজ্জার।’
সভায় এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করার মৌলিক কয়েকটি জায়গা আছে। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারেননি। রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ বা অজান্তে বিভক্ত করেছেন। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের রূপরেখা দিতে পারেননি।’
স্মরণসভায় বক্তৃতা করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব