Samakal:
2025-11-02@13:16:04 GMT

মাঠে না থেকেও ছিল ‘জানা’

Published: 2nd, June 2025 GMT

মাঠে না থেকেও ছিল ‘জানা’

ঠিক ১০ বছর আগে বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে বার্সেলোনার পতাকা নিয়ে দৌড়াচ্ছিল পাঁচ বছরের জানা। স্যুট পরা লুইস এনরিকে কাছেই দাঁড়িয়ে কন্যার কাণ্ড দেখে মিটিমিটি হেসেছিলেন। পরে মেয়েকে পাশে নিয়ে বার্সার লাল-নীল-হলুদ পতাকা মাঠে পুঁতে দিয়েছিলেন। সেদিন আসলে আধুনিক ফুটবলে বাবার শ্রেষ্ঠত্বের নিশান উড়িয়ে ছিল মেয়ে। ছোট্ট জানার মৃত্যুর ছয় বছর পর সেই জার্মানিতেই আবার তার পিতার শ্রেষ্ঠত্বের নিশান উড়ল। অসীমের পথে চলে যাওয়া জানা এবার পিতার কীর্তি দেখতে না পারলেও এনরিকে এবং পিএসজি সমর্থকরা ঠিকই স্মরণ করেছিলেন তাকে।

২০১৯ সালে মৃত্যুর কাছে হার মানে জানা। ৯ বছর বয়সী এই শিশু হাড়ের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করেছিল। এনরিকে তখন স্পেন জাতীয় দলের কোচ। সবকিছু ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন মেয়ের কাছে। পাঁচ মাস চিকিৎসার পর খালি হয়েছিল এনরিকের কোল। জীবন থেমে থাকে না। পাঁচ মাস স্বেচ্ছা একাকী বাস শেষে ফেরেন জীবনের স্রোতে। ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন আধুনিক ফুটবলের চ্যালেঞ্জিং কোচিংয়ে। শনিবার রাতে তাঁর কোচিং ক্যারিয়ারে যোগ হলো আরও একটি মূল্যবান পালক। শুধু সাক্ষী থাকতে পারল না জানা।

এনরিকের কাছে এই পালকের মাহাত্ম্য আলাদা। ১০ বছর আগে বার্সার ম্যানেজার হিসেবে জুভেন্টাসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার দিন পাশে ছিল মেয়ে। আবার ইউরোপ সেরা হলেন এনরিকে। এবার ইন্টার মিলানকে ৫ গোলে নাস্তানাবুদ করে পিএসজিকে প্রথমবারের মতো দিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বাদ। ফাইনালের আগে এনরিকে বলেছিলেন, ‘ফাইনালে আমার মেয়ে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকবে না; তবে ও আমার সঙ্গেই থাকবে, মানসিকভাবে থাকবে। এই জন্যই ম্যাচটা আমার কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’ কেন গুরুত্বপূর্ণ, সেটা পৃথিবীর প্রতিটি বাবারই জানা। বাবার হার দেখলে মেয়ে যে কষ্ট পাবে! তাই তো মেয়ের হাতে পাঁচ গোলের খেলনা তুলে দেওয়ার পর এনরিকের সে কী আনন্দ! 

পিএসজির প্রত্যেক খেলোয়াড়কে জড়িয়ে ধরে শিশুর মতো নাচলেন, হাসলেন। আর শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে সীমানার কাছে গিয়ে গ্যালারিতে থাকা একজনের কাছ থেকে একটি টিশার্ট আনেন। মাঠের মধ্যেই পরলেন জানা ফাউন্ডেশনের কালো সেই টিশার্ট। সেটির বুকের ওপর ১০ বছর আগের সেই ছবির মতো বাবা-মেয়ের পিএসজির পতাকা পোঁতার স্কেচ! সে সময় জানা যে শ্রেষ্ঠত্বের নিশান উড়িয়েছিল জার্মানির মাঠে, আবার উড়ল সেই নিশান। এবার তাতে যোগ হলো শুধু ফরাসি সৌরভ। 

সেই আবেগ সঞ্চারিত হলো পিএসজির সমর্থকদের মাঝেও। অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় ১০ বছর আগের সেই দৃশ্য ফুটিয়ে তুললেন পিএসজি সমর্থকরা। গ্যালারিতে ভেসে ওঠা বিশাল এক টিফোতে দেখা যায়, পিএসজির পতাকা মাঠে পুঁতছেন এনরিকে। পিএসজির আট নম্বর জার্সি পরে পাশে দাঁড়িয়ে জানা। এনরিকের চোখে পড়েছে সেই টিফো। মিক্সড জোনে সমর্থকদের এজন্য কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন তিনি, ‘খুব ভালো লেগেছে। সমর্থকরা আমার পরিবারের জন্য যে টিফো করেছে, সেটা খুবই আবেগপূর্ণ ব্যাপার। তবে আমি সবসময়ই মেয়ের কথা ভাবি। জানাকে মনে রাখার জন্য আমার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার প্রয়োজন নেই। ও সবসময় আমার সঙ্গে থাকে। বিশেষ করে ম্যাচ হেরে গেলে।’
 
প্রতিদিন সকালে অনুশীলন শুরুর আগে খালি পায়ে ঘাসের ওপর ১৫-২০ মিনিট হাঁটেন এনরিকে। তখনই দিনের পরিকল্পনাটা সেরে ফেলেন স্প্যানিশ এ কোচ। কয়েক বছর আগেও তাঁর সঙ্গে হাটত জানা। এখনও তাঁর সঙ্গে থাকে জানা। তবে হাঁটে না, থাকে বাবার বুকে সযতনে!

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসজ এনর ক র প এসজ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ