প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতে ৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়লেও সংস্কৃতি কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এ খাতে মোট বাজেটের এক শতাংশ বরাদ্দ দিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন সংস্কৃতি কর্মীরা। এছাড়া নতুন বাজেটে ওটিটি প্লাটফর্ম সেবায় ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এ নিয়েও উঠেছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে থিয়েটার আর্টিস্টস এসোসিয়েশন অব ঢাকা (টাড)। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রচার সম্পাদক অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকী জানিয়েছেন, এবারের বাজেট হতাশাজনক!

সংগঠনটির সভাপতি আজাদ আবুল কালাম স্বাক্ষরিত একটি লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন, ‘একটি জাতির আত্মপরিচয়, ইতিহাস ও ভবিষ্যত গঠনে সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অথচ বারবার দেখা যাচ্ছে, এই খাতটি অবহেলিত হচ্ছে। এবারের জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ আগের তুলনায় কিঞ্চিৎ বাড়ানো হলেও তা হতাশাজনক।’

বক্তব্যে আরও জানানো হয়, ‘নাট্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী, চিত্রশিল্পীসহ নানা মাধ্যমের সাংস্কৃতিক কর্মী বছরের পর বছর সীমিত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের জন্য টেকসই আর্থিক সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও গবেষণাভিত্তিক সংস্কৃতি চর্চার জন্য বাজেটে আমাদের দাবিকৃত বরাদ্দ থাকা অত্যন্ত জরুরি মনে করছি। আমরা সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, সংস্কৃতিকে বিলাসিতা নয়, বরং জাতি গঠনের একটি মৌলিক উপাদান হিসেবে বিবেচনা করুন। বাজেটে সংস্কৃতি খাতে উপযুক্ত ও কার্যকর বরাদ্দ নিশ্চিত করুন, যেন এই খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়।’

এদিকে এবারের বাজেটে ওটিটি প্লাটফর্ম সেবায় ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা প্রসঙ্গে নির্মাতা আশফাক নিপুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।

তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে সরাসরি ওটিটি সাবস্ক্রাইবার কতজন সেই ব্যাপারে কোন ধারণা, তথ্য হালনাগাদ কি আছে অর্থ উপদেষ্টা সাহেবের? দেশে ওটিটির ভোক্তাকূলের একটা বেশ বড় অংশ যে পাইরেসি করে আমাদের কন্টেন্ট দেখে সেটা কি উনারা জানেন? পাইরেসির বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতার গল্প কি তারা জানেন? বিশ্বে বর্ধণশীল যেকোনও শিল্পকে যেখানে কর রেয়াতের  সুযোগ দেয়া হয়, সেখানে মাত্র ৫ বছর হল যাত্রা শুরু করা এই ওটিটি বলয়ের ওপর বাড়তি ১০% সম্পূরক ট্যাক্সের সরাসরি প্রভাব পড়বে নির্মাতাদের বাজেটে  এবং গল্পে, প্রভাব পড়বে বৈধভাবে সাবস্ক্রিপশন নেয়ায়। পাইরেসির প্রকোপ আরও বাড়বে এবং দিনশেষে সবার ব্যবসা হবে সংকুচিত। পাইরেসির ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেওয়ার পরিবর্তে বরং পাইরেসিকেই উৎসাহী করবে এই বাড়তি ট্যাক্স বসানো। গোটা কাঠামোর সংস্কার না করে বাড়তি ট্যাক্স বসানোর ফলে মাঝেসাঝে যাও একটু আমের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল, সামনে হয়ত আম, ছালা দুটাই যাবে। দুর্ভাগ্যজনক!’

অন্যদিকে নিপুনের পোস্টটি শেয়ার করে নির্মাতা আদনান আল রাজীব লিখেছেন, ‘সরকারের উচিত সংস্কৃতি খাতকে আরও সমর্থন দেওয়া। উল্টো চাপিয়ে রাখা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। এ কারণে অনেক শিল্পী দেশত্যাগ করেন, বাইরে গিয়ে স্থায়ী হন।’  

সোমবার (২ জুন) রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে ২০২৫-২৬  অর্থবছরের বাজেটে এ প্রস্তাব রেখেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আশফ ক ন প ন বর দ দ

এছাড়াও পড়ুন:

কারও ওপর আক্রমণ হলে যৌথভাবে জবাব দেবে পাকিস্তান ও সৌদি আরব

পাকিস্তান ও সৌদি আরব ‘কৌশলগত যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি’ সই করেছে। বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এ চুক্তি সই করেন। চুক্তি অনুযায়ী, কোনো একটি দেশ আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে রিয়াদ ও ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রিয়াদের ইয়ামামা প্রাসাদে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজ শরিফের বৈঠক হয়। সেখানে দুই নেতা চুক্তিতে সই করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ জোরদার করার লক্ষ্যে দুই দেশের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও নিজেদের সুরক্ষিত করা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি অর্জনের জন্য উভয় দেশের অভিন্ন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে এই চুক্তিতে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইসলামাবাদ ও রিয়াদের মধ্যে ‘প্রায় আট দশকের ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব...ভ্রাতৃত্ব ও ইসলামি সংহতির বন্ধন...অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থ এবং ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার’ ভিত্তিতে এ চুক্তি সই করা হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বলেছে, দু্ই পক্ষ ও তাদের প্রতিনিধিদল উভয় দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও কৌশলগত সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। একই সঙ্গে দুই পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

এর আগে সৌদি আরব সফররত শাহবাজ শরিফ ইয়ামামা প্রাসাদে পৌঁছালে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সৌদি যুবরাজ। এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে সৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ