‘চোখের জলে ভেসে গেল আমাদের ঈদ আনন্দ’
Published: 3rd, June 2025 GMT
“অনেক দিন পর ভাই ও ভাতিজাদের সঙ্গে দেখা হতো। ইচ্ছে ছিল, একসঙ্গে ঈদের নামাজ পড়ে বাড়িতে ফিরে গরু কোরবানির। সবাই মিলে অনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নেওয়া হয়েছিল সব প্রস্তুাতি। মুহূর্তেই সেই আনন্দ বিষাদে পরিণত হলো। আমাদের ঈদ আনন্দ চোখের জলে ভেসে গেল।”
এভাবে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ঠিকাদার আমজাদ মন্ডলের ছোট ভাই মো.
আরো পড়ুন: ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, টাঙ্গাইলে নিহত ৩
আরো পড়ুন:
মাগুরায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে ট্রাক, আহত ২
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে মহাসড়কের করাতি পাড়া এলাকায় ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় আমজাদসহ তার দুই ছেলে মারা যান। এ ঘটনায় আহত হন নিহত আমজাদের স্ত্রী, ছেলের বউসহ তিনজন আহত হন।
আজিজুর রহমান বলেন, “চালকের অবসাবধানতার কারণে আমাদের পরিবার ধ্বংস হলো। আমরা তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।”
নিহত আমজাদের পরিবার জানায়, শেরপুর সদরের কামারচর গ্রামের মৃত মোনছের মন্ডলের ছেলে আমজাদ মন্ডল। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি ঢাকা থেকে শেরপুর যাচ্ছিলেন।
তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করাতিপাড়া এলাকায় আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। ফলে মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে আমজাদ মন্ডল (৬৫) এবং তার দুই ছেলে অতুল মন্ডল (১৪) ও রাহাত মন্ডল (২৬) মারা যান।
এ ঘটনায় আমজাদ মন্ডলের স্ত্রী মাকসুদা মন্ডল, রাহাত মন্ডলের স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও মাইক্রোবাসের চালক বরিশালের হযরত আলীর ছেলে নাজমুল হোসেন আহত হন। তাদের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার বিকেলে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
বাসাইল থানার ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, “লাশ উদ্ধারের পর গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
গোড়াই হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনিসুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের অসাবধনার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বিকেলে স্বজনদের কাছে তিনটি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মাইক্রোবাস ও ট্রাকটি জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক দ র ঘটন ন হত আহত ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ