মূল্যস্ফীতি কমলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুদহার কমানো হবে: গভর্নর
Published: 3rd, June 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, “আমাদের মূল্যস্ফীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এক্সচেঞ্জ রেট। বর্তমানে আমাদের এক্সচেঞ্জ রেট স্থিতিশীল আছে। এমন স্থিতিশীল পরিস্থিতি থাকলে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছি। মূল্যস্ফীতি কমলে জুলাই -সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুদহারও কমানো হবে।”
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড.
গভর্নর বলেছেন, “এক্সচেঞ্জ রেট কমাতে না পারলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ত। এটা এখন স্বস্তির মধ্যে আসছে। গত সাত-আট মাস ধরে এক্সচেঞ্জ রেট ১২২-১২৩ টাকার (প্রতি ডলারের বিপরীতে) মধ্যে স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরও তেমন পরিবর্তন হয়নি। এতে মূল্যস্ফীতি একটি ভালো জায়গায় যাচ্ছে।
তিনি বলেন, খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১৪ শতাংশ ছিল, এখন তা সাড়ে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি একটু বেশি আছে। এটি এখন ১০ শতাংশের নিচে আছে।
গভর্নর বলেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম কমছে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের দেশে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমরা এর সুফল পাব। এছাড়া, মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী জুলাই-সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, মূল্যস্ফীতি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আমরা মনিটরিং পলিসি টাইট করে রেখেছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসলে জুলাই-সেপ্টেম্বরের দিকে আমরা সুদের হার কমাতে পারব।
সোমবার (২ জুন) বিকেলে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা।
ঢাকা/এনএফ/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর র ম উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের তিন বোমার খবরে ভুতুড়ে নগর হয়ে গেল কোলন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার বোমা নিয়ে জার্মানির কোলন শহরে আতঙ্কের কারণে ২০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শহরটির প্রায় অর্ধেক অংশ গতকাল বুধবার হঠাৎই স্থবির ও জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে। অবশ্য আড়াই টন ওজনের তিনটি বোমা নিষ্ক্রিয় করার পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লোকজন ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।
গতকাল বুধবার সকালে কোলন শহরের ডয়ট্জ এলাকায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের তিনটি অবিস্ফোরিত বোমা পড়ে থাকার সংবাদ পাওয়া যায়। এসব বোমা নিষ্ক্রিয় করতে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে তাৎক্ষণিক নিজ নিজ বাসা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়।
পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা অবিরাম মাইকে এই ঘোষণা দিতে থাকলে শহরবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ১০ লাখের বেশি মানুষের কোলন শহরের ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী সময়ে এটিই সবচেয়ে বড় ধরনের সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা।
গতকাল বিকেল থেকেই বোমা নিষ্ক্রিয় করতে বিশেষজ্ঞরা অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করেন। বোমা পাওয়া কোলন শহরের ডয়ট্জ এলাকার চারপাশে প্রায় এক হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে ‘স্পারজোন’ বা চলাচল নিষিদ্ধ এলাকা তৈরি করা হয়। ওই এলাকায় বসবাসকারী সব বাসিন্দাকে তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে বন্ধু, আত্মীয় বা শহর কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে বলা হয়।
এসব অঞ্চলের মধ্যে ছিল কোলনের পুরোনো শহরাংশ, কয়েকটি স্কুল, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, ডে-কেয়ার সেন্টার এবং প্রায় ৬০টি হোটেল। দুপুরের পর শহরের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ওই এলাকায় ঘুরে ঘুরে সবাইকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করেন। এলাকা জনশূন্য হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট কাজ শুরু করে।
এ ধরনের বড় অভিযানের কারণে কোলনের রাইন নদীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সেতু ও দক্ষিণ দিকের ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে শহরের যোগাযোগব্যবস্থা অনেকটা থমকে যায়। এ ছাড়া জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা টেডি টেকলেব্রহানের নির্ধারিত শো–ও বাতিল করতে হয়।
শহর কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিনটি বোমা একসঙ্গে পাওয়ার কারণেই মানুষের জীবন রক্ষার তাগিদে অনেক লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
৮০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলেও জার্মানিতে মাটির নিচে এখনো বহু অবিস্ফোরিত বোমা রয়ে গেছে, বিশেষ করে বড় বড় শহরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রবাহিনী লাখ লাখ বোমা ফেলেছিল। অনেক বোমা তাৎক্ষণিকভাবে বিস্ফোরিত হয়নি এবং বছরের পর বছর মাটির নিচে রয়ে গেছে। নির্মাণ কাজ বা অন্য কারণে সেগুলো আবিষ্কৃত হলে সঙ্গে সঙ্গে এলাকা খালি করে নিরাপদভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়।