দুই মৌসুম পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলেছেন। ২০১৪ সালে সর্বশেষ ফাইনালে ওঠা দলটির সদস্যও ছিলেন। সেই বীরেন্দর শেবাগের মনে হচ্ছে, পাঞ্জাব কিংসের অধরা শিরোপার অপেক্ষা এবারও ফুরাবে না। বরং তাঁর সাবেক দলকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হবে বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ রাতে আইপিএলের ১৮তম আসরের ফাইনাল। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে খেলে আসা পাঞ্জাব ও বেঙ্গালুরু কখনো ট্রফির ছোঁয়া পায়নি। অবশেষে আজ এই দুই দলের একটির শিরোপার আক্ষেপ ঘুচতে চলেছে।

এবারের মৌসুমের লিগ পর্বে এই দুই দলই পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে ছিল। পয়েন্টও ছিল সমান ১৯ করে। শুধু নেট রান রেটে সামান্য এগিয়ে থাকায় পাঞ্জাব একে ও বেঙ্গালুরু দুইয়ে থেকে প্লে-অফ পর্বে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে পাঞ্জাবকে বিধ্বস্ত করে সরাসরি ফাইনালে উঠে যায় বেঙ্গালুরু। সেই ম্যাচ হেরে ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পাওয়া পাঞ্জাব দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুম্বাই ইন্ডিয়ানকে হারিয়ে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামা নিশ্চিত করে।

দুই দলের শক্তিমত্তা-দুর্বলতা বিচার করে তাই নির্দিষ্ট কাউকে খুব বেশি এগিয়ে বা পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। তারপরও সাবেক ক্রিকেটারদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, আজ কে জিততে পারে।

ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের আলোচনা অনুষ্ঠানে বীরেন্দর শেবাগকেও একই প্রশ্ন করা হয়েছিল। ভারতের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা সাবেক এই ওপেনারের উত্তর, ‘আমার মনে হয় আরসিবি (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু) জিতবে।’

কেন তিনি এমনটা মনে করছেন, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন শেবাগ, ‘আমি আমার পুরোনো ফর্মে ফিরে গেছি। কারণ, আমি দেখলাম, আমি যে দলকেই সমর্থন করি, সেই দলই হারে। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে গুজরাটের ম্যাচের (এলিমিনেটর) কথা বলেন কিংবা পাঞ্জাবের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুর প্রথম কোয়ালিফায়ার.

..আমি যাকেই সমর্থন দিয়েছি, তারাই হেরেছে।’

‘অপয়া’ শেবাগ পাঞ্জাবের ভালোর জন্যই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুম্বাইকে সমর্থন দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন, ‘পাঞ্জাবের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আমি মুম্বাইকে সমর্থন দিয়েছি এবং মুম্বাই হেরে গেছে। তাই আমি ফাইনালে আরসিবির জয়ের কথা বলছি। দেখা যাক, কী হয়...(হাসি)।’

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক গৌরব কাপুর এরপর শেবাগকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, কোন দল চ্যাম্পিয়ন হবে বলে আপনার মনে হয়। এখন আপনাকে প্রশ্ন করছি, ফাইনালে আপনি কোন দলকে সমর্থন করছেন?’ শেবাগ আবার বলেন, ‘আরসিবি।’

‘ভারতীয় দলের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এ রকম। যখনই আমি তাদের প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছি, তখন তারা হেরে গেছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

কোহলি কি জানতেন, বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে

রোম যখন পুড়ছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন—এ রকম একটা কথা প্রচলিত আছে।

প্রতীকী অর্থে এর সঙ্গে মিল রেখে কেউ কেউ বলতে পারেন—এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে যখন মানুষ পদদলিত হয়ে মারা যাচ্ছিলেন, বিরাট কোহলি তখন ভেতরে উৎসব করছিলেন!

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর রাজপথে কাল কী ঘটেছে, তা অনেকেরই জানা। আইপিএলের ১৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই শহরের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, যা কোহলিরও প্রথম আইপিএল শিরোপা।

এমন অর্জনের পর স্বাভাবিকভাবেই বেঙ্গালুরু সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা কাজ করেছে। তাই শিশু থেকে বুড়ো—সব বয়সের মানুষ চ্যাম্পিয়ন দলকে বরণ করে নিতে নেমে এসেছিলেন রাস্তায়। কিন্তু বেঙ্গালুরুবাসীর সেই আনন্দ বিষাদে রূপ নিয়েছে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে ১১ জন প্রাণ হারানোয় ও অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার ঘটনায়।

মর্মান্তিক এই ঘটনা কাল ভারতের সব সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ শিরোনাম হলেও ‘শো মাস্ট গো অনের’ মতো করে কোহলি-পতিদার-ক্রুনাল-সল্টরা যথারীতি নিজেদের মাঠে উৎসব চালিয়ে গেছেন। এ নিয়ে অনেকেই বেঙ্গালুরু মালিকপক্ষের ওপর দায় চাপাচ্ছেন, দোষ দিচ্ছেন কোহলিদেরও।

কিন্তু ভারতের সাবেক পেসার অতুল ওয়াসনের দাবি, স্টেডিয়ামের বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে—এই খবর কোহলির কানে তৎক্ষণাৎ পৌঁছায়নি। জানলে অবশ্যই উৎসব থামিয়ে দিতেন।

বার্তা সংস্থা পিটিআইকে অতুল বলেছেন, ‘আমি কোনোভাবেই এটা বিশ্বাস করি না যে, কোহলি ও তার দলের অন্যরা খেলোয়াড়েরা যদি জানত বাইরে মানুষ মারা যাচ্ছে, তাহলে তারা তখনই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থামিয়ে দিত।’

বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি নিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআইকেও নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অতুল ওয়াসন, ‘বাইরে কী ঘটছে, কোহলি তা তখনই জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসত। তাহলে এমন ঘটনা ঘটত না।’

আরও পড়ুনকোহলিদের উৎসবে ১১ জনের মৃত্যু: দায় কার—ফ্র্যাঞ্চাইজি না রাজ্য সরকারের৩ ঘণ্টা আগে

ভারতের হয়ে ৪ টেস্ট ও ৯ ওয়ানডে খেলা ওয়াসনের দাবি, শুধু রাজনীতিবিদ আর করপোরেট জগতের মানুষদের পক্ষেই হৃদয় বিদারক ঘটনার পরও অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, ‘রাজনীতিবিদ ও করপোরেটদের সম্পর্ক আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, তারা নির্মম এবং তাদের চামড়া মোটা। আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজিও তাই। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা এসবের পরোয়া করে না। কারণ, তাদের খরচের বিস্তারিত হিসাব ও রাজস্ব দেখাতে হয়। তারা হয়তো (বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে) জানত। এখনো যোগাযোগের ঘাটতি ছিল।’

কোহলি যে সত্যিই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়টি অনেক দেরিতে জেনেছেন, তা বোঝা গেছে ঘটনার অনেক পরে রাত ১১টার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে। ভারত ও বেঙ্গালুরুর কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান লিখেছেন, ‘ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বলার মতো অবস্থা নেই। খুবই ভয় পেয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ