বাংলাদেশের অর্থনীতি যখন বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে, তখন প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বৈষম্য আরও বাড়াতে পারে বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংগঠনটি বলেছে, বাজেটে প্রবৃদ্ধির চেয়ে সার্বিক উন্নয়ন এবং অবকাঠামোর চেয়ে মানুষকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দিকনির্দেশনা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

তিন বছর ধরে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ক্রমেই ভঙ্গুর হয়েছে উল্লেখ করে সিপিডি বলেছে, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে এবারের বাজেটে বৈষম্যের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা গত জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী। এ ছাড়া বাজেটে বৈষম্য কমানোর যে দর্শন ঠিক করা হয়েছে, সে অনুযায়ী নীতি ও বরাদ্দ রাখা হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বনানীর হোটেল লেকশোরে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৫-২৬ পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো তুলে ধরে সিপিডি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

আশাব্যঞ্জক প্রক্ষেপণ, অর্জন কঠিন

সিপিডি বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরের জন্য সামগ্রিকভাবে আশাব্যঞ্জক বিভিন্ন প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। তারা আশা করছে যে এসব আশাব্যঞ্জক প্রক্ষেপণগুলো বাস্তবায়িত হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে সেগুলো অর্জন করা কষ্টকর হবে।

বাজেটের আকার প্রসঙ্গে ফাহমিদা খাতুন বলেন, রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, যা একটি বড় লক্ষ্যমাত্রা। তাই বাজেটের আকারকে খুব ছোট বলা যাবে না।

প্রস্তাবিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় উল্লেখ করে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ১০ বছর ধরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সংস্কার, দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য। ব্যক্তিগত আয়করের সীমা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সংগতি রেখে নির্ধারণ না করলে সাধারণ মানুষ আরও চাপে পড়বে।

সিপিডি বাজেটের বেশ কিছু বিষয়কে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছে, আবার বেশ কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সিপিডি বলেছে, জিডিপির অনুপাতে বিনিয়োগ, বিশেষ করে কয়েক বছর ধরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে একধরনের স্থবিরতা চলছে। এটি একটি উদ্বেগের বিষয়। আগামী অর্থবছরেও বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা সামান্য বাড়ানো হয়েছে। তবে চলমান অর্থনৈতিক অবস্থায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে বিনিয়োগ কতখানি বাড়ানো যাবে, সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। গত কয়েক বছরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের বিপরীতে সরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ছিল। আগামী অর্থবছরে সেটি কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে।

আশা করেছিলাম বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি থাকবে, কিন্তু তা দেখা যায়নি। .

..বিনিয়োগ বাড়ার লক্ষণও দেখছি না। মোস্তাফিজুর রহমান সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডিউচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রায় সংশয়

ফাহমিদা খাতুন মূল প্রবন্ধে বলেন, বাজেটে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো কীভাবে দূর হবে, তা স্পষ্ট নয়। মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, তা অর্জনে কেবল মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ যথেষ্ট নয়, বাজার নিয়ন্ত্রণও জরুরি।

ঠিকাদারদের উৎসে কর কমানোয় রাজস্ব আদায় কমবে বলে সিপিডি জানিয়েছে। তবে ইন্টারনেট–সেবা ও বিদ্যুৎ কেনায় উৎসে কর কমানোয় গ্রাহক সুবিধা পেতে পারে। অন্যদিকে বাড়ি ভাড়ায় উৎসে কর বাড়ার প্রভাব ভাড়াটেদের ওপর পড়তে পারে। উন্নয়ন বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবারের উন্নয়ন বাজেটের আকার ছোট করা হয়েছে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে উন্নয়ন ব্যয় কমানো উদ্বেগজনক।

কালোটাকা সাদার সুযোগ অনৈতিক

সিপিডি বলেছে, কালোটাকা সাদা করার সুযোগকে সিপিডি নৈতিকভাবে সমর্থন করে না। বাজেটে পাচার করা অর্থ সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো খতিয়ান উপস্থাপন করা হয়নি। একদিকে কালোটাকা বৈধ করার প্রস্তাব, অন্যদিকে অর্থপাচার নিয়ে নীরবতা—এতে সরকারের ঘোষিত নীতির সঙ্গে বৈপরীত্য দেখা যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে ফাহমিদা খাতুন বলেন, জমি ও ফ্ল্যাট কেনায় কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ অব্যাহত রাখা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে। কালোটাকা সাদা করার বিষয়টি জুলাই আন্দোলনের চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। এটি বৈষম্য বাড়াবে ও নৈতিকতার ওপর আঘাত। এভাবে আবাসন খাতে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিলে আবাসনের দাম বেড়ে যায় এবং তা অনেকের নাগালের বাইরে চলে যায়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজেটের মূল দর্শন হওয়া উচিত ছিল, রাজস্ব নীতির মাধ্যমে আয় বৈষম্য কমানো। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনেও এটি প্রধান দাবি হিসেবে উঠে এসেছিল। কিন্তু বাজেটে কর ও অন্যান্য নীতির মাধ্যমে বৈষম্য কমানোর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘গত বছর জুলাই-আগস্টের আন্দোলন হয়েছিল কর্মসংস্থান ও বৈষম্য কমানোর প্রেক্ষাপটে। তাই আমরা আশা করেছিলাম বাজেটে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি থাকবে, কিন্তু তা দেখা যায়নি। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি মূলত বিনিয়োগ থেকে আসে, কিন্তু আমরা বিনিয়োগ বাড়ার লক্ষণ দেখছি না।’

প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন নিয়ে প্রশ্ন

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বললেও, বাজেটে ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। সিপিডি বলেছে, এ প্রবৃদ্ধিকে ভিত্তি ধরেই পরবর্তী দুই বছরের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে। তবে এসব প্রবৃদ্ধি কীভাবে অর্জন হবে, তা স্পষ্ট হয়নি বাজেটে। জিডিপি, ঋণ ও রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধির যে ভিত্তিগুলোর ওপর নির্ভর করে প্রাক্কলনগুলো করা হয়েছে, সেগুলোতে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। ফলে এসব প্রাক্কলনের বাস্তবায়ন একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলেই আশঙ্কা করছে সিপিডি।

তবে সিপিডি করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। যদিও প্রস্তাবিত করমুক্ত আয়সীমা কার্যকর হবে ২০২৬–২৭ অর্থবছরে। এ প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার তুলনায় এ বৃদ্ধি অনেক কম। এ ছাড়া বিষয়টি সামনের অর্থবছরে না হয়ে এর পরের দুই অর্থবছরে কার্যকর হবে। বিষয়টি বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তহবিল গঠনের সিদ্ধান্তকেও সাধুবাদ জানিয়েছে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে ফাহমিদা খাতুন বলেন, লাভ না হলেও টার্নওভার (লেনদেন) কর দিতে হবে—বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। ঢালাওভাবে টার্নওভার কর আরোপ না করে এটিকে যৌক্তিকভাবে করা প্রয়োজন, যাতে যাদের লাভ হবে, তারা লাভের ওপর কর দেয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ত ফ জ র রহম ন খ ত ন বল ন প রস ত ব ত প রব দ ধ র কর র স য গ প রসঙ গ লক ষ য র লক ষ ব ষয়ট র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

শেষে এসে ‘বিপদে’ ওয়াসা

একের পর এক জটিলতায় পড়ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পটি। অর্থ বরাদ্দের সংকট, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বকেয়া নিয়ে বিরোধ, কাজের ধীরগতি—সব মিলিয়ে প্রকল্পের নির্মাণকাজ বর্ধিত সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

প্রায় ৫ হাজার ২০৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ২২টি ওয়ার্ডের ২০ লাখ মানুষের জন্য আধুনিক পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৭০ শতাংশ। এই সময়ে এসে নানা জটিলতায় ‘বিপদে’ পড়েছে ওয়াসা।

‘চট্টগ্রাম মহানগরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। এরপর প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে। মেয়াদ বেড়েছে তিন দফা। ২০২৩ সালের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি।

বর্তমানে অর্থ বরাদ্দের সংকট নিয়ে বিপাকে আছে ওয়াসা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্থাটি চেয়েছিল ১ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ৭৪৪ কোটি। চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) দরকার ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা, কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ৬৭৬ কোটি টাকা। প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছিল। এরপর ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত করা কাজের টাকা আমরা পাইনি। আগেও একই কারণে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল, পরে আশ্বাস পেয়ে শুরু করেছিলাম। এবারও সেই পরিস্থিতি।প্রকল্প পরিচালক, এসএ ইঞ্জিনিয়ারিং

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই নির্বাচনী মৌসুমে প্রকল্প বরাদ্দে আরও অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। অর্থ না এলে প্রকল্পের কাজ স্থবির হয়ে পড়বে। ২০২৭ সালের শুরুতে এ প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কাজ শেষ না হলে এই পরিকল্পনা পিছিয়ে যাবে।

জানতে চাইলে ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, গত বছরই অর্থ বরাদ্দের অভাবে অনেক কাজ আটকে ছিল। এ বছরও চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পেলে সময়সীমা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে অর্থ বরাদ্দ নিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরে বরাদ্দের বিষয়ে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

বর্তমানে অর্থ বরাদ্দের সংকট নিয়ে বিপাকে আছে ওয়াসা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সংস্থাটি চেয়েছিল ১ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ৭৪৪ কোটি। চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) দরকার ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা, কিন্তু এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে ৬৭৬ কোটি টাকা।

প্রকল্পের নথিতে বলা হয়, দৈনিক ১০ কোটি লিটার পরিশোধনের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পয়োশোধনাগার, দৈনিক ৩০০ ঘনমিটার পরিশোধনের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সেপটিক ট্যাংকের বর্জ্য শোধনাগার, ২০০ কিলোমিটার পয়োনালা নির্মাণ করা হবে। এতে চট্টগ্রাম নগরের ২২টি ওয়ার্ডের ৩৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্রকল্পের আওতায় আসবে। আর উন্নত পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থার সুফল পাবেন ২০ লাখ মানুষ।

এখনো কাজ বন্ধ, অর্থের টানাপোড়েন

প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাইপলাইন স্থাপনের কাজ ১৫ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড উপঠিকাদারদের অর্থ পরিশোধ না করায় সাতটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখেছে।

হালিশহর এলাকায় পাইপ বসানোর কাজ করছে মেসার্স নূর এন্টারপ্রাইজ, এসএ ইঞ্জিনিয়ারিং, জাহান এন্টারপ্রাইজ, দেশ কন্ট্রাক্টরস অ্যান্ড ডেভেলপার লিমিটেড, ইনাস এন্টারপ্রাইজ, পোর্ট হারবার ইন্টারন্যাশনাল ও পাওয়ার বাংলা করপোরেশন। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, তাদের প্রায় ৪৬ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার তাইয়ং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় উপঠিকাদাররা দুটি শর্তে কাজ শুরুতে রাজি হয়েছেন—আগামী সোমবারের মধ্যে ৫০ শতাংশ বকেয়া পরিশোধ এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি অর্থ নিষ্পত্তি।

জানতে চাইলে এসএ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রকল্প পরিচালক আহাদুজ্জামান বাতেন বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছিল। এরপর ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত করা কাজের টাকা আমরা পাইনি। আগেও একই কারণে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল, পরে আশ্বাস পেয়ে শুরু করেছিলাম। এবারও সেই পরিস্থিতি।’

আহাদুজ্জামান জানান, ‘মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনায় আমরা দুটি শর্ত দিয়েছি—সোমবারের মধ্যে ৫০ শতাংশ বিল পরিশোধ এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি অর্থ নিষ্পত্তি। এ দুই শর্তে কাজ আবার শুরু করছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা দুই মাস আড়াই বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে
  • তিন মাসে গৃহকর আদায় কমেছে ৩০ কোটি টাকা
  • জুলাই–সেপ্টেম্বরে ঋণছাড়ে এগিয়ে বিশ্বব্যাংক ও রাশিয়া, কোনো অর্থ দেয়নি চীন
  • সরকারি কর্মসম্পাদন পরিবীক্ষণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে কমিটি 
  • ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ২৪৩ কোটি ডলার
  • শেষে এসে ‘বিপদে’ ওয়াসা