বিকেলটা গ্রীষ্মের। দূর প্রান্তের কোনো এক গ্রাম থেকে আসছে এলোমেলো হাওয়া, তাতে লেগেছে রোদের তাপ। এর মধ্যেই মেঠো পথের ধারে টিলার ওপরে একটি বাড়িতে ঢুকে দেখা গেল, একজন নারী ঘোরগ্রস্তের মতো বাঁশ-বেতের চাটাই বুনছেন।

আশপাশের আরও কয়েকটি বাড়িতে নারীরা এসব চাটাই বোনার কাজ করেন। এই আয়ে অনেকের সংসার চলে। টিলাগাঁও নামের গ্রামটিতে কবে এই ধারার শুরু হয়েছিল, তা এখন আর কেউ বলতে পারেন না। বংশপরম্পরায় কাজটি শিখেছেন তাঁরা। টিলাগাঁও গ্রামটি পড়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গুলেরহাওর এলাকায়।

টিলার ওপরের ওই বাড়িতে যিনি চাটাই বুনছিলেন, তাঁর নাম মরিয়ম বিবি। সম্প্রতি (২ মে) এক বিকেলে টিলাগাঁওয়ে গিয়ে তাঁর দেখা মেলে। মরিয়মের আশপাশে ছড়ানো আরও কিছু সম্পূর্ণ ও অর্ধেক কাজ করা চাটাই পড়ে আছে। একটি ঘরের ভেতর আরেক তরুণী চাটাই বুনছেন।

মরিয়ম বিবি বলেন, ‘১৭ বছর আগে জামাই (স্বামী) মারা গেছইন (গেছেন)। এরপর থাকি হুরুত্বারে পালার লাগি (বাচ্চাদের লালনপালন করতে) চাটাই বানাই। চাটাই বেচিয়া (বিক্রি করে) যা পাই, তা দিয়া কোনো রকম সংসার চলে।’

১৭ বছর আগে সেই যে তাঁর চাটাই বানানোর কাজ শুরু হয়েছিল, তা এখনো চলছে। মরিয়ম জানান, এ কাজের জন্য মহাজনের কাছ থেকে আগাম পুঁজি ধার নেন। তা দিয়ে বাঁশ কেনেন। ছয়টা বাঁশ কিনতে খরচ হয় ৪০০ টাকা। একটি বাঁশ দিয়ে এক থেকে দেড়টি চাটাই তৈরি করা যায়। এরপর মহাজনের কাছে ৭৫ টাকা দামে একটি চাটাই বিক্রি করেন। সপ্তাহে ২০-২৫টি চাটাই তৈরি করতে পারেন। সপ্তাহখানেক পর মহাজনের বাড়িতে এসব চাটাই নিয়ে যান। ৬টি বাঁশের চাটাই থেকে তাঁদের ২০০ টাকার মতো লাভ হয়। মরিয়ম বিবির মতো গ্রামের নাছিমা বেগম, নুরই বেগম, ছায়া বেগম, মজিদা বেগম, জয়নব বেগম, আনোয়ারা বেগমসহ আরও কয়েকজন নারী চাটাই বোনার কাজ করেন।

টিলাগাঁওয়ের কয়েকটি বাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বাড়িতেই কমবেশি চাটাই বোনার চিহ্ন। কোথাও আঁটি বেঁধে বাঁশ রাখা, কোথাও বেত কেটে রাখা হয়েছে। কোথাও চাটাই বুনে বিক্রির জন্য জমা করে রাখা হয়েছে।

নিজেদের তৈরি চাটাইয়ের সঙ্গে নারী কুটিরশিল্পীরা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের দুপুরে

ক্রাঞ্চি কিউকাম্বার সালাদ  
উপকরণ: শসা ৪টি, লবণ ১ চা চামচ, চিনি ১ চা চামচ, লাইট সয়া সস ২ টেবিল চামচ, ব্ল্যাক ভিনেগার ২ টেবিল চামচ, তিল ১ টেবিল চামচ, তিলের তেল ২ চা চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১ টেবিল চামচ, রসুন মিহি কুচি ৫/৬ কোয়া, পেঁয়াজকলি কুচি ২ টেবিল চামচ, ভেজিটেবল অয়েল ২ টেবিল চামচ। 
প্রস্তুত প্রণালি: খোসাসহ শসা হালকা থেঁতো করে ছোট ছোট টুকরা করে নিতে হবে। লবণ ও চিনি দিয়ে মাখিয়ে আধা ঘণ্টা ফ্রিজে রাখতে হবে। শসা থেকে যে পানি বের হবে সেটা ছেঁকে ফেলে দিতে হবে। এবার একটা বাটিতে ভেজিটেবল অয়েল বাদে বাকি সব উপকরণ একত্রে নিয়ে মাখাতে হবে। তেল গরম করে ওই মসলায় ঢেলে দিতে হবে। ঠান্ডা হলে শসার সঙ্গে মাখিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

আফগানি পোলাও 
উপকরণ: বাসমতি চাল ১ কেজি, গরুর মাংস ২ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১/২ কেজি, কালো কিশমিশ ২০০ গ্রাম, কাজু বাদাম ২০০ গ্রাম, গাজর ৩-৪টি, লবণ পরিমাণ মতো। ঘি বা তিলের তেল ১ থেকে দেড় কাপ কাপ, জিরা ২ টেবিল চামচ, পানি পরিমাণ মতো। 
প্রস্তুত প্রণালি: তেল বা ঘি গরম করে তাতে গাজর ও কিশমিশ আলাদা আলাদা করে ভেজে নিতে হবে। এবার ওই তেলে পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ হালকা লাল রং হলে মাংস ঢেলে মিডিয়াম লো ফ্লেমে ভাজতে হবে। জিরা দিয়ে দিতে হবে এ সময়। মাংস ভাজতে ভাজতে বাদামি রং ধারণ করলে দেড় লিটার গরম পানি দিয়ে মাংস সেদ্ধ করতে হবে। দেড় ঘণ্টা মাংস স্লো কুক করতে হবে। মাংস গলে নরম হয়ে গেলে ধুয়ে রাখা বাসমতি চাল দিয়ে দিতে হবে। এই চাল প্রায় ৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। এখন এই চালে এমন পরিমাণ পানি দিতে হবে যেন চালের ওপর পানি ১/২ ইঞ্চি পরিমাণে থাকে। এ সময় চুলার আঁচ তেজ থাকবে। যখন পানি শুকিয়ে সমান সমান হয়ে যাবে, তখন ভেজে রাখা গাজর ও কিশমিশ দিয়ে চাল দমে দিতে হবে। পরিষ্কার কাপড় দিয়ে তারপর ঢাকনা রেখে দম দিতে হবে প্রায় ২০ মিনিট। এরপর চুলা বন্ধ করে আরও ২০ মিনিট পোলাও সেট হওয়ার জন্য রেখে দিতে হবে। সালাদ সহযোগে পরিবেশন করতে হবে এই অথেনটিক স্বাদের কাবুলি পোলাও।

মেজবানি গোশত  
উপকরণ: গরুর মাংস কলিজা-হাড়-চর্বিসহ ৫ কেজি, ছোট এলাচ, তেজপাতা, দারচিনি, লবঙ্গ, পেঁয়াজ কুচি, মরিচ গুঁড়া, হলুদ গুড়াঁ, জিরা বাটা, ধনিয়া বাটা, আদা বাটা, রসুন বাটা, মৌরি বাটা, পোস্তদানা বাটা, নারিকেল বাটা, সাদা সরিষা বাটা, চিনাবাদাম বাটা, রাঁধুনি বাটা, সাদা ও কালো গোলমরিচ বাটা, লবণ স্বাদমতো, তেল দেড় কাপ। 
প্রস্তুত প্রণালি: সব মসলা দিয়ে মাংস মেখে রাখতে হবে। মিডিয়াম টু হাই ফ্লেমে চুলার আঁচে মাংস কষাতে হবে ১০ মিনিট। মাংস থেকে পানি উঠলে ঢাকনা দিয়ে দেড় ঘণ্টা মাংস সেদ্ধ করতে হবে লো ফ্লেমে। মাঝে মধ্যে মাংস নেড়ে দিতে হবে। দেড় ঘণ্টা পর মাংসের পানি শুকিয়ে তেল ওপরে ভেসে উঠলে চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। আরও ১০ মিনিট দমে রাখতে হবে। এরপর পোলাও, সাদা ভাত, নান বা রুটি-পরোটা দিয়ে পরিবেশন করতে হবে এ মজাদার মেজবানি গোশত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা
  • লাখো হজযাত্রীর অংশগ্রহণে হজের আনুষ্ঠানিকতা চলছে
  • আসামে শত শত ভারতীয়কে বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে: মুম্বাইভিত্তিক সিজেপির প্রতিবেদন
  • চট্টগ্রামে অনলাইন পশুর হাটে ৪ হাজার খামারি
  • ঈদে শিল্পকলা একাডেমিতে ‘আনন্দ উৎসব’
  • নিখোঁজ যুবকের লাশ মিলল নিজ বাড়ির টিনের চালে 
  • অপেক্ষার অবসান বিরাট-বেঙ্গালুরুর, প্রীতির পাঞ্জাবকে হারিয়ে জিতল আইপিএল শিরোপা
  • ঈদের দুপুরে
  • ঈদে রাঁধুন গরুর মাংসের কোরমা