Prothomalo:
2025-06-06@02:32:28 GMT

ভুঁইডুমুরের আখ্যান 

Published: 4th, June 2025 GMT

ময়মনসিংহ শহরঘেঁষা ব্রহ্মপুত্রের তীরে বুড়াপীরের মাজার। মাজারের পেছন দিক দিয়ে একটি রাস্তা চলে গেছে পশ্চিমে—বালুঘাট ও কাছারিঘাটের দিকে। রাস্তার উত্তর পাশে ছায়াঘেরা গ্রাম। সম্প্রতি সেই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে চোখে পড়ল ভুঁইডুমুর। মাটির ওপর যেন হামাগুড়ি দিয়ে চলেছে। ওপরের দিকে মাথা তুলে আছে কিছু শাখা। ডুমুরের মতো ফল না দেখলে অনেকেই চিনতে পারবেন না যে এটা একধরনের ডুমুরগাছ। মাটির গায়ে লতানো অবস্থায় থাকে বলে এর নাম ভুঁইডুমুর। 

অন্য ডুমুরজাতীয় উদ্ভিদের মতো এর ফুলও হাইপ্যান্থোডিয়াম নামের বিশেষ ধরনের পুষ্পমঞ্জরিতে থাকে। তাই ফুল বাইরে থেকে দেখা যায় না। এটি Moraceae পরিবারের লতানো বীরুৎ। শাখা শায়িত। উদ্ভিদটি দক্ষিণ চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমারসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া যায়। 

বাংলাদেশের নদীতীরবর্তী অঞ্চলে, পুকুরের পাশে, খাল-বিল ও ঝিলের পাশে এ উদ্ভিদটি দেখা যায়। পাতাগুলো হয় ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা, বহুখণ্ডযুক্ত বা গোলাকার থেকে বল্লমাকার বা ডিম্বাকার। পাতা খুব রুক্ষ, শীর্ষভাগ তীক্ষ্ণ, কিনারা দাঁতের মতো খাঁজকাটা। ছোট ছোট পাতাগুলো দৈর্ঘ্যে ৫ থেকে ৭ এবং প্রস্থে ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার হয়।

উদ্ভিদে সাধারণত দুটি ভিন্ন ধরনের পাতা থাকে বলে এর প্রজাতির নাম হেটেরোফাইলা। আর ফলের ভেতরে থাকে ফুল। ফল ডিম্বাকার, ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। ফল এককভাবে পাতার অক্ষে জন্মায়। পুরুষ ফুল বৃন্তযুক্ত। স্ত্রী ফুলগুলো বৃন্তহীন। পাকা ফল গাঢ় কমলা রঙের ও মসৃণ। মে-জুন মাসে ফল পাকে। 

ভুঁইডুমুরগাছ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ বছর ধরে খাইট্টা বেচেন শরীয়তপুরের আজিজ

আবদুল আজিজ ঢালীর বয়স ৭০ বছর। ৫০ বছর ধরে করছেন কাঠ-গাছের ব্যবসা। সেই সঙ্গে কোরবানি ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে মাংস প্রস্তুত করার কাঠের খাইট্টা বিক্রি করেন। তাঁর এ ব্যবসায় সংসারে ফিরেছে সচ্ছলতা।

আজিজের বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর এলাকায়। কোরবানি ঈদের দুই সপ্তাহ আগে থেকে বিভিন্ন হাটে তেঁতুলগাছের তৈরি খাইট্টা বিক্রি করেন। তাঁর খাইট্টা এলাকায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আজিজ পাঁচ সন্তানের বাবা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান নিয়ে সংসার তাঁর। তরুণ বয়সে এলাকায় জ্বালানি কাঠ ও ফার্নিচার তৈরির কাঠের ব্যবসা শুরু করেন। গ্রাম থেকে গাছ কিনে শ্রমিক দিয়ে ফার্নিচারের কাঠ ও জ্বালানি কাঠ প্রস্তুত করে বিক্রি করতেন। সেই সঙ্গে শুরু করেন ঈদের মৌসুমে মাংস প্রস্তুত করার কাজে ব্যবহৃত খাইট্টা। ওই আয়েই সংসার চলেছে। সন্তানদের পড়ালেখা, বিয়ে দেওয়া—সবই করেছেন ওই আয় দিয়ে। আজিজের তিন ছেলে এখন কর্মজীবী। বয়সের কারণে আজিজ এখন আর কাঠের ব্যবসাটি করেন না। তবে ঈদে মাংস প্রস্তুতকাজে ব্যবহৃত খাইট্টা তৈরি ও বিক্রির কাজটি ছাড়েননি।

ঈদের অন্তত তিন মাস আগে গ্রাম থেকে বিভিন্ন আকৃতির তেঁতুলগাছ কেনেন। তা দিয়ে বিভিন্ন আকৃতির খাইট্টা তৈরি করে মজুত করেন। ঈদের দুই সপ্তাহ আগে শরীয়তপুর সদরের মনোহার বাজার হাট, আংগারিয়া হাট, বুড়িরহাট, গোসাইরহাটসহ বিভিন্ন হাটে ওই খাইট্টা নিয়ে যান বিক্রির জন্য। আজিজের তৈরি প্রতিটি খাইট্টা বিক্রি করা হয় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দামে। এ বছর তিনি ৭০০টি খাইট্টা তৈরি করেছেন।

খাইট্টা নিয়ে সদরের মনোহর বাজার গরুর হাটের পাশে বসেছিলেন আবদুল আজিজ। অনেক ক্রেতা তা কিনে নিচ্ছিলেন। তেমনই একজন শরীয়তপুর পৌরসভার পালং এলাকার রুহুল আমীন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ছোটবেলা থেকে বাবার সঙ্গে বিভিন্ন গরুর হাট ঘুরে মনোহর বাজার গরুর হাট থেকে কোরবানির গরু কিনতেন। সেই সঙ্গে আজিজ চাচার তৈরি তেঁতুল কাঠের খাইট্টা কিনে নিয়ে যান।

আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসাটা ছাড়তে মন চায় না। তাই ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই বয়সেও খাইট্টা নিয়ে হাটে যান তিনি। প্রতি মৌসুমে তাঁর অন্তত দুই লাখ টাকা লাভ হয়। এই টাকা খরচ করে তিনি আনন্দ পান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ