বৃষ্টি কমলেও উজানের ঢলে সুনামগঞ্জে বেড়েছে নদীর পানি
Published: 4th, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভারী বৃষ্টি হয়নি। তবে সুরমাসহ জেলার প্রায় সব নদীর পানি বেড়েছে। উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, জেলাজুড়ে ভারী বর্ষণ না হলেও থেমে থেকে ঝরছে বৃষ্টি। একই সঙ্গে উজানের ঢলও অব্যাহত আছে। এতে জেলার নদ-নদী ও হাওর পানিতে টইটুম্বুর। এখন আবার ভারী বৃষ্টি হলেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি কমলেও সুরমা নদীর পানি বাড়ছে০৩ জুন ২০২৫তবে আপাতত স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, সুনামগঞ্জ ও উজানের ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি কম হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৯৮ মিটার। একই স্থানে গতকাল সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা ছিল ৬ দশমিক ৯৭ মিটারে। বর্তমানে সেখানে পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নিচে আছে। বর্ষা মৌসুমে স্থানটিতে পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৮০ মিটার।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল, কম বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তি০২ জুন ২০২৫সুনামগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৮ মিলিমিটার। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয় ৩০ মিলিমিটার। চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৬ মিলিমিটার। উভয় স্থানে বৃষ্টি না হওয়াটাকে স্বস্তির উল্লেখ করে পাউবো কর্মকর্তারা বলেন, এতে সুনামগঞ্জ এবং উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে পাহাড়ি ঢলের চাপ কমবে। জেলার নদী ও হাওরে পানি স্থিতিশীল থাকবে। বন্যা হওয়ার আশঙ্কাও কেটে যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টি না হলেও সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, জগন্নাথপুর উপজেলা নিম্নাঞ্চলে পানি বেড়েছে। জেলার দোয়ারাবাজার ও তাহিরপুর উপজেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড় দল ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে নদীর পানি বাড়ছে০১ জুন ২০২৫সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা গ্রামের বাসিন্দা সবুজ আলম বলেন, টানা বৃষ্টিতে এলাকার সবজি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। একই কারণে এলাকায় এবার পশুর হাটগুলোও খুব একটা জমেনি।
পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, আবার বৃষ্টি হলে পানি বাড়তে পারে। তবে বড় কোনো বন্যা আপাতত হবে না।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীর পানিও বাড়ছে৩১ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ নদ র প ন র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত
ছোটবেলার কুরবানির ঈদ খুব আনন্দের ছিলো। আমার বেড় ওঠা ঢাকায়। ইকবাল রোডে আমার বাবার বাড়ি। সাড়ে বারো কাঠা জায়গা নিয়ে ছিল আমাদের বাড়িটা। ঘরের সামনে বিরাট উঠান ছিলো। কুরবানির জন্য কেনা গরু ওই উঠানে রাখা হতো। শুধু আমাদের গরু না, মামা, খালাদের কেনা গরুও ওই একই উঠানে রাখা হতো।
ঈদের আগের দিন বাবা, মামারা সবাই একসঙ্গে গরু কিনতে যেতেন। মামারা গরু কিনতে যাওয়ার আগে আমাদের বাড়িতে আসতেন। মা অনেক রকম খাবার রান্না করতেন। যেমন— খিচুরি, মুরগির মাংস, ডিম ভাজি। সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে গাবতলী হাটে গরু কিনতে যেতেন। বড়দের সঙ্গে আমিও যেতাম। বিকালের আগে গরু কিনে বাসায় ফিরে আসতাম। রাতে আবার সবাই একসঙ্গে খেতো। এবং পরের দিনের গরু কুরবানির প্ল্যানিং হতো। অবশ্য বিকালের পরে নারীরা অর্থাৎ নানী, খালারা সবাই আসতেন গরু দেখতে। বাড়িটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতো। সবমিলিয়ে আমাদের বাড়িতে ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত।
সেই সময় সবাই একসঙ্গে ঈদ করা হতো। বাড়ির উঠানেই গরু কুরবানি করা হতো। মাংস ভাগ করে বিলানো হতো। এরপর মামা, খালারা তাদের ভাগের মাংস নিয়ে বিকালে নিজেদের বাড়িতে চলে যেতেন। এই যে ঈদের আগের দিন গরু কেনা থেকে কুরবানি এই সময়টুকুতে আত্মীয় স্বজনেরা সবাই মিলে একটি পরিবার হয়ে উঠতো।
আরো পড়ুন:
চলতি মাসে মুক্তি পাবে আলোচিত পাঁচ সিনেমা
বিয়ে করলেন হিনা খান, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইটাও চলছে
সবার আলাদা বাসা এবং আলাদা ফ্ল্যাট বাড়ি হওয়ার পর থেকে আর এই সুযোগটুকু রইলো না। সময়ের পরিবর্তনে মানুষজন অনেকে হারিয়ে গেলো, অনেকে বিদেশে চলে গেলো। এভাবে করে ভাঙতে ভাঙতে এখন যার যার ঈদ তার তার।
এখন হয়তো আগের চেয়ে অনেক বড় গরু কুরবানি দেওয়া হয় কিন্তু আগের ঈদের আনন্দটা এখন আর খুঁজে পাই না।
অনুলিখন: স্বরলিপি
ঢাকা/লিপি