২৪ ঘণ্টা পার হলেও টেকনাফে অপহরণের শিকার ৫ জনের সন্ধান মেলেনি
Published: 4th, June 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং-শামলাপুর পাহাড়ি সংযোগ সড়কে ৪ রোহিঙ্গা নাগরিকসহ ৫ জনকে অপহরণের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও তাঁদের সন্ধান মেলেনি। তবে ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের বহন করা অটোরিকশা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের শিকার ৪ জন অটোরিকশার যাত্রী। তাঁরা সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা অটোরিকশাচালককেও অপহরণ করা হয়। ৪ রোহিঙ্গা নাগরিকের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। তবে স্থানীয় অটোরিকশাচালকের পরিচয় জানা গেছে। তিনি হলেন টেকনাফের হোয়াইক্যং ৪ নম্বর ওয়ার্ড দৈংগ্যাকাটার নুর আহমেদের ছেলে মো.
হোয়াইক্যং দৈংগ্যাকাটার গ্রামের বাসিন্দা আবু নোমান বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে হোয়াইক্যং বাজার থেকে বাহারছড়া যাওয়ার পথে হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কের মাঝপথে একদল ডাকাত সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে আটকে গাড়িচালকসহ ৫ জনকে আটক করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে একজন ওই সিএনজির অটোরিকশাচালক মো. শামসু আলম। সেখানে থাকা বাকি চারজন রোহিঙ্গা হলেও তাঁদের নাম–ঠিকানা বা পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার সাহা বলেন, ঘটনার পর পুলিশ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা উদ্ধার করেছে। ডাকাতদলের হাতে একজন সিএনজি অটোরিকশাচালক ও ৪ জন রোহিঙ্গা অপহরণ হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। রোহিঙ্গাদের পরিচয় জানা যায়নি। অপহৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে গত ২২ মে একটি ডাম্প ট্রাকের চালক, একজন মোটরসাইকেল আরোহীসহ ৫ জন অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। পরে তাঁরা কৌশলে বাড়ি ফিরে আসতে পেরেছেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এ নিয়ে গত সাড়ে ১৭ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বেগম রোকেয়াকে নিয়ে রাবি শিক্ষকের মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার লঙ্ঘন: আসক
বাঙালি মুসলমান নারীজাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষকের ফেসবুক পোস্টের নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের এমন মন্তব্য একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন।
আজ বৃহস্পতিবার আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সমাজসংস্কারক মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ আখ্যায়িত করে পোস্ট দিয়েছেন। এ ঘটনায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলা ও বাঙালি নারীজাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া, যাঁর অবদান আমাদের শিক্ষা, সমাজচিন্তা ও মনন গঠনের ভিত্তি; তাঁকে নিয়ে এমন বিদ্বেষপূর্ণ ও উসকানিমূলক মন্তব্য কেবল নিন্দনীয়ই নয়, এটি নারীর মর্যাদার ওপর সরাসরি আক্রমণ। আমাদের মনে রাখতে হবে, বেগম রোকেয়ার শিক্ষা ও সামাজিক আন্দোলন ধর্ম, বর্ণ, জাতিনির্বিশেষে বাঙালি নারীদের পরাধীনতা ও কুসংস্কারের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, যিনি নিজেদের পেশার নৈতিকতা, শালীনতা ও প্রগতিশীল চেতনার প্রতীক হওয়ার কথা, তাঁর কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বজ্ঞানহীন, ঘৃণা প্রচারমূলক ও নারীবিদ্বেষী বক্তব্য পেশাগত নীতিবোধের চরম লঙ্ঘন।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মনে করে, এ ধরনের মন্তব্য ব্যক্তিগত দায়িত্বহীনতার সীমা ছাড়িয়ে সমাজে বিভাজন, নারীবিদ্বেষী ও ঘৃণামূলক বক্তব্যকে উসকে দেয়, যা মানবাধিকার মানদণ্ড, রাষ্ট্রীয় আইন এবং একাডেমিক নৈতিকতার সরাসরি লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দৃঢ়ভাবে বলতে চায়, বেগম রোকেয়া শুধুই একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নন, তিনি বাঙালি নারীর মুক্তি আন্দোলনের ভিত্তি। তাঁকে অবমাননা করা মানে আমাদের সামষ্টিক অগ্রযাত্রাকে আঘাত করা।
আরও পড়ুনবেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ বললেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক০৯ ডিসেম্বর ২০২৫