দিনের হিসেবে ১ হাজার ৬৫৯, মাসের হিসেবে ৫৫। বছরের হিসেবে সাড়ে চার। দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান। কতদিন পর ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ফুটবল উন্মাদনা। দর্শকদের লম্বা লাইন, নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ব্যস্ততা; সবকিছু মিলিয়ে বুধবার বাংলাদেশ-ভুটান ফুটবল ম্যাচ ঘিরে আবেগ আর উচ্ছ্বাস দেখা মিলেছে ফুটবলের হোমগ্রাউন্ড খ্যাত জাতীয় স্টেডিয়ামে।
২০২০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচই ছিল জাতীয় স্টেডিয়ামে সর্বশেষ কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সংস্কার কাজের জন্য এরপর কেটে যায় চার বছরের বেশি। ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে ফুটবল যেন ফিরেছে তার আপন ভূমিতে। নবরূপে সজ্জিত এই ভেন্যুতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
প্রেসবক্স থেকে শুরু করে সবকিছুতেই নতুনত্বেও ছোঁয়া। হামজা চৌধুরী, ফাহমিদুল ইসলামদের মতো প্রবাসীদের নিয়ে গড়া বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে সমর্থন দিতে গ্যালারি ছিল পরিপূর্ণ। দর্শকদের জন্য গেইট খুলে দেয়া হয় বিকেল ৫টায়। কিন্তু দুপুর থেকেই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করার লাইনে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
‘হামজা, হামজা’ স্লোগানে বাইরে যেমন প্রকম্পিত করেছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা, স্টেডিয়ামের ভেতরের দৃশ্যও ছিল একই। ভুটান ম্যাচে দেখা গেছে সিঙ্গাপুর ম্যাচের উত্তাপ। এক দল সমর্থক লাল সবুজের জার্সি গাঁয়ে জড়িয়ে স্টেডিয়ামের বাইরে ভুভুজেলার সুর তোলেন। হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল ‘সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট চাই’।
অর্থাৎ প্রতিপক্ষ ভুটান হলেও বাংলাদেশ দলের মতো সমর্থকদেরও ভাবনায় সিঙ্গাপুর ম্যাচ। ফুটবলের জোয়ারে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্তারাও নতুন কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করছেন। সেই জন্য অনলাইনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম চালু করে। তাদের বড় ভুলটা ছিল ভুটান ম্যাচের আগে সিঙ্গাপুর ম্যাচের টিকিট বিক্রি।
এ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ আর অসন্তোস দেখা যায়। তারপরও ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে হামজাতে দেখতে পারবেন বলে উচ্ছ্বাস নারায়নগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইয়াসিনের। সমকালের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘হামজার মতো বিশ্বমানের ফুটবলার প্রথমবার ঘরের মাঠে খেলবেন,তাকে সরাসরি না দেখলে কী হয়? আমরা কয়েকজন মিলে এসেছি খেলা দেখতে। ফুটবলের যে জোয়ার উঠেছে তার সামিল হতে জাতীয় স্টেডিয়ামে এসেছি।’
ফুটবল উন্মাদনার বড় অংশজুড়েই আছেন হামজা। মাঠে প্রবেশের সময় গাড়ি থেকে যখন শেফিল্ড ইউনাইটেডের এ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মাঠে নামছিলেন, তাকে ক্যামেরায় বন্দি করার জন্য দর্শকদের সে কি উচ্ছ্বাস। সবুজ গালিচায় হামজা পা রাখতেই পুরো স্টেডিয়ামে ‘হামজা, হামজা’ স্লোগান ওঠে। অনেকদিন পর বাংলাদেশের ফুটবলের এমন চিত্র দেখে সত্তর-আশির দশকের সেই দিনগুলোর কথা মনে উঁকি দেওয়ার কথা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ৬ আগস্ট
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশ আগামী ৬ আগস্ট।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এ তারিখ ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এই মামলায় ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ আসামি পলাতক।
আরও পড়ুনআবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন২৯ জুলাই ২০২৫আজ শুনানির সময় গ্রেপ্তার ছয়জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এর আগে এই মামলায় পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবী ও গ্রেপ্তার আসামিদের পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দুই দিন শুনানি করেন। আর প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলায় অভিযোগ গঠনের আরজি জানান।
গত ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।