ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক শাহজাহান মিয়া জানিয়েছেন, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনে সেবাগ্রহীতাদের সমস্যা হচ্ছে। যেভাবেই হোক নাগরিক সেবাদান সচল রাখতে তারা চেষ্টা করছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেন দক্ষিণ সিটির প্রশাসক শাহজাহান মিয়া।

তবে তিনি নগর ভবন খুলে দেওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি উত্তর দিতে চাই না। এটি রাজনৈতিক বিষয়, সেনসেটিভ বিষয়, আইনগত বিষয়।’

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত ১৪ মে থেকে আন্দোলন করছেন তার কর্মী-সমর্থকরা। একইসঙ্গে তারা নগর ভবনের মূল ফটকসহ বেশ কয়েকটি ভবনে তালা ঝুলিয়ে বন্ধ করে রেখেছেন গত ১৫ মে থেকে৷ যার ফলে সব ধরনের নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নাগরিকরা। 

নগর ভবনে তালা থাকায় কোরবানির বর্জ্য অপসারণ প্রস্তুতিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। তবে সেই ত্রুটি আমরা অন্যভাবে ম্যানেজ করে নিয়েছি। সিটি করপোরেশনের সবাই এখন প্রস্তুত। তারা প্রতিবছরই বর্জ্য অপসারণে সার্ভিস দেয়। জনগণের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে এবারও সবাই কাজে যোগ দেবেন। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।’

নগর ভবনের তিনটি ডিপার্টমেন্ট অফিস করতে পারছে জানিয়ে প্রশাসক আরও বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ভাণ্ডার এবং পরিবহণ- এ তিনটি বিভাগ ঈদ আয়োজনের সঙ্গে জড়িত। এ বিভাগগুলো কাজ করতে পারছে। কাজেই এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব। আমি সচিবালয়ে অফিস করছি। আমার কর্মকর্তারা আমার কাছে আসেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নেন। আমাদের সমস্যা হচ্ছে না।’

দক্ষিণ সিটির সেবাগ্রহীতাদের জন্মনিবন্ধনে সমস্যা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ড অফিসগুলো খোলা আছে। তারা সেখান থেকে সেবা নিতে পারছেন। তবে কিছুটা সমস্যা তো হচ্ছেই। আমরা ম্যানেজ করার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের লক্ষ্যে ডিএসসিসির প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এসস স নগর ভবন শ হজ হ ন ম য় নগর ভবন ড এসস স বর জ য সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের কাছে আবারো ইলিশের জন্য অনুরোধ করেছে ভারত

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের রূপালি ইলিশ চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে চিঠি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য ব্যবসায়ী সংগঠন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সেই চিঠি দেওয়া হয়েছে কলকাতার ফিস ইমপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে।

আর মাত্র ২ মাসের কম সময় বাকি দুর্গোৎসবের। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে, এরপর ভারতজুড়ে কালীপূজা, দীপাবলি ইত্যাদি। এই উপলক্ষে গত কয়েক বছর ধরে পূজা মৌসুমে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করে থাকে বাংলাদেশ সরকার। যদিও তা করা হয় ভারতের অনুরোধে। আর এবারও সেই অনুরোধের ব্যতিক্রম হলো না। 

গত বছর পূজা মৌসুমে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের কারণে ইলিশ এসেছিল ভারতে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে, “অত্যন্ত বিনীত ও শ্রদ্ধার সঙ্গে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, গত বছর আপনার হস্তক্ষেপের ফলে, ভারত ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল। পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরার মৎস প্রেমীদের জন্য একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয়।” 

আরো পড়ুন:

সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ

শেষ ম্যাচের আগে ভারতের শিবিরে ধাক্কা, বিশ্রামে বুমরাহ

এরপরই লেখা হয়েছে, “দুর্গাপূজা-২০২৫ এর কাউন্টডাউন শুরু হওয়ায়, আমরা আপনাকে আসন্ন দুর্গাপূজার জন্য ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। উল্লেখ্য এ বছর দুর্গাপূজা ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পড়েছে।” 

তবে প্রতিবছর অনুমোদিত ইলিশের সম্পূর্ণ কোটা রপ্তানি না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “গত বছর আপনার অফিস কর্তৃক প্রদত্ত ২ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশ মাছের মধ্যে মাত্র ৫৭৭ মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানি করা সম্ভব হয়েছিল। তার আগের বছর (২০২৩) ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টনের মধ্যে মাত্র ৫৮৭ মেট্রিক টন, ২০২২ সালে ২ হাজার ৯০০ মেট্রিক টনের মধ্যে ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন এবং ২০২১ সালে ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টনের মধ্যে ১২শ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করেছি।” 

এই সমস্যার কারণ হিসেবে রপ্তানির জন্য বেঁধে দেওয়া সময়সীমাকে দায়ী করা হয়েছে। ফিশ ইম্পোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, “প্রায় প্রতি বছরই আমরা অনুমোদিত ইলিশ মাছের সম্পূর্ণ পরিমাণ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হই। কারণ রপ্তানি পারমিটগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। যেমন ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিমাণ রপ্তানি করতে হয়। এত বিশাল পরিমাণ রপ্তানির জন্য এই সময়সীমা আসলে যথেষ্ট নয়। তাই আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ, যে দয়া করে কোনো সময়সীমা ছাড়াই ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হোক।” 

চিঠিতে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন।

বর্তমান সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে আরো শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে ব্যবসায়ীদের এ সংগঠন।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ