রাজধানীর দক্ষিণখানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২১ হাজারের বেশি অবৈধ সিমকার্ড ও বিপুল পরিমাণ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল) সরঞ্জাম জব্দ করেছে র‍্যাব-১। এ সময় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি) ও জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (এনটিএমসি) কারিগরি সহায়তায় দক্ষিণখান থানা এলাকার মোল্লারটেকের শহীদ লতিফ রোডের একটি বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় নজরুল ইসলামকে (৩৮)। তিনি ওই বাড়িতে থেকে ছয় মাস ধরে অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন।

র‍্যাব জানায়, নজরুল সফটওয়্যারনির্ভর সিস্টেম ব্যবহার করে দেশে অবৈধ সার্ভার বসিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক মিনিটের আন্তর্জাতিক কল বাংলাদেশে ‘রাউট’ করতেন। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

অভিযানের সময় নজরুলের বাড়ি থেকে ৯টি ১২৮ পোর্টের সিমবক্স, ৫টি ২৫৬ পোর্টের সিমবক্স, ৯টি ৫১২ পোর্টের সিমবক্স, ১টি ল্যাপটপ, ১টি নোটপ্যাড, ২টি মুঠোফোন, ২টি ৮ পোর্টের টিপি লিংক সুইচ, ৩টি রাউটার এবং সর্বমোট ২১ হাজার ৩৯০টি মোবাইল সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব-১–এর ভাষ্য অনুযায়ী, এ ধরনের অবৈধ ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিতে দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে বিদেশি কল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আনার মাধ্যমে সরকারকে বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছেন।

র‍্যাব আরও জানায়, ভিওআইপি চক্রের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে তারা ইতিমধ্যে প্রায় ৬০০টি অভিযান চালিয়েছে এবং এক হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। সরকারের নির্দেশনায় বিটিআরসি ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ