আলোচিত কর ও ব্যয়-সংক্রান্ত বাজেট বিল নিয়ে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল। এবার প্রকাশ্যে পাল্টাপাল্টি আক্রমণাত্মক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সে সম্পর্কে ফাটল ধরল।

গতকাল বৃহস্পতিবার মাস্কের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেছেন, টেসলার সিইওর ওপর তিনি ‘ভীষণ হতাশ’। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর চুপ করে বসে থাকেননি মাস্ক। সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ কথার জবাব দেন তিনি। এদিকে ট্রাম্প ও মাস্কের এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের পর টেসলার শেয়ারদর ব্যাপক হারে কমে গেছে।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলকে ‘জঘন্য’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক। তাঁর ওই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে গতকাল ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখুন, ইলনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। জানি না, সেটা আর থাকবে কিনা।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্য যখন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল ঠিক তখনই ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) লাইভ টুইট করে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, তাঁর সহায়তা ছাড়া ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প জিততে পারতেন না। ট্রাম্পকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলেও কড়া সমালোচনা করেন মাস্ক।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্র সফররত জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠক চলাকালে নজিরবিহীনভাবে তিনি মাস্কের প্রতি ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটান। এমন ঘটনা এবারই প্রথম ঘটল।

মাস্ককে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বললেন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভীষণ হতাশ। কারণ, এখানে উপস্থিত অন্য যে কারও চেয়ে তিনি এই বিলের ভেতরের খুঁটিনাটি সম্পর্কে ভালো জানতেন। হঠাৎ করেই এটি নিয়ে তাঁর সমস্যা শুরু হয়েছে।’ তবে ট্রাম্পের এই দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মাস্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ইলন মাস্ক। তাঁর বিদায় উপলক্ষে ওভাল অফিসে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মাথায় কর ও ব্যয়-সংক্রান্ত বাজেট বিলকে কেন্দ্র করে তাঁদের দুজনের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিল।

আরও পড়ুনএবার ট্রাম্পের প্রকাশ্য সমালোচনায় মাস্ক, কর বিলকে বললেন ‘জঘন্য’০৪ জুন ২০২৫

ট্রাম্প প্রশাসনের কর ও ব্যয়-সংক্রান্ত বাজেট বিলটি গত ২২ মে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়। মাস্ক বলেছেন, ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত এ বিলটি বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে দিয়েছে এবং সরকারি খরচ কমানোর চেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্বল করেছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের সঙ্গে কোন বিরোধের কারণে প্রশাসন থেকে সরে গেলেন ইলন মাস্ক৩০ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এ–সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে দাঁড়াল। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ব্রাজিল সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দমন–পীড়ন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি, সেন্সরশিপ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো ও তাঁর হাজার হাজার সমর্থকের বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। এগুলো ব্রাজিলে আইনের শাসনকে দুর্বল করে দিয়েছে।

ঘোষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্রাজিলের অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী নীতি ও পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো, মার্কিন নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও অর্থনীতির ক্ষতি করছে। ঘোষণায় বলসোনারোর বিচারে যুক্ত ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে মোরায়েসের নামও আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শতাব্দীপ্রাচীন বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ব্রাসিলিয়ার সঙ্গে ওয়াশিংটনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ২৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক কবে থেকে কার্যকর হবে, তা হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় জানানো হয়নি। এর আগে ১ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকরের কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

সম্পর্কিত নিবন্ধ