অনেক বড় মুখ করে তাকে আনা হয়েছে ব্রাজিলে কোচ করে। অথচ প্রথম ম্যাচেই ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোল শুন্য ড্র করেছে আনচেলত্তির ব্রাজিল। স্বপ্নের মতো যাত্রা শুরুর যে আশা করেছিল সমর্থকরা তাতে নিশ্চিত ভাবে ধাক্কা খেয়েছে। 

অবশ্য এতে হতাশ নন ব্রাজিলের ইতালিয়ান কোচ। ‘আমাদের অনেক বিশ্বমানের ফুটবলার রয়েছে। তবে প্রস্তুতির জন্য বেশি সময় পায়নি। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি পরের ম্যাচে আমাদের কাছ থেকে আক্রমনাত্মক ফুটবল দেখতে পাবে সমর্থকরা। ইকুয়েডরের বিপক্ষে আমরা রাফিনিয়াকে মিস করেছি। ঘরের মাঠে পরের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে অন্যরকম খেলা হবে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে আমাদের আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। যেটা আমরা পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে আশা করছি।’ 

ইকুয়েডরের কাছে পয়েন্ট খোয়ানোর পর আনচলত্তি এখন তাকিয়ে ১১ জুন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটির দিকে। এই মুহুর্তে লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১৫ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে রয়েছে ব্রাজিল। হাতে থাকা তিনটি ম্যাচের পর তালিকার ছয় নম্বরে থাকতে পারলেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত। সেই সম্ভবনাও প্রবল।

তবে ব্রাজিলের যে খেলার মান তা নিয়েই সমর্থকরা চিন্তিত। বিশেষ করে এদিন ইকুয়েডরের বিপক্ষে গোলমুখে মাত্র তিনটি শট নিতে পেরেছিল ব্রাজিল। বল দখলও ইকুয়েডের চেয়ে কম ৪৮ শতাংশ। রির্চালিসন কিম্বা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের কম্বিনেশনেও ছন্দ দেখা যায়নি। সব মিলিয়ে ম্যাচের পর ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকদের কাছে অনেক কিছুরও ব্যাখা দিতে হয় আনচলত্তিকে। ‘আক্রমনে আমাদের ধার দেখা যায়নি, তাছাড়া ইকুয়েডরের ডিফেন্সও ছিল শক্তিশালি। বল চ্যালেঞ্জিং কিম্বা লাইনের ধারে জায়গা করতে দেয়নি তারা। তবে আমি কোন অজুহাত দাড় করাতে চাই না, শুধু এটুকু বলতে চাই এন্ড কন্ডিশনে খেলাটা সহজ ছিল না।’

সারা জীবন ইউরোপে কোচিং করিয়েছেন, প্রায় ১৮০০ ক্লাব ম্যাচে তিনি কোচ ছিলেন। কিন্তু এবারই প্রথম আর্ন্তজাতিক ম্যাচে ডাগআউটে দাড়ালেন। ইউরোপ আর লাতিনের কন্ডিশনে কতটা পার্থক্য দেখলেন তিনি? জানতে চেয়েছিলেন এক স্থানীয় সাংবাদিক। ‘এখানকার সার্বিক পরিবেশ অসাধারন। দর্শকরা তাদের দলকে আবেগ দিয়ে সমর্থন করে। সব কিছুই উচু পর্যায়ে। আশা করছি পরের ম্যাচে ঘরের মাঠে আমরা এই সমর্থনটাই পাবো।’ 

তাহলে কি ঘরের মাঠ ইকুয়েডর বাড়তি সুবিধা পেয়েছে গ্যালারির? ‘আমি জানি না। তবে মাত্র অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের লম্বা সফর করে এখানে আসতে হয়েছে। যদিও শারীরিক ভাবে সবাইকে ফিট মনে হয়েছে। তবে মাঠে আমাদের আক্রমন ধারালো ছিল না।’ 

আকারে ইঙ্গিতে তিনি ফুটবলারদের ভ্রমন ক্লান্তি এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতির ঘাটতির কথাই বলছেন। তাছাড়া এদিন মনের মতো মাঠও সাজাতে পারেননি আনচেলত্তি। বিশেষ করে কার্ড সমস্যা থাকায় এদিন রাফিনিয়াকে নামাতে পারেননি। ‘জাতীয় দলের প্রথম ম্যাচ হিসাবে আমার কাছে এটা ছিল বিশেষ কিছু। ব্রাজিল ফুটবল সংস্থার কাছ থেকে যে অভ্যর্থনা পেয়েছে তাতে সম্মানিত বোধ করেছি। তবে ম্যাচের ফল আমাদের প্রত্যাশা মতো হয়নি।’ ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও স্বীকার করছেন সে কথা। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন তাদের নতুন কোচ প্রথম ম্যাচেই সব কৌশল দেখাননি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর র ম য চ ঘর র ম ঠ আম দ র প রথম ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ফিরোজায় ঈদ উদযাপন করবেন বেগম খালেদা জিয়া, দেশবাসীকে জানালেন শুভেচ্ছা

গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ঈদ উদযাপন করবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের একথা জানান।

তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা। বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের যে বাসা ফিরোজায় অবস্থান করছেন সেখানেই উনি আগামীকাল ঈদ উদযাপন করবেন।

জাহিদ হোসেন বলেন, উনার পরিবারের পক্ষ থেকে যে কোরবানি সেটা এখানেই (ফিরোজায়) দেওয়া হবে। উনার জ্যেষ্ঠ ছেলে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের কোরবানিও এখানে (ফিরোজায়) হবে।

ঢাকা ছাড়াও বগুড়ার গাবতলীতে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে কোরবানি দেওয়া হবে জানিয়ে জাহিদ বলেন, এছাড়াও কয়েকটি জেলায় দলের নেতা-কর্মীরা ম্যাডামের নামে কোরবানি দেবেন।

নিকট স্বজনদের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাবেন জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ঈদের দিন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত গুলশানের ‘ফিরোজা’য় খালেদা জিয়া তার নিকট স্বজনদের সাথে একান্তে সময় কাটাবেন। এই সময়টা রাখা হয়েছে শুধু পরিবারের সদস্যদের জন্য।

তিনি বলেন, ‘উনার (খালেদা জিয়া) মেজো বোন সেলিনা রহমান, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ তাদের পরিবার এবং ম্যাডামের ঘনিষ্ঠ নিকট আত্মীয় স্বজন যারা ঢাকায় ঈদ করছেন তারা মূলত ফিরোজায় এসে ম্যাডামের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন এবং ম্যাডাম তাদেরকে একান্ত সময় দেবেন। দুপুরে খাবার স্বজনদের নিয়েই খাবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের কর্মসূচি

রাতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যগণের সাথে গুলশানের ফিরোজায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। দুপুরে তার ছোট ভাই-ভাবি, উনার বোনসহ তাদের স্বজনরা বাসায় আসবেন। লন্ডন থেকে সকালেই মাকে ঈদ মোবারক জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ বলেন, এখানে মনে রাখতে হবে, আজ ৬ জুন শুক্রবার লন্ডনে ঈদুল আজহা উদ্‌যাপন হচ্ছে। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ সেখানে ঈদুল আযহা উদ্‌যাপন করছেন। ইতিমধ্যে তারেক সাহেব দলের নেতা-কর্মীদের সাথে ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে উনার সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ আছে। সে অনুযায়ী ছেলের সঙ্গে মায়ের শুভেচ্ছা বিনিময় বা উনাদের মধ্যে যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার সেটা উনাদের মতো করে করেছেন।

শুক্রবার সকালে লন্ডন থেকে তারেক রহমান টেলিফোনে মাকে ঈদ মোবারক জানিয়েছেন এবং পুত্রবধূ ও নাতনিদের সাথেও কথা বলেছেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান, তার সহধর্মিনী জুবাইদা রহমান, মেয়ে ব্যারিস্টার জায়মা রহমান, প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিনী সৈয়দা শামিলা রহমান, মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান সকলে লন্ডনে একসাথে ঈদ উদ্‌যাপন করছেন বলে জানান জাহিদ।

বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে রওনা হয়ে রাতে জুবাইদা রহমান লন্ডন পৌঁছান। এর দেড় সপ্তাহ আগে কোকোর স্ত্রী লন্ডনে ফিরে যান। দুই পুত্রবধূকে নিয়ে গত ৬ মে খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে ঢাকায় ফেরেন।

দেশবাসীসহ নেতা-কর্মীদের ঈদ মোবারক

জাহিদ বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) দেশবাসীসহ সারাদেশ ও প্রবাসে দলের নেতা-কর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। উনি সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। দেশের মানুষের জন্য, মুসলিম উম্মার জন্য উনি দোয়া করেন, উনি নিজেও সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং অন্যদেরও উনার জন্য দোয়া করতে বলেছেন।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো

বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, ম্যাডাম এই মুহূর্তে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ অশেষ মেহেরবানিতে ভালো আছেন, গত ৬ মে লন্ডন থেকে উন্নত চিকিৎসা শেষ করে তিনি বাংলাদেশে ফেরেন, লন্ডন থেকে আসার সময় যেমন দেখেছেন- আলহামদুলিল্লাহ উনার শারীরিক অবস্থা একরকম স্থিতিশীল আছে।

জাহিদ বলেন, উনার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সদস্যরা নিয়মিতভাবে উনার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর রাখছেন, মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে ফিজিক্যালি প্রতিদিনই সেগুলো এক্সজামিন করা হয়ে থাকে।

জাহিদ বলেন, ম্যাডাম স্বাভাবিকভাবে দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেন। সাধারণ মানুষ যাদের মাঝে ঈদ মানে উৎসব, ঈদ মানে আনন্দ এটা যাতে ঠিকমতো সবাই করতে পারে সে ব্যাপারে উনি খুবই কনসার্ন। উনি সেজন্য সবসময় বলেও থাকেন যে, সাধারণ মানুষ যদি ঈদে আনন্দে থাকে, তাদের জীবনটা যদি নির্বাহ করা একটু সহজ হয় তাহলেই ঈদ তার সার্থকতা পাবে।

জাহিদ বলেন, উনি ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করেছেন লন্ডনে তারেক রহমানের বাসায়। দুই পুত্রবধূসহ নাতনিদের নিয়ে তার একান্ত ঈদ উদ্‌যাপন হয় দেড় দশকের বেশি সময় পর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ