বায়তুল মোকাররমে ২য় জামাতে মুসলিম উম্মার শান্তি কামনা
Published: 7th, June 2025 GMT
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল আজহার দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৮টায় সেখানে দ্বিতীয় জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এতে শত শত মানুষ অংশ নেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মোনাজাতে মুসলিম উম্মার জন্য শান্তি কামনা করে জামাত শেষ হয়।
দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড.
ঈদের নামাজ আদায়ের পর পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন মুসল্লিরা।
আরো পড়ুন:
পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
ঈদের দিনে দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই
এর আগে সকাল ৭টায় প্রথম জামাতে ইমামতি করেন তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান মাদানী। মুকাব্বির ছিলেন মসজিদের অবসরপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।
এদিন বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এই মসজিদে মোট ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদের জামায়াত শেষে খুতবা পাঠ করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত। মোনাজাতে দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন মুসল্লিরা। এছাড়া, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া করা হয়। পাশাপাশি সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহসহ সব মানুষের গুনাহ মাফ চেয়ে দোয়া কামনা করা হয়। যেকোনো বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়েছে।
মুসল্লির ঢল
সকাল ৭টার প্রথম জামাতে অংশ নিতে মুসল্লিদের ঢল নামে। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় নানান বয়সের ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে দল বেঁধে মসজিদে আসেন। ঈদের নামাজের পর একে অপরকে কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময়ে করেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানানো হয়েছে, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তৃতীয় জামাত ৯টায় ও চতুর্থ জামাত ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বেলা পৌনে ১১টায়।
সকাল ৬টা থেকেই মুসল্লিরা মসজিদে আসতে শুরু করেন। প্রথম জামাত শুরুর আগে বায়তুল মোকাররম মসজিদের মূল প্রাঙ্গণ ও বারান্দা পূর্ণ হয়ে যায়। ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করার আগে মুসল্লিদের অনেককেই নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত এবং তসবিহ পাঠ করতে দেখা গেছে।
ঈদ উপলক্ষে মসজিদ ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মসজিদে প্রবেশের প্রধান ফটকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
মিরপুর থেকে বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করতে আসা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘প্রতি বছর আমি বায়তুল মোকাররমে ঈদের নামাজ আদায় করতে চেষ্টা করি। এত মানুষের সঙ্গে একসঙ্গে নামাজ পড়া এক অন্যরকম অনুভূতি। অনেক বড় একটা আয়োজন। এত লোক একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পেরে ভালো লাগে।’’
তৃতীয় জামাত শুরু হয় সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. বিল্লাল হোসেন।
চতুর্থ জামাত শুরু সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আব্দুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আমির হোসেন।
পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত শুরু সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমামের দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দ্বীনি দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জহিরুল ইসলাম।
পাঁচটি জামাতে কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম এবং বিকল্প মুকাব্বির হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন খাদেম মো. রুহুল আমীন।
জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়। ৩ জুন সৌদি আরবে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় শুক্রবার (৬ জুন) ওই দেশে কোরবানির ঈদ উদযাপন হয়। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (৫ জুন) হজ পালন করা হয়। সাধারণত সৌদি আরবের একদিন পর বাংলাদেশে ঈদ উদযাপন হয়।
ঢাকা/এনটি/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ত দ য় কর
এছাড়াও পড়ুন:
জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ
কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।
স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।
জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।